প্রতি ৪ সেকেন্ডে অনাহারে মৃত্যু হচ্ছে একজনের, প্রকাশ্যে ভয়াবহ পরিসংখ্যান

একদিকে মহামারী অন্যদিকে যুদ্ধ, এই দুয়ের জেরে বিশ্ব অর্থনীতি চরম পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। যার প্রভাবে ক্ষুদা ও দারিদ্র আগের তুলনায় ভয়াবহ আকার নিয়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে অনাহারে মৃত্যুর ঘটনা। পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে প্রতি ৪ সেকেন্ডে বিশ্বে মৃত্যু হচ্ছে একজন ক্ষুধার্ত মানুষের! ভয়ঙ্কর এমন রিপোর্টই প্রকাশ্যে এনে বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে একটি খোলাচিঠি প্রকাশ করল বিভিন্ন দেশের মানব-উন্নয়নকাজে জড়িত সংস্থা। যা প্রকাশ্যে আসার পর রীতিমতো আঁতকে উঠেছে গোটা বিশ্ব।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন সামনে রেখে মঙ্গলবার বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে একটি খোলাচিঠি প্রকাশ করেছে ৭৫টি দেশের মানব উন্নয়নকাজে জড়িত ২৩৮টি এনজিও। তালিকায় রয়েছে ‘অক্সফাম’, ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’, ‘প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালে’র মতো বিশ্ববিখ্যাত সংস্থাও। তাঁদের তরফে জানানো হয়েছে, অতিমারি ও যুদ্ধ বিশ্বকে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছে। যুদ্ধের জেরে বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। সরবরাহ কমে আসায় স্বাভাবিক ভাবে দামও বেড়েছে খাদ্যপণ্যের। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এই মুহূর্তে বিশ্বে প্রতি ৪ সেকেন্ডে মৃত্যু হচ্ছে একজন ক্ষুধার্ত মানুষের! বিশ্ব নেতাদের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ক্ষুধামুক্ত এক পৃথিবী গড়ে তুলতে যাতে দ্রুত যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হয়।

ওই চিঠিতে বিশ্বনেতাদের সতর্ক করে জানানো হয়েছে, বিশ্বে ক্ষুধা-পরিস্থিতি ক্রমশ লাগামছাড়া হচ্ছে। যাতে লাগাম টানা এখনই জরুরি। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মুহূর্তে বিশ্বের প্রায় ৩৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ চরম ক্ষুধার সঙ্গে লড়ছে। এই সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। বিশ্বে চরম ক্ষুধা নিয়ে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে ১৯ হাজার ৭০০ মানুষ। সেই হিসাবে, প্রতি চার সেকেন্ডে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। বিশ্বনেতাদের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও দুর্ভিক্ষ-পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে সোমালিয়া! এছাড়াও বিশ্ব জুড়ে ৪৫টি দেশের ৫ কোটি মানুষ অনাহারের আতঙ্কের মুখে রয়েছেন! ওই চিঠিতে রীতিমতো হতাশার সঙ্গে লেখা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে কৃষিখাত আধুনিক হয়েছে, ফসল উৎপাদন ও কাটার ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এর পরেও একুশ শতকে এসে আমরা খাদ্যসংকটে ভুগছি এবং বিভিন্ন জায়গায় দুর্ভিক্ষ-পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। এ খুবই দুঃখজনক। বলা হয়েছে সংকটময় এই পরিস্থিতি একটি দেশ, একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল বা কোনও মহাদেশে সীমাবদ্ধ নয়, এ পুরো মানবতার সংকট।

Previous articleশিক্ষক নিয়োগ মামলায় সুবীরেশের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে বিস্ফোরক সৌগত
Next articleমহালয়ার আগেই শুরু বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব, বৃহস্পতিবার থেকেই পুজো উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী