তিনি নাকি কারও নাম নেননি, শিশু অধিকার কমিশনে “বিভ্রান্তিকর” চিঠি শুভেন্দুর

শুভেন্দুর প্রশ্ন, কেন এমন নোটিশ তাঁকে পাঠানো হল, সেটাই নাকি তিনি বুঝতে পারছেন না। কমিশনকে কমিশনকে দেওয়া জবাবে তাঁর আইনজীবী এমন বিভ্রান্তির কথা জানিয়েছেন বলে খবর

সময় দেওয়া হয়েছিল ৩দিন। তার মধ্যে ক্ষমা না চাইলে নেওয়া হবে কড়া পদক্ষেপ। বিতর্কিত টুইট না মুছলে নেওয়া হবে আইনি ব্যবস্থা। এই মর্মেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে রাজ্য শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন শিশু অধিকার লঙ্ঘনের নোটিশ পাঠিয়েছিল।

কিন্তু শুভেন্দুর প্রশ্ন, কেন এমন নোটিশ তাঁকে পাঠানো হল, সেটাই নাকি তিনি বুঝতে পারছেন না। কমিশনকে কমিশনকে দেওয়া জবাবে তাঁর আইনজীবী এমন বিভ্রান্তির কথা জানিয়েছেন বলে খবর। কমিশনকে দেওয়া চিঠিতে শুভেন্দু লিখেছেন, তাঁকে পাঠানো এই নোটিশের বক্তব্য এতটাই ভিত্তিহীন, যে জবাব কী হবে, তা বুঝেই উঠতেই পারছেন না!

জানা গিয়েছে, ই-মেলে শুভেন্দুর কাছে ওই নোটিশ গিয়েছিল কমিশনের তরফে। শুভেন্দুও তাঁর আইনজীবীর জবাবি চিঠির একটি “স্ক্রিনশট” শেয়ার করেছেন তাঁর টুইটারে। শুভেন্দু সেখানে আরও এক বার জানিয়েছেন, কমিশনের নোটিশের কোন কোন বিষয়গুলি একেবারেই বোঝা যাচ্ছে না। শুভেন্দু লিখেছেন, “গত ১৮ নভেম্বর আমাকে পাঠানো পশ্চিমবঙ্গের শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের নোটিশের জবাব দিয়েছেন আমার আইনজীবী। প্রথমত, যে অভিযোগ আনা হয়ছে, তার পুরোটাই ভিত্তিহীন। দ্বিতীয়ত, কমিশনকে বলতে হবে ‘কয়লা ভাইপো’ বলতে তারা কাকে বুঝেছে। তৃতীয়ত, কমিশন কী করে বুঝল, ‘কয়লা ভাইপো’র পুত্র একজন নাবালক।

শুভেন্দুর যুক্তি খণ্ডন করে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “কাকে বলছে, তা যদি ভাবসম্প্রসারণ করে বোঝাতে হয়, তা হলে ওর কথা বলার কী দরকার! ক্ষমতা থাকলে নাম বলবে আর ক্ষমতা না থাকলে ভুলভাল বকাটা বন্ধ করবে! ও টুইট করে দিক, আমি ভুল বলেছিলাম। ওই হোটেলে কোনও জন্মদিনই হয়নি।”

উল্লেখ্য, গত ১৩ নভেম্বর শুভেন্দু অধিকারীর করা দু’টি টুইট থেকে এই বিতর্কের সূত্রপাত। প্রথম টুইটে আলিপুরের একটি হোটেলের নাম করে শুভেন্দু লিখেছিলেন, “জমজমাট উদযাপন হচ্ছে। ‘কয়লা ভাইপো’র ছেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার আয়োজন করা হয়েছে। ৫০০ পুলিশ, বম্ব স্কোয়াড, গোয়েন্দাকুকুর বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে অনুষ্ঠানস্থলে। আর দরজার ফ্রেমে বসেছে মেটাল ডিটেক্টর। রাখা হয়েছে হাতে ধরা মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবস্থাও।”

দ্বিতীয় টুইটে শুভেন্দুর সংযোজন, “এই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আয়োজন করার জন্য কোনও সরকারি নির্দেশ আসেনি। ‘মমতা পুলিশ’ অফিসার জামালকে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্ছিদ্র করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। লেডি কিমের পরিবার উত্তর কোরিয়ার আসল কিম জং উনের পদক্ষেপ অনুসরণ করে চলছে। বস্তুত কখনও আবার বিলাসিতায় তাঁকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে।”

তবে শুভেন্দু মুখে অভিষেক বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না নিলেও, তিনি আকার-ইঙ্গিতে তাঁদের নামেই যে কুৎসা করছেন, তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। এবং ওইদিন আলিপুরের হোটেলে কোনও শিশুর জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিল না। ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাবের একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন অভিষেক। কিন্তু টুইটে শুভেন্দু কুৎসা ও অপপ্রচার করে সেটা অভিষেকের শিশুপুত্রের জন্মদিনের অনুষ্ঠান বলে চালানোর চেষ্টা করছিলেন। যদিও জনমানসে বিরোধী নেতার মিথ্যাচার ধরা পড়ে গিয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের।

আরও পড়ুন:সরলেন শুভাপ্রসন্ন, রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান আলাপন