Aindrila Sharma: জীবন সফর শেষ, তারার দেশে উজ্জ্বল ঐন্দ্রিলা

'ফাইটার' ঐন্দ্রিলা (Aindrila Sharma) কর্কট রোগকে (Cancer) হারিয়ে জীবনের দ্বিতীয় ইনিংসটাও শুরু করেছিলেন লড়াইয়ের ময়দানে। কিন্তু আর স্বাভাবিক জীবনে কামব্যাক (Comeback) হল না।

মেয়েটার জীবনের গল্পগুলো খুব অল্প সময়ের জন্যই তাঁর নিজের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিল। তবে রবিবার দুপুর ১২ টা ৫৯ মিনিটে খড়কুটোর মতো আঁকড়ে থাকা মিরাকেলের উপর ভরসাটুকুও নিমেষে বিলীন হয়ে গেল। ‘ফাইটার’ ঐন্দ্রিলা (Aindrila Sharma) কর্কট রোগকে (Cancer) হারিয়ে জীবনের দ্বিতীয় ইনিংসটাও শুরু করেছিলেন লড়াইয়ের ময়দানে। কিন্তু আর স্বাভাবিক জীবনে কামব্যাক (Comeback) হল না। কাছ থেকে মৃ*ত্যুকে একবার স্পর্শ করে ফিরে এলেও শেষরক্ষা হল না। অলৌকিক কোনও ম্যাজিক ঐন্দ্রিলার (Aindrila Sharma) জীবনের গল্পটাকে রূপকথার ছোঁয়া দিতে পারল না। তারার দেশেই চলে গেল সে।

আগের দুবার হয়েছে, তৃতীয় বারও অসাধ্যসাধন করবেন ঐন্দ্রিলা? গত ১ নভেম্বর ফের হাসপাতালে Hospital) ভর্তি হওয়ার পর , অভিনেত্রীর কাছের মানুষ থেকে শুরু করে শুভানুধ্যায়ীরা প্রত্যেকেই এই আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে গেছিল। চিকিৎসকেরা আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন যাতে হাসিখুশি লড়াকু মেয়েটাকে একটু সুস্থ করা যায়। গত সোমবার অর্থাৎ ১৪ নভেম্বর থেকে আচমকাই শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে শুরু করে অভিনেত্রীর। বুধবার বার বার হার্ট অ্যাটাক। ফের চিকিৎসকদের মরিয়া চেষ্টা, ভেন্টিলেশনের মাত্রা বাড়ানো থেকে অন্য হাসপাতালের নিউরোসার্জনের পরামর্শ। কিন্তু কিছুতেই কিছু করা গেল না।অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখা বহরমপুরের মেয়ে ‘মিষ্টি’ অচেতন অবস্থাতেও লড়াই চালিয়ে গেছেন। কিন্তু পুরো ইনিংস মাঠে থাকা হল না তাঁর, মাঝপথেই তাঁর স্বপ্নের সফরে দাঁড়ি টানতে বাধ্য হলেন।

অতীতে দু’বার ক্যানসারে (Cancer) আক্রান্ত হয়েও চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন ঐন্দ্রিলা। ১৯৯৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বহরমপুরে জন্ম। উচ্চবিত্ত পরিবারের কন্যা। মা, বাবা, দিদিকে নিয়ে তাঁর আপনজনের বৃত্ত। ২০১৫ সালে, ক্লাস ইলেভেনে পড়ার সময় প্রথম বার ক্যানসার ধরা পড়ে তাঁর। কর্কট রোগ থাবা বসিয়ে ছিল তাঁর অস্থিমজ্জায়। লড়াই শুরু, কেমোথেরাপির ফলে মাথার চুল, ভ্রু প্রায় নেই, শরীরও খানিক বিকৃত। বাড়ির বাইরে বেরনোই কঠিন ছিল ঐন্দ্রিলার। শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশিই ছিল মানসিক টানাপড়েন আর অশান্তি। কিন্তু জীবনের সেই লড়াইয়ে জিতে গিয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। সেবার যুদ্ধজয়ের হাসি হেসেছিলেন তিনি।২০১৭ সালে ছোট পর্দায় সেই জীবনে হাতেখড়ি হয়েছিল ঐন্দ্রিলার। ‘ঝুমুর’ ধারাবাহিকে শুরু হয়েছিল অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলার যাত্রা। এরপর জীবনে জুড়ে যায় আরেক জীবন, নাম সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury)। কিন্তু নির্মম ক্যানসার ফের তাঁকে টার্গেট করে ২০২১ সালে। সে বার ফুসফুসে টিউমার, তবু হার মানেনি মেয়েটা। ক্যানসারের সঙ্গে লড়াইয়ের পাশাপাশি চলতে থাকে তাঁর অভিনয়ের কাজ।চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জানতে পারেন, ফুসফুসে ১৫ সেন্টিমিটারের একটি টিউমার তৈরি হয়েছে। আবার শুরু বাঁচার লড়াই। তবে এবার সর্বক্ষণ পাশে ছিলেন সব্যসাচী। ২০২২ সালে আবার যুদ্ধজয় করে ছন্দে ফেরেন ঐন্দ্রিলা। কিন্তু রবিবারের দুপুরে মন খারাপের খবরটা সত্যিই কি প্রত্যাশিত ছিল? বিজ্ঞান যাই বলুক, প্রিয়জনেরা দুঃস্বপ্নেও এই দিনটাকে দেখতে চাননি। তাই ঐন্দ্রিলার প্রয়াণে স্যোশাল মিডিয়া থেকে সংবাদমাধ্যম – সর্বত্রই ‘ ফাইটার’ ঐন্দ্রিলার স্মৃতিচারণ!

ঐন্দ্রিলার পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে হাসপাতাল থেকে সোজা কুঁদঘাটে তাঁর বাড়িতে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে আর সেখান থেকে টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে (Technician Studio) যাবে চিরঘুমের দেশে চলে যাওয়া ঐন্দ্রিলা শর্মার (Aindrila Sharma) নিথর দেহ। ইতিমধ্যেই টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে পৌঁছে সব ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখছেন রাজ চক্রবর্তী (Raj Chakraborty)। কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

 

Previous articleঐন্দ্রিলার লড়াই দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে: শোকবার্তায় জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
Next articleআজ শুরু বিশ্বকাপ, প্রথম ম‍্যাচে মুখোমুখি কাতার-ইকুয়েডর