Thursday, December 25, 2025

চলে গেলেন আনে ফ্রাঙ্কের প্রিয় বন্ধু ‘হানেলি’

Date:

Share post:

আনে ফ্রাঙ্কের ডায়েরিতে ‘হানেলি’ নামটা মনে আছে?আনের অন্যতম প্রিয় বান্ধবী ছিলেন হানেলি। স্কুলে দু’জনে পাশাপাশি বসে ক্লাস করেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বের্গেন-বেলসেন কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে ঠাঁই হয়েছিল তাঁরও। পার্থক্য শুধু একটাই, রক্ষা পেয়েছিলেন হানেলি যাঁর পুরো নাম হানা পিক গসলার। ৯৩ বছর পর্যন্ত পৃথিবীর আলো দেখে গত ২৮ অক্টোবর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি।

আরও পড়ুনঃগত ২৭ মাসে সর্বনিম্ন ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ

আনে ফ্রাঙ্ক ফাউন্ডেশনের তরফে এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানিয়ে বলা হয়েছে, আনের মতো ফ্রাঙ্ক ফাউন্ডেশনও হানার উপর ভরসা করতে পারত। তবে, তাঁর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিশদে কিছু জানানো হয়নি ফাউন্ডেশনের তরফে। আনের সঙ্গে নিজের বন্ধুত্বের কথা হানা বিস্তারিত জানিয়ে গিয়েছেন ‘মেমরিজ় অব আনে ফ্রাঙ্ক; রিফ্লেকশন অব চাইল্ডহুড ফ্রেন্ড’ বইয়ে।

১৯২৮ সালে জার্মানিতে জন্ম হানার। ১৯৩৩ সালে হিটলারের উত্থান ও সেই সঙ্গে ঘনিয়ে আসা ইহুদি বিদ্বেষ এড়াতে হানার পরিবার আমস্টারডামে চলে আসে। সেই একই সময় ফ্রাঙ্ক পরিবারও পা রাখে শহরে। খুব দ্রুত হৃদ্যতা গড়ে উঠেছিল দুই পরিবারের মধ্যে। আনে ও হানা একই স্কুলে লেখাপড়া করেছেন। কাছাকাছি বাড়ি হওয়ায় ১৯৩৪ সালে দুই বন্ধু ও তাদের মায়েদের একসঙ্গে বাজারে যাওয়ার কথা প্রায়শই নিজের স্মৃতিচারণে বলতেন হানা।

জার্মানির পাশাপাশি নেদারল্যান্ডসেও ঘনিয়ে আসে ইহুদি বিদ্বেষ। নাৎসিদের হাত থেকে বাঁচতে ১৯৪২ সালে বাবা, মা, দিদির সঙ্গে আমস্টারডামের এক কারখানার গুদামঘরের চোরা কুঠুরিতে আত্মগোপন করেন আনে। তখনই যোগাযোগ ছিড়ে যায় দুই বান্ধবীর মধ্যে। হানারাও তখন আত্মগোপন করতে ব্যস্ত। ১৯৪৪ সালের ৪ অগস্ট নাৎসি গেস্টাপো অফিসারের হাতে ধরা পড়ে ফ্রাঙ্ক পরিবার। বের্গেন-বেলসেন ক্যাম্পে ঠাঁই হয় তাঁদের। সেই এক ক্যাম্পেই ছিল হানার পরিবারও। ১৯৪৩ সালে ধরা পড়েন তাঁরা। ‘আরবেট মাখট ফ্রাই’-এর আড়ালে নাৎসিদের নারকীয় অত্যাচার চালানোর সেই আখড়ায় ১৯৪৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ দেখা হয়েছিল আনে ও হানার। দু’জনেই তখন পনেরো ছুঁইছুঁই, দু’জনেই তখন কিশোরী। তার ঠিক এক মাস পরেই টাইফাসে মৃত্যু হয় আনের। হানার পরিবারের মধ্যে বেঁচে ছিলেন কেবল তিনি ও তাঁর দিদি গ্যাবি। স্মৃতিচারণে হানা জানিয়েছিলেন, ক্যাম্পের দুটি আলাদা অংশে তাঁরা থাকতেন। মাঝে ছিল কাঁটাতার। হানাকে দেখে আনে কেঁদে ফেলেছিল। জানিয়েছিল, সে একা। নাৎসিরা অন্যদের মতো আনের মাথার চুলও কামিয়ে দিয়েছিল। আনে নিজের চুলের প্রতি যত্নশীল ছিল খুবই। ব্যথিত হানা অনুভব করেছিলেন বান্ধবীর কষ্ট।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ক্যাম্প থেকে মুক্তি পান হানা। জেরুসালেমে নার্স হিসাবে নতুন করে জীবন শুরু করেন তিনি। বিয়ে করেন ওয়াল্টার পিককে। তাঁর পরিবারে রয়েছে, তিন ছেলে, ১১ জন নাতি-নাতনি ও তাঁদের ঘরের আরও ৩১ জন সন্তান।

spot_img

Related articles

সময়ের দেরিতেই বাঁধা প্রেমের গল্প-২৫ দিনের মাইলস্টোন ছুঁয়ে হলে ‘দেরি হয়ে গেছে’

সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায় নস্টালজিয়া, আবেগ আর রহস্যের মিশেলে দর্শকদের মন জয় করে প্রেক্ষাগৃহে টানা ২৫ দিনের বেশি সময় ধরে সফলভাবে...

নতুন তিন বিমান সংস্থা: ইন্ডিগোর একচেটিয়া দখল ভাঙছে দেশের আকাশে 

দেশের আকাশপথে একচেটিয়া দখল ভাঙতে যাচ্ছে। ইন্ডিগোর বিমান বাতিল ও যাত্রী অসুবিধার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন তিনটি সংস্থাকে...

ক্রিসমাস ইভে পর্তুগিজ চার্চে সকলের মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা মুখ্যমন্ত্রীর

ধর্ম যার যার, উৎসব সবার- এই মতাদর্শে বিশ্বাসী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যতটা শ্রদ্ধা ও গুরুত্বের...

শালবনিতে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হুগলিতে ওয়্যারহাউস! সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার 

কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি শিল্প পরিকাঠামো বৃদ্ধি করতে বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে...