“মোদি সরকারের নোটবন্দি সম্পূর্ণ ব্যর্থ”, টুইটে কেন্দ্রকে তোপ অমিতের

শুক্রবার টুইট করে অমিত মিত্র জানান, কালো টাকা বাতিল করে মোদি সরকারের দুর্নীতি দূর করার দাবি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি মোদি সরকারের এই ব্যর্থতার ছবিটিকে তুলে ধরেছেন।

৬ বছর আগে নোট বাতিলের (Demonetization) কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi)। ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর রাতে আচমকাই দেশবাসীকে চমকে দিয়ে নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছিলেন দেশ থেকে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত। একমুহূর্তেই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল জনজীবন, এর পর রাতারাতি ব্যাংক আর এটিএম কাউন্টারের বাইরে দেখা গিয়েছিল লম্বা লাইন। প্রায় তিনমাসের বেশি সময় ধরে জেরবার হতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। মুখ থুবড়ে পড়ে দেশের অর্থনীতি। এবার মোদি সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব হলেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা বর্তমান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র (Amit Mitra)।

শুক্রবার টুইট করে অমিত মিত্র জানান, কালো টাকা (Black Money) বাতিল করে মোদি সরকারের দুর্নীতি (Corruption) দূর করার দাবি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি মোদি সরকারের এই ব্যর্থতার ছবিটিকে তুলে ধরেছেন। অমিত মিত্রর আরও অভিযোগ, ৬ বছর আগে মোদির নোট বাতিলের মূল উদ্দেশ্য ছিল কালো টাকা শেষ করার জন্য অথচ রাজধানী দিল্লির বুকে ৪০-৫০ শতাংশ প্রপার্টির লেনদেন হয় ক্যাশে অর্থাৎ কালো টাকায়।

তিনি আরও জানিয়েছেন, মোদির নোটবন্দির উদ্দেশ্য ছিল জাল টাকা শেষ করা। কিন্তু আসল সত্য হল, রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া ৫০০ টাকার জাল নোটে ১০২ শতাংশ বৃদ্ধি এবং ২০২২ অর্থবর্ষে ২০০০ টাকার জাল নোটে ৫৪ শতাংশ বৃদ্ধি সনাক্ত করেছে ৷ কটাক্ষের সুরে তিনি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উত্তর চেয়েছেন। মোদি সরকার দাবি করেছিলেন এর ফলে বাজারে ক্যাশ এর পরিমাণ কমে যাবে কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, শেষ ৬ বছরে বাজারে টাকার পরিমাণ ৭২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে, মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চরিয়েছেন অমিত মিত্র। নোটবন্দি মামলায় হলফনামা পেশে অতিরিক্ত সময়ের জন্যে আবেদন করে কেন্দ্র। অমিত মিত্র সে বিষয়েও এদিন প্রশ্ন তোলেন।

সম্প্রতি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (Reserve Bank of India) রিপোর্ট অনুযায়ী, ডিজিটাল লেনদেনের (Digital Transaction) তুলনায় বর্তমানে নগদে লেনেদেনের হারই বেশি। আরবিআইয়ের রিপোর্টে প্রকাশ, বাজারে এই মুহুর্তে নগদের পরিমাণ ৩০ লক্ষ ৮৮ হাজার কোটি টাকা। ২০১৬ সালের ৪ নভেম্বর পর্যন্ত শেষ ১৫ দিনে বাজারে নগদের পরিমাণের থেকে এই পরিসংখ্যান ৭১.৮৪ শতাংশ বেশি বলে জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া।

গত ৬ বছর ধরে দেশবাসীর একটাই প্রশ্ন, কী লাভ হল নোট বাতিল করে? কালো টাকা কি দেশে ফিরল? এত দুর্ভোগের শেষে প্রাপ্তি কী? তবে আজ পর্যন্ত এসব প্রশ্নের কোনও যথাযথ উত্তর দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকা্র। উলটে রিজার্ভ ব্যাংকই জানিয়েছে, নোট বাতিলের আগে দেশের জনতার হাতে যে পরিমাণ নগদ টাকা ছিল, নোটবন্দির পর গত ছ’বছরে কমেনি, বরং ৭১.৮৪ শতাংশ বেড়েছে। নোট বাতিল প্রকল্প যে কার্যত ফ্লপ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Previous articleনিয়োগ দুর্নীতিতে কার্যত পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছিলেন পার্থ-মানিক! তথ্য-সহ দাবি ইডির
Next article২০১৪-র টেট পাশদের তালিকা প্রকাশ, সব তথ্য নেই, জানালেন পর্ষদ সভাপতি