Friday, December 26, 2025

পূর্ব মেদিনীপুরে মৎস্যজীবীদের জালে ডায়মন্ড হারবারে তলিয়ে যাওয়া দুই নাবালিকা বোনের দেহ

Date:

Share post:

গত, রবিবার সন্ধ্যায় ডায়মন্ড হারবারে (Diamond Harbour) জেটিঘাটে ভেসেল থেকে অসাবধানবশত নামতে গিয়ে ডায়মন্ড হারবারে হুগলি নদীতে (Hooghly river) তলিয়ে যায় দুই শিশু। দুই নিখোঁজ শিশু সম্পর্কে দিদি-বোন। অনেক চেষ্টা করেও তাদের হদিশ মেলেনি। অবশেষে প্রায় ৪৫ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুরের সুতাহাটা (Sutahata) এলাকায় হলদি ও হুগলি নদীর সংযোগস্থল থেকে উদ্ধার দুই বোনের দেহ। পরিবারের সদস্যরা দুই শিশুকে হারিয়ে শোকাচ্ছন্ন আত্মীয়রা। মৃত দুই নাবালিকার নাম আতিফা নাসরিন (৫), সিদ্রা তাসরিন (৭)।

এদিন দুপুরে পূর্ব মেদিনীপুরের সুতাহাটা এলাকায় হলদি ও হুগলি নদীর সংযোগস্থলে প্রথমে মৎস্যজীবীদের জালে ওঠে আতিফা নাসরিনের (Atifa Nasrine) দেহ। মৎস্যজীবীদের তরফে খবর দেওয়া হয় পুলিশে (Police)। ওই নাবালিকার দেহ উদ্ধারের কিছুক্ষণের মধ্যে একই জায়গা থেকে উদ্ধার হয় সিদ্রা তাসরিনের দেহ। পরিবারের লোক তাদের শনাক্ত করার পর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। প্রায় দু’দিন ধরে পুলিশ ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা (Civil Defence Member) তল্লাশি চালায়। ড্রোন, ডুবুরি, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল নামিয়ে তল্লাশি চালিয়েও হদিশ মেলেনি নিখোঁজ দুই শিশুর। উদ্ধারকারী দল গঠন করেও তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। দফায় দফায় বিভিন্নভাবে চলে খোঁজাখুঁজি। ১৫ জনের কুইক রেসপন্স টিম (Quick response team), ২০ জনের সিভিল ডিফেন্স টিম এবং অভিজ্ঞ ডুবুরি দিয়ে ডায়মন্ডহারবার থেকে কাকদ্বীপ (Kakdwip) পর্যন্ত নদীবক্ষে চালানো হয় তল্লাশি অভিযান। ড্রোনও ওড়ানো হয়। কিন্তু কোনও দেহ দেখা যায়নি। বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে ডেকেও লাভ হয়নি। অবশেষে মৎস্যজীবীদের জালে উদ্ধার দু’জনের দেহ।

পরিবারের সঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরে ঘুরতে গিয়েছিলেন দুই শিশু। রবিবার আনন্দপুর থানা এলাকার গুলসন কলোনি এলাকা থেকে মহম্মদ জাকির হোসেন তাঁর পরিবার নিয়ে ডায়মন্ড হারবারে ঘুরতে যায়। ওইদিন সন্ধে সাড়ে ৬টা নাগাদ ভেসেল পৌঁছয় ডায়মন্ড হারবার জেটি ঘাটে (Diamond Ferry Service)। সেখানেই ঘটে দুর্ঘটনা। লঞ্চ থেকে নেমে আসার সময় নদীতে পড়ে যায় তারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, দুটি ভেসেলের মাঝে ফাঁক ছিল। কিন্তু নামার সময় তা খেয়াল করেনি ওই দুই বোন। ফলে ফাঁক দিয়ে গলে হুগলি নদীতে পড়ে যায়। দুই শিশুর তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়ার পর তড়িঘড়ি সিভিল ডিফেন্স টিমকেও উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছিল।

এদিকে, আগামী দিনে যাতে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য কী কী পদক্ষেপ করা যায়, তা নিয়ে পুরসভার সঙ্গে বৈঠক করে মহকুমা প্রশাসন। যেভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেজন্য আগামিদিনে আরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ফেরিঘাটে নিতে হবে বলে মনে করছে প্রশাসন। কী কী করা যায়, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। পুরসভা যেহেতু এই ঘাট পরিচালনার দায়িত্বে, তাই সেখানে আরও বেশি সংখ্যক সিসি ক্যামেরা বসানোর কথা ভাবা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কয়েকটি ক্যামেরা খারাপ রয়েছে। সেগুলি সারিয়ে ফেলার কথাও আলোচনায় উঠে আসে।

 

spot_img

Related articles

মানবে না হার, তৃণমূল আবার: ছাব্বিশের স্লোগান বেঁধে দিলেন অভিষেক

“মানবে না হার, তৃণমূল আবার। বাঁচতে চাই, বিজেপি বাই।“ ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে নতুন স্লোগান বেঁধে দিলেন তৃণমূলের...

ফেডারেশনের প্রস্তাবে আপত্তি নেই ক্লাব জোটের, আইসএল নিয়ে কাটছে জট

আইএসএল(ISL) নিয়ে জট কাটছে।  বছর শেষে  অনিশ্চয়তার মেঘ কিছুটা হলেও কাটছে। শুক্রবার ক্লাব জোটের সঙ্গে ফেডারেশনের মেগা মিটিং...

নেতাজির দেহাবশেষ দেশে আনা হোক: ১২৯তম জন্মদিবসের আগে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি পরিবারের

জন্মদিবসের প্রাক্কালে নেতাজির দেহাবশেষ ভারতে ফিরিয়ে আনার দাবি জানালেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। যে দেশনায়ককে নিয়ে প্রচার করে বাংলার...

১৬ বছরেই তবলা শিল্পে খ্যাতি বিশ্বজনীন, সর্বোচ্চ সম্মান পেলেন বাংলার সুমন

মাত্র ১৬ বছর বয়সেই সুর তালের ছন্দে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন, তারই সৌজন্য রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেলেন কিশোর তবলা বাদক...