Saturday, August 23, 2025

ভারত-৭৫এ আমরা রাজনৈতিক স্বাধীনতাও সেভাবে পেয়েছি কি না, সন্দীহান গোপালকৃষ্ণ গান্ধী

Date:

Share post:

চিদানন্দ দাশগুপ্ত মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এর অনুষ্ঠানে ‘ভারত-৭৫’ শীর্ষক বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধী বলেন, দেশপ্রেম ও স্বাধীনতা দিবস নিয়ে বাড়তি আবেগ তো থাকবেই। এটা তো গর্বের বিষয় যে, আজ ৭৫ বছর কোনও বিদেশি শক্তি আমাদের শাসন করতে পারেনি। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হল, দেশের মধ্যেই কিছু শক্তি রয়েছে যারা জনসাধারণের মতামতকে তোয়াক্কা করে না।

তার মতে, মুলত স্বাধীন ভারত গঠিত হওয়ার সময় যে বিশ্বাসগুলি ছিল, যে সাধারণ বিষয়সূচি ও বোঝাপড়া নিয়ে গড়ে উঠেছিল দেশ, সেগুলিতে এখন বিশ্বাস রাখা হয় না। এমনকী, তারা বেশ গর্ব করেই এই সব অবিশ্বাসের কথাগুলি জাহির করে এবং বাস্তবে অনুশীলনও করে। এরকম কেউ কেউ কিন্তু জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে দেশ শাসনও করছেন। সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে, আমরা রাজনৈতিক স্বাধীনতাও সেভাবে পেয়েছি কি না, সে প্রশ্ন উঠে যায়। তবু বলব,কিছুটা হলেও যা পেয়েছি তা কম নয়। আমাদের প্রতিবেশী অনেক দেশে সেটুকুও নেই। আমাদের অন্তত নিজেদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করার স্বাধীনতা রয়েছে।

কিন্তু সামাজিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে আমরা অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছি। আসলে দেশ স্বাধীন হওয়ার প্রথম ২০ বছর আমাদের একদিকে নজর ছিল, কিন্তু তারপর থেকে ওটা অন্য বিষয়ের দিকে সরে যায়। ধর্ম-বর্ণ-জাতির মতো বিষয়গুলি তখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এরই ভিত্তিতে আমরা শ্রেণি বিন্যাসে নেমে পড়েছি। বলা যায়, এরপর থেকেই সামাজিক আর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিয়ে আমরা আর মাথা ঘামাই না। নয়া উদারনীতির চলনে আমরা অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। তারপর থেকে এই বিষয়গুলি নিয়েই রাজনীতি হয়ে চলেছে।

আমাদের প্রাথমিক যে চাহিদাগুলি খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের সঙ্গে শিক্ষা-স্বাস্থ্য, একটু সামাজিক নিরাপত্তা, এগুলির দিক থেকে আমাদের নজরটা পুরোপুরি সরে গিয়েছে। পাশাপাশি, বিদেশি কোম্পানির ওপর দিনদিন নির্ভরতা বাড়ছে, যার ফলে আমাদেরই পুঁজি খাটিয়ে তারা লভ্যাংশ নিজের দেশে নিয়ে যাচ্ছে।

স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও কত শিশু পেটের জ্বালা বুকে চেপে ফুটপাথে ঘুমোতে রায়। বেকারত্বের জ্বালা বুকে নিয়ে কত যুবকের স্বপ্ন ফানুসের মতো শূন্যে বিলীন হয়ে যায়। এরপরও ইসরো মহাকাশে রকেট পাঠায়।

চড়া মূল্যবৃদ্ধির আবহে কাজের বাজার নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। দলিতদের পরিস্থিতি আজও বদলায়নি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আজও দলিতরা অবহেলিত।

চিদানন্দ দাশগুপ্ত মেমোরিয়াল ট্রাস্টের তরফে রবিবার অভিনন্দন ব্যানার্জির হাতে সেরা ডেবিউ ছবির পুরস্কার তুলে দেন হর্ষ নেওটিয়া।শ্রীকান্ত শ্রীনিবাসন সেরা স্ক্রিপ্ট রাইটারের পুরস্কার পান। সুপ্রিয়া দাশগুপ্ত সেরা কস্টিউম ডিজাইনারের পুরস্কার পান রাখি সরকার। প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীকে সম্বর্ধনা দেন অপর্না সেন। সবমিলিয়ে এদিনের অনুষ্ঠান ছিল জমজমাট।

আরও পড়ুন- নন্দীগ্রামে তৃণমূলের ‘চাটাই বৈঠকে’ ব্যাপক সাড়া, চোখে পড়ার মতো উপস্থিতি মহিলাদের

spot_img

Related articles

বাংলা দখলে প্রধানমন্ত্রীর ‘হতাশার আর্তনাদ’! ভিডিও দেখিয়ে তোপ তৃণমূলের

বাংলার মানুষকে দিনের পর দিন বঞ্চিত রেখে বাঙালির কাছেই ভোট ভিক্ষা! বাঙালিকে একের পর এক রাজ্যে হেনস্থা করে...

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...