বিজেপির নবান্ন অভিযানের রেশ মেলানোর আগেই একেবারে কড়াই-উনুন নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলনে নেমে পড়ল তৃণমূল মহিলা কংগ্রেস। নেতৃত্বে অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজা, সাংসদ মালা রায়। মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে স্লোগান উঠল ‘এজেন্সি নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি চাই’। এরই সঙ্গ কিন্তু কেন কড়াই-উনুন? চন্দ্রিমা-মালাদের দাবি, এজেন্সিগুলির যে নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি তা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। উল্টে মুখে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রাখতে পারেনি মোদি সরকার। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিকই রাজ্য সরকারের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। সে কারণেই তাঁদেরই এই কড়াই-উনুন নিয়ে লুচি ভেজে অভিনব প্রতিবাদ। মমতার উন্নয়ন খতিয়ান দিয়েই চন্দ্রিমাদের তির্যক স্লোগান, “দেখবি আর জ্বলবি আর লুচির মতো ফুলবি।”
বুধবার রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে এই অভিনব প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয় মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। তৃণমূলের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বরা ছাড়াও এদিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের বহু মহিলা কর্মী-সমর্থক। সকলে মিলে হাত হাত মিলিয়ে এদিন লুচি ভাজেন। সঙ্গে পোস্টার নিয়ে চলে স্লোগানিং। সূত্রের খবর যে জায়গায় এই প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয় সেখান থেকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের দূরত্ব সাড়ে চার কিলোমিটারের একটু বেশি। এদিকে পরিবেশ আদালতের নির্দেশিকা বলছে, ভিক্টোরিয়া থেকে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে বড় মাত্রায় আগুন জ্বেলে কিছু করা যাবে না। কিন্তু তারপরেও এদিনের এই অনুষ্ঠান হওয়ায় উঠছে প্রশ্ন।
এদিনের কর্মসূচি থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা আক্রমণ শানিয়ে চন্দ্রিমা বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের একটা দায়বদ্ধতা আছে। তাঁদেরও চাকরি দেবার একটা দায়িত্ব আছে। কিন্তু, কেন্দ্র সরকার দেখিনা চাকরি দিচ্ছে। উল্টে আমরা দেখি কর্মসঙ্কোচন হচ্ছে। কর্মসংস্থান তো দূরের কথা, চল্লিশ শতাংশ বেকারত্ব বেড়েছে। বছরে ২ কোটি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকারে এসেছিল ২০১৪ সালে। ২ কোটি তো অনেক দূরের কথা ২টো চাকরি দিয়েছে কিনা সন্দেহ আছে।”
এরপরেই ইডি-সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে তোপ দেগে চন্দ্রিমা আরও বলেন, “আজ সেখানে দাঁড়িয়ে এজেন্সি দিয়ে লালচক্ষু দেখালে তো হবে না, মানুষকে চাকরি দিতে হবে। এজেন্সিগুলির যে নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি তা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই আমরা বলছি এজেন্সি নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি চাই। কর্মসংস্থানের যে দায়িত্ব সেটা মুখ্যমন্ত্রী পালন করছেন। রাজ্য সরকারের দায়িত্ব তিনি পালন করছেবন। ২ দিন আগেই নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে ১১ হাজার চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। যেখানে সারা দেশে অতিমারীর সময় মেয়েদের কর্মচ্যুত করা হয়েছে সেখানে বাংলার চিত্রটা আলাদা। মেয়েদের কর্মসংস্থান বেড়েছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এটা করেছেন। তাই এতকিছু মুখ্যমন্ত্রী করেছেন তা দেখবি আর জ্বলবি আর লুচির মতো ফুলবি।”
