Thursday, August 28, 2025

আগামী ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত।এর আগে ইডির হাতে ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজত হয়েছে। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে মূল অভিযুক্ত (Partha Chatterjee) হিসেবে পার্থর হেফাজত চাইল সিবিআই। সেই মর্মেই এদিন আদালতে সওয়াল করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থার আইনজীবী। যদিও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী বলেন, তাঁর মক্কেলকে কেন আদলতে আনা হয়েছে সেটাই জানা নেই। কী জন্য ডাকা হল, না জানলে সওয়াল করব কী করে? পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে  গ্রেফতার করেছে ইডি (ED)। এখন আবার সিবিআই তাঁকে হেফাজতে চাইছে।আসলে ওদের নিজেদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। এতে আমার মক্কেলকে হেনস্থা করা হচ্ছে।

এরপরই সিবিআই আইনজীবীর কাছে বিচারক জানতে চান, আপনাদের কপি অপরপক্ষের কাছে পৌঁছয়নি? আপনার কাছে অন্য কোনও কপি আছে? সিবিআইয়ের জবাব, আমরা জানিয়েছি। পাল্টা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী জানান, আমাদের কাছে কিছু আসেনি। সিবিআই আমার মক্কেলকে গ্রেফতার করেনি।বরং তিনি প্রশ্ন তোলেন, গ্রেফতার না করে কীভাবে হেফাজতে চাইতে পারে? ওরা জেলে গিয়েও এই মামলায় আমার মক্কেলকে জেরা করতে পারে।

এদিকে পাল্টা সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, এসএসসি গ্রুপ ‘সি’ নিয়োগের পরীক্ষা হয় স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে। সেখানে অশিক্ষক কর্মী নেওয়া হয়। পরীক্ষার পর হয় কাউন্সেলিং। যারা চাকরি পায় তাদের রেকমেন্ডেশন লেটার দিয়ে নিয়োগ হয়। তদন্তে এই প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়েছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। ৪০০-র বেশি মানুষ ভুয়ো নিয়োগপত্র পেয়েছে। যারা অনেকেই পাশ করেনি বা পরীক্ষা দেয়নি। বেশিরভাগ রেকমেন্ডেশন লেটার ভুয়ো। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন এই ভুয়ো নিয়োগ ষড়যন্ত্রের মূল চক্রী।

সিবিআইয়ের আরও দাবি, ‘এই দুর্নীতি হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তে। অন্য অভিযুক্ত শান্তিপ্রসাদ সিনহা, অশোক কুমার সাহা তাঁদের আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হয়েছেন কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। তাই প্রধান অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। অন্য ধৃতদের সামনাসামনি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। এতদিন তিনি ইডি হেফাজতে ছিলেন। মামলার তদন্তের স্বার্থে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআইয়ের এর প্রয়োজন। তাই পুলিশ হেফাজত চাইছি।’পার্থর আইনজীবীর পাল্টা, ‘অভিযুক্ত একজন রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব। তাঁর বিরুদ্ধে করা এফআইআর-এ আইপিসির ৪২০ এবং ১২০-বি ধারার উল্লেখ রয়েছে। এই ধরনের এফআইআর একজন জনপ্রতিনিধির নামে হয়েই থাকে। কিন্তু এখানে তদন্তকারী সংস্থা অনেক কিছু লুকনোর চেষ্টা করছে, অপরপক্ষকে ধোঁয়াশাতে রাখছে। আমরা ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। গ্রেফতারির আগেও তাঁকে ডাকা হয়েছে, প্রতিবারই তিনি গিয়েছেন।

শুক্রবার আলিপুর আদালতে দু’পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর উঠে দাঁড়ান এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া পার্থ। তিনি বলেন, ‘‘আমার ভূমিকা কী? প্রাথমিক বোর্ড কিংবা এসএসসি স্বয়ংশাসিত দফতর। তারা প্রার্থীদের চয়ন করত। আমি অর্থনীতিতে স্নাতক।’’ এর পর তাঁর পরিবারের অন্যান্যদের পরিচয় তুলে ধরেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তার পর বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘‘স্যার আমি খুব অসুস্থ। কে আমাকে সাহায্য করবে! সারা দিন অনেক ওষুধ খাই।’’ করুণ মুখে পার্থ বলেন, ‘‘বিচারের প্রতি আস্থা রাখছি। আপনি আপনার মতো বিচার করবেন। আপনার কাছে বিচারের আশায় আছি।’’বক্তব্য শোনার পর আদালত রায়দান স্থগিত রেখেছে।

 

Related articles

উন্মুক্ত শৌচমুক্ত ৯৪ পুরসভা, স্বচ্ছতার শংসাপত্র বাংলাকে

শহরাঞ্চলে আর খোলা শৌচের দৃশ্য নেই। পুরসভাগুলির উদ্যোগ এবং পুর দফতরের তদারকিতে উন্মুক্ত শৌচমুক্ত হয়েছে কলকাতা সহ রাজ্যের...

ফাঁকা কেন্দ্রগুলিতে দ্রুত ইআরও–এইআরও নিয়োগের নির্দেশ কমিশনের 

ফাঁকা পড়ে থাকা একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে দ্রুত ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (ইআরও) এবং অ্যাসিসটেন্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (এইআরও) নিয়োগের...

নথিভুক্ত অথচ নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে তলব করল কমিশন 

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ফের সক্রিয় হল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। নথিভুক্ত হলেও কার্যত নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে...

সুখবর! পুজোর আগে পার্ট টাইম কর্মীদের বেতন বাড়াল রাজ্য 

পুজোর আগে রাজ্যের আংশিক সময়ের কর্মীদের জন্য বড় সুখবর দিল নবান্ন। বিভিন্ন দফতর ও সরকার অধীনস্থ সংস্থায় কর্মরত...
Exit mobile version