“শুনেছি প্রতিহিংসাপরায়ণ”: মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে কীভাবে বলতে পারেন বিচারপতি! তোপ কুণালের

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিহিংসাপরায়ণ বলে শুনেছেন! সংবাদ মাধ্যমে এ কথা কীভাবে বলতে পারেন একজন বিচারপতি? তোপ দাগলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে গতকালের এক টেলিভিশন চ্যানেলে জাস্টিস অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly) সাক্ষাৎকার নিয়ে কুণাল বলেন, “জাস্টিস অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, অভিষেক (Abhishek Banerjee) যদি আমার নামে এই বলত, আমি তাকে এই করতাম। একজন বিচারপতির কখনও উইশলিস্ট হতে পারেন!” সাক্ষাৎকারে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, “আমি শুনেছি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) প্রতিহিংসাপরায়ণ”। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, “আপনি বিচারপতি হিসেবে একজন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে এই কথা বলেন কী করে! এই মন্তব্যের আমি তীব্র প্রতিবাদ করছি। একজন বিচারপতি একটা ‘শুনেছি’-র ওপর দাঁড়িয়ে এই ধরণের মন্তব্য করেন কী করে!” এটা সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা নেতিবাচক ধারণা মানুষের মধ্যে তৈরি করে দিতে পারে বলে অভিযোগ করেন কুণাল।

পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বুলেট’ মন্তব্য নিয়ে কুণাল বলেন, যে মানুষটি মার খেয়েও ধৈর্য্য ধরে ছিলেন, তাঁকে স্যালুট করেছেন অভিষেক (Abhishek Banerjee)। “অভিষেক বলেছেন, আমি হলে গুলি চালাতে বলতাম। এটাই পরিবর্তন। সহিষ্ণুতা দেখিয়েছেন পুলিশ অফিসার। গুলি চালায়নি। আগের সরকারের আমলে হলে তো গুলি চলতো!” মত কুণালের।

এরপর বিজেপিকে কটাক্ষ করে কুণাল ঘোষ বলেন, রাজ্যে নেতারা এখানে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করছেন, আর কেন্দ্রের সব রিপোর্টে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় সব জায়গাতেই পশ্চিমবঙ্গ। কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত রিপোর্টেই বাংলা এগিয়ে। বাংলায় উন্নয়ন হচ্ছে। তার প্রমাণ মিলছে কেন্দ্রের দেওয়া রিপোর্টেই।

খারাপ ভাষা প্রয়োগ, ব্যক্তিগত আক্রমণ না করার পক্ষেই মত তৃণমূলে রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের। তবে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি তৃণমূলকে যে ব্যক্তিগত আক্রমণ, খারাপ ভাষা প্রয়োগ করেছিল তা মনে করিয়ে দেন কুণাল। পাশাপাশি নাম না করে শুভেন্দুকে (Shuvendu Adhikari) আক্রমণ করে বলেন, তৃণমূলের সব সুবিধা নিয়ে থেকে বিধানসভা ভোটের আগে দলবদল করে তিনি বিজেপিতে গিয়ে ‘পিসি’, ‘ভাইপো’ ইত্যাদি বলে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছিলেন। মিডিয়াকেও ‘চটি চাটা মিডিয়া’ বলে বারবার আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু। তিনি আরও বলেন, সারা ভারত থেকে বিজেপির নেতারা বিধানসভা ভোটের আগে এসে ব্যক্তিগত আক্রমণ, অঙ্গভঙ্গি করে গেছেন। অন্যদিকে উন্নয়নের রাজনীতি করেছে তৃণমূল। তাই মানুষ ভোট দিয়েছেন। পরপর তিনবার ভোট দিয়ে সমর্থন করে ক্ষমতায় এনেছেন। অতীতের তুলনায় মানুষ এখন বেশি পরিষেবা পাচ্ছেন। বিজেপির পাশাপাশি বামেরাও তৃণমূলকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছে বলে অভিযোগ করেন কুণাল।

রাজ্যে বিনিয়োগ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, বাংলায় শিল্প কোক, আদানি, টাটাগোষ্ঠীর বিপুল বিনিয়োগ, লগ্নি চলছে। খারাপ-বিক্ষিপ্ত ঘটনা দু-একটা ঘটনা ঘটলে তার যথাযথ ব্যবস্থা রাজ্য সরকার নিচ্ছে। দু-একটা অন্যায় ঘটনার জন্য ভালোগুলো যে একদম ঢাকা পড়ে যাচ্ছে, এটা ঠিক নয়। বাংলায় একটা জমিনীতিও তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি। তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, সকলেরই একটা বাকসংযম, সৌজন্যের ভাষা থাকা উচিৎ। অন্যায়ের সমালোচনা অবশ্যই হবে, কিন্তু ভালোগুলোও যেন উল্লেখ হয় এবং প্রশংসাও হয়।

আরও পড়ুন- ফের রাজ্যের ২ আইপিএস অফিসারকে দিল্লিতে তলব ED-র

Previous articleকর্মীর সঙ্গে প্ৰতিবেশির পরকীয়াতে আপত্তি সেলুন মালিকের? শান্তিনিকেতনে শিশু খু*নে চাঞ্চল্যকর তথ্য
Next articleব‍্যর্থ হার্দিকের ৭১, অজিদের কাছে ৪ উইকেটে হারল ভারতীয় দল