রাজনৈতিক স্বার্থে দেশের ইতিহাস-ভূগোল বদলানো হচ্ছে: নাম না করে বিজেপিকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর

আলিপুর মিউজিয়াম উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়।

আলিপুর সংশোধনাগারে উদ্বোধন করা হয় আলিপুর মিউজিয়ামের (Alipur Museum )। বুধবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ সেই সংগ্রহশালার উদ্বোধনে গিয়ে নাম না করে বিজোপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যাপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থে দেশের ইতিহাস-ভূগোল বদল করে দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে দেশের ঐতিহ্য-ইতিহাস বাঁচিয়ে রাখতে হবে আমাদের।

আদিগঙ্গার পাড়ের ১৯০৬ সালে তৈরি হয় এই ভবন। ব্রিটিশ জমানায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, জওহরলাল নেহরু, বিধানচন্দ্র রায়ের কখন না কখন এই জেলে ছিলেন। তাঁদের ব্যবহৃত কুঠুরি ‘হেরিটেজ সাইট’ হিসেবে চিহ্নিত করা রয়েছে। কুঠুরিগুলির সামনে তাঁদের নামের ফলক বসেছে। ঐতিহ্য অক্ষুন্ন রেখেই এই মিউজিয়াম তৈরি হয়েছে।

বেশ কয়েক বছর আগেই আলিপুর সংশোধনাগার থেকে বারুইপুর সংশোধনাগারে বন্দিদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মূল ফটকের বসানো হয়েছে আলিপুর মিউজিয়ামের বোর্ড। রাজ্যে একাধিক সংগ্রহশানা থাকলেও এই প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জীবন সম্বন্ধীয় মিউজিয়াম তৈরি হয়েছে। এখানে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, জওহরলাল নেহরু, চিত্তরঞ্জন দাস, বিধানচন্দ্র রায়ের ব্যবহৃত কুঠুরিকে সংস্কার করা হয়েছে। রাখা হয়েছে তাঁদের ব্যবহৃত সামগ্রী। তৎকালীন ছবি, ফোটো। আলিপুর জেলেই ফাঁসি দেওয়া হয় স্বাধীনতা সংগ্রামী অনন্তহরি মিত্রকে। ফাঁসি হয় প্রমোদরঞ্জন চৌধুরী, দীনেশ গুপ্ত-সহ অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামীদের। সেই ফাঁসির মঞ্চও নতুনভাবে গড়া হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলা না থাকলে দেশে নবজাগরণ, স্বাধীনতা সংগ্রাম, সংস্কার হত না। গান্ধীজির সঙ্গে বাংলার নীবিড় যোগ সূত্রের কথা স্মরণ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

কেন্দ্রের এনডিএ সরকারের আমলে বিভিন্ন ইতিহাসিক জায়গার নাম বদল করা হচ্ছে। বদলে যাচ্ছে দেশের ইতিহাস-ভূগোল। এই ঘটনা নিয়ে নাম না করে অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থেই দেশের ইতিহাস-ভূগোল বদলে দেওয়া হচ্ছে। দেশের প্রকৃত ইতিহাস রক্ষিত করতে হবে আমাদের।

আলিপুর মিউজিয়াম ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পাক, সেটা চান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, আলিপুর জেলের সংগ্রহশালা অন্যতম ট্যুরিস্ট স্পট। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ঐক্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদানের কথা স্মরণ করেন মমতা। বলেন, একটি গানের মাধ্যমে দেশকে একসূত্রে বেঁধেছেন রবীন্দ্রনাথ। দেশের জন্য যাঁরা আত্মবলিদান দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা বলেন, নেতা কেমন হবেন? যিনি মানুষে মানুষে বিভেদ না করে সবাইকে সমান চোখে দেখবেন। আর নেতাদের মতাদর্শ আলাদা হলেও, তাঁদের সম্মানের জায়গা এক- মত মমতার।

 

Previous articleপার্থর আমলে প্রাইমারিতে চাকরি পিছু সাড়ে ৭লক্ষ টাকা, ফাঁকা খাতা জমা দেওয়ার নির্দেশ
Next articleWBSEDCL: ত্রৈমাসিক নয় মাসের বিল মাসেই পাবেন গ্রাহকরা, নয়া ভাবনা রাজ্যের