Thursday, August 28, 2025

চলে গেলেন আনে ফ্রাঙ্কের প্রিয় বন্ধু ‘হানেলি’

Date:

Share post:

আনে ফ্রাঙ্কের ডায়েরিতে ‘হানেলি’ নামটা মনে আছে?আনের অন্যতম প্রিয় বান্ধবী ছিলেন হানেলি। স্কুলে দু’জনে পাশাপাশি বসে ক্লাস করেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বের্গেন-বেলসেন কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে ঠাঁই হয়েছিল তাঁরও। পার্থক্য শুধু একটাই, রক্ষা পেয়েছিলেন হানেলি যাঁর পুরো নাম হানা পিক গসলার। ৯৩ বছর পর্যন্ত পৃথিবীর আলো দেখে গত ২৮ অক্টোবর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি।

আরও পড়ুনঃগত ২৭ মাসে সর্বনিম্ন ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ

আনে ফ্রাঙ্ক ফাউন্ডেশনের তরফে এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানিয়ে বলা হয়েছে, আনের মতো ফ্রাঙ্ক ফাউন্ডেশনও হানার উপর ভরসা করতে পারত। তবে, তাঁর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিশদে কিছু জানানো হয়নি ফাউন্ডেশনের তরফে। আনের সঙ্গে নিজের বন্ধুত্বের কথা হানা বিস্তারিত জানিয়ে গিয়েছেন ‘মেমরিজ় অব আনে ফ্রাঙ্ক; রিফ্লেকশন অব চাইল্ডহুড ফ্রেন্ড’ বইয়ে।

১৯২৮ সালে জার্মানিতে জন্ম হানার। ১৯৩৩ সালে হিটলারের উত্থান ও সেই সঙ্গে ঘনিয়ে আসা ইহুদি বিদ্বেষ এড়াতে হানার পরিবার আমস্টারডামে চলে আসে। সেই একই সময় ফ্রাঙ্ক পরিবারও পা রাখে শহরে। খুব দ্রুত হৃদ্যতা গড়ে উঠেছিল দুই পরিবারের মধ্যে। আনে ও হানা একই স্কুলে লেখাপড়া করেছেন। কাছাকাছি বাড়ি হওয়ায় ১৯৩৪ সালে দুই বন্ধু ও তাদের মায়েদের একসঙ্গে বাজারে যাওয়ার কথা প্রায়শই নিজের স্মৃতিচারণে বলতেন হানা।

জার্মানির পাশাপাশি নেদারল্যান্ডসেও ঘনিয়ে আসে ইহুদি বিদ্বেষ। নাৎসিদের হাত থেকে বাঁচতে ১৯৪২ সালে বাবা, মা, দিদির সঙ্গে আমস্টারডামের এক কারখানার গুদামঘরের চোরা কুঠুরিতে আত্মগোপন করেন আনে। তখনই যোগাযোগ ছিড়ে যায় দুই বান্ধবীর মধ্যে। হানারাও তখন আত্মগোপন করতে ব্যস্ত। ১৯৪৪ সালের ৪ অগস্ট নাৎসি গেস্টাপো অফিসারের হাতে ধরা পড়ে ফ্রাঙ্ক পরিবার। বের্গেন-বেলসেন ক্যাম্পে ঠাঁই হয় তাঁদের। সেই এক ক্যাম্পেই ছিল হানার পরিবারও। ১৯৪৩ সালে ধরা পড়েন তাঁরা। ‘আরবেট মাখট ফ্রাই’-এর আড়ালে নাৎসিদের নারকীয় অত্যাচার চালানোর সেই আখড়ায় ১৯৪৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ দেখা হয়েছিল আনে ও হানার। দু’জনেই তখন পনেরো ছুঁইছুঁই, দু’জনেই তখন কিশোরী। তার ঠিক এক মাস পরেই টাইফাসে মৃত্যু হয় আনের। হানার পরিবারের মধ্যে বেঁচে ছিলেন কেবল তিনি ও তাঁর দিদি গ্যাবি। স্মৃতিচারণে হানা জানিয়েছিলেন, ক্যাম্পের দুটি আলাদা অংশে তাঁরা থাকতেন। মাঝে ছিল কাঁটাতার। হানাকে দেখে আনে কেঁদে ফেলেছিল। জানিয়েছিল, সে একা। নাৎসিরা অন্যদের মতো আনের মাথার চুলও কামিয়ে দিয়েছিল। আনে নিজের চুলের প্রতি যত্নশীল ছিল খুবই। ব্যথিত হানা অনুভব করেছিলেন বান্ধবীর কষ্ট।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ক্যাম্প থেকে মুক্তি পান হানা। জেরুসালেমে নার্স হিসাবে নতুন করে জীবন শুরু করেন তিনি। বিয়ে করেন ওয়াল্টার পিককে। তাঁর পরিবারে রয়েছে, তিন ছেলে, ১১ জন নাতি-নাতনি ও তাঁদের ঘরের আরও ৩১ জন সন্তান।

spot_img

Related articles

উন্মুক্ত শৌচমুক্ত ৯৪ পুরসভা, স্বচ্ছতার শংসাপত্র বাংলাকে

শহরাঞ্চলে আর খোলা শৌচের দৃশ্য নেই। পুরসভাগুলির উদ্যোগ এবং পুর দফতরের তদারকিতে উন্মুক্ত শৌচমুক্ত হয়েছে কলকাতা সহ রাজ্যের...

ফাঁকা কেন্দ্রগুলিতে দ্রুত ইআরও–এইআরও নিয়োগের নির্দেশ কমিশনের 

ফাঁকা পড়ে থাকা একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে দ্রুত ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (ইআরও) এবং অ্যাসিসটেন্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (এইআরও) নিয়োগের...

নথিভুক্ত অথচ নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে তলব করল কমিশন 

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ফের সক্রিয় হল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। নথিভুক্ত হলেও কার্যত নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে...

সুখবর! পুজোর আগে পার্ট টাইম কর্মীদের বেতন বাড়াল রাজ্য 

পুজোর আগে রাজ্যের আংশিক সময়ের কর্মীদের জন্য বড় সুখবর দিল নবান্ন। বিভিন্ন দফতর ও সরকার অধীনস্থ সংস্থায় কর্মরত...