মধ্যপ্রদেশে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘জল জীবন মিশন’-এর অধীন ৩০,০০০ কোটি টাকার প্রকল্পে চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির অভিযোগ। আর সেই অভিযোগের কেন্দ্রে রাজ্যের পিএইচই দফতরের বর্তমান মন্ত্রী সম্পতিয়া উইকে। এই অভিযোগ সামনে আসতেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যেরই সংশ্লিষ্ট দফতর।

পিএইচই-র মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় অন্ধাবন গত সপ্তাহে এই দুর্নীতির তদন্তের নির্দেশ জারি করেছেন। অভিযোগটি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছনোর পর কেন্দ্র সরকার রাজ্য সরকারের কাছে বিশদ রিপোর্ট তলব করে। এই অভিযোগের সূত্রপাত হয় প্রাক্তন বিধায়ক কিশোর সমৃতের একটি চিঠি থেকে, যা তিনি ১২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠান। সেই চিঠিতে অভিযোগ, সম্পতিয়া উইকে ব্যক্তিগত কমিশন হিসেবে ১,০০০ কোটি টাকা নিয়েছেন। এছাড়া প্রাক্তন মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার বি কে সোনাগরিয়া ও তাঁর হিসাবরক্ষক মহেন্দ্র খারে’র বিরুদ্ধেও ২,০০০ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠেছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রদেশ জল নিগমের প্রকল্প রূপায়ণ শাখার (PIU) একাধিক শীর্ষ আধিকারিক এই দুর্নীতিতে জড়িত। বেতুল জেলায় এক এক ইঞ্জিনিয়ার নাকি ১৫০ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে তুলে নিয়েছেন কোনও প্রকল্প না করেই। একই ধরণের ‘ঘোস্ট প্রজেক্ট’ ও বিপুল অঙ্কের অর্থ তছরুপের অভিযোগ উঠেছে ছিন্দওয়াড়া ও বালাঘাট জেলাতেও। সবচেয়ে উদ্বেগজনক অভিযোগ— প্রায় ৭,০০০টি ভূয়ো ‘সম্পন্ন’ প্রকল্পের সার্টিফিকেট পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রের কাছে। অথচ বাস্তবে সেই জল সরবরাহ প্রকল্পের কোনও অস্তিত্ব নেই। এর ফলে সরকারি অর্থ লোপাটের আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হয়েছে।

প্রাক্তন বিধায়ক সমৃতি দাবি করেছেন, এই দুর্নীতির পরিমাণ এতটাই ব্যাপক যে, এটি স্বাধীন ভারতের অন্যতম বৃহত্তম কেলেঙ্কারি হয়ে উঠতে পারে। তিনি অবিলম্বে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই রাজ্যের পিএইচই বিভাগের সমস্ত মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার ও মধ্যপ্রদেশ জল নিগমের প্রকল্প পরিচালকদের একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সাত দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। রাজ্য রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই এই ঘটনাকে ঘিরে তীব্র আলোড়ন শুরু হয়েছে। বিরোধীরা সরব হয়ে বলেছে— “এই দুর্নীতি শুধু উন্নয়নের নামে প্রতারণা নয়, মানুষের জলাধিকার লুঠ করার সামিল।” এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর মুখ্যমন্ত্রী কী পদক্ষেপ করেন, তা নিয়েই আপাতত নজর রাজ্যবাসীর।

আরও পড়ুন – জগাছায় একই পরিবারের তিনজনের রহস্যজনক মৃত্যু, তদন্তে পুলিশ
_

_

_

_

_

_

_

_
_
_