Monday, November 10, 2025

অন্ধকার জগতকে পিছনে ফেলে বিশ্বকাপে তারকা রিচার্লিসন, কী ছিল তাঁর অতীত

Date:

শুক্রবারের ম্যাচেই সার্বিয়ার (Serbia) বিরুদ্ধে সাইডভলিতে তাঁর করা বিশ্বমানের গোলে ইতিমধ্যেই মজেছেন ব্রাজিল সহ বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা। তবে রিচার্লিসনের (Richarlison) বিশ্বকাপের মঞ্চে রাতারাতি তারকা হয়ে ওঠার রাস্তা মোটেও খুব সহজ ছিল না। অন্ধকার জগতকে এড়িয়ে কীভাবে ফুটবলকে পাথেয় করে তাঁর এগিয়ে চলা, তা শুনলে রীতিমতো চমকে যেতে হবে। আর সেই গল্প নিয়েই এখন শুরু জোর চর্চা।

১৯৯৭ সালে ব্রাজিলের (Brazil) এস্পিরিটো সান্টোর নোভা ভেনেসিয়ার এক অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রিচার্লিসন। বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। পাঁচ ছেলেমেয়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় রিচার্লিসন। মা সাফাইকর্মীর কাজ করার পাশাপাশি সংসারের খরচ সামলাতে আইসক্রিমও (Ice Cream) বেচতেন। আর এমন এক পরিবারের ছেলের বিপথে যাওয়ার বিষয় খুব একটা কঠিন ছিল না। কিন্তু বাবা–মায়ের সঠিক শিক্ষার জন্য তা হয়ে ওঠেনি। রিচার্লিসনের বাবা ছেলেকে বলেছিলেন, ‌সৎ পথে থেকে কিছু একটা করো। দেখবে ভালো হবেই।‌ আর সেই বেদবাক্য মাথায় নিয়েই জীবনে এগিয়ে চলেন ব্রাজিলিয়ান এই তারকা। আর সেই বিশ্বাসেই বন্ধুদের কুসঙ্গ ও পরামর্শ এড়িয়ে রাস্তার মোড়ে চকোলেট, চিপস আর মায়ের সঙ্গে আইসক্রিম ফেরি করে বেড়াতেন তিনি।

 

রিচার্লিসনের কথায়, ‌বন্ধুরা ড্রা*গস বিক্রির জন্য বারবার বলত, প্রলোভন দেখাত বাঁকা পথে অনেক অর্থ উপার্জনের (Money Income)। কিন্তু আমি ওদের কথায় কান দিইনি কখনই। মনে হয়েছিল, ওটা অন্যায়। তাই চকোলেট, আইসক্রিম বিক্রির পাশাপাশি লোকের গাড়ি ধোয়ামোছার কাজ করেছি। আর ফুটবল খেলা দাঁতে দাঁত চেপে চালিয়ে গিয়েছি। ব্রাজিলিয়ান এই তারকা আরও জানান, যখন আমার ৭ বছর বয়স, বাবা আমার জন্য নিজের ক্ষমতার বাইরে গিয়েও ১০টা বল কিনে এনেছিলেন। আসলে বাবা চাইতেন আমি বড় ফুটবলার হই। রাস্তাতেই ফুটবল খেলতাম বন্ধুদের সঙ্গে।

পাশাপাশি তিনি আরও জানান, বাড়িতে টিভি ছিল না। প্রিমিয়ার লিগের (Premier League) খেলা দেখতাম পাশের এক প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে। খেলার গতি আমাকে সবসময় মুগ্ধ করে রাখত। বাবাকে কথা দিয়েছিলাম, তোমার সব কষ্টের মূল্য আমি দেব। প্রিমিয়ার লিগে খেলবই। এছাড়াও মাদক পাচারকারী বন্ধুদের সঙ্গে মেশার খেসারত তাঁকে কীভাবে দিতে হয়েছিল তাও বলেন এই প্রতিভাবান ফুটবলার। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, এক বার বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সময় ১৪ বছরের রিচার্লিসনকে ধরে ফেলেছিলেন এক মাদক পাচারকারী। তাঁর মাদক চুরি হয়ে গিয়েছিল। ওই পাচারকারী ভেবেছিলেন, রিচার্লিসনই মাদক চুরি করেছেন। কিশোর ফুটবলারের মাথায় সেদিন পিস্তলও ঠেকানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। অতীতের দিনের কথা কথা স্মরণ করে রিচার্লিসন জানান, সেই মুহূর্তে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। একবার যদি পিস্তল চালিয়ে দিত, সব শেষ হয়ে যেত।

সার্বিয়া ম্যাচে ব্রাজিলের দুই গোলের নায়ক রিচার্লিসনের বর্তমান বয়স মাত্র ২৫ বছর। ৯ নম্বর জার্সি গায়ে ব্রাজিলের হয়ে এর আগেও তিনি বিপক্ষকে নাজেহাল করে ছেড়েছেন। চলতি মরসুমে ৭ ম্যাচে তাঁর গোল সংখ্যা ৯।

Related articles

ধর্মীয় বই কিনতে গিয়ে ২ কোটি টাকার প্রতারণার ফাঁদে কলকাতা ইসকন! গ্রেফতার ১ 

ধর্মীয় বই কেনার অর্ডার দিতে গিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার প্রতারণার শিকার হল কলকাতা ইসকন। অভিযোগ, অর্ডার অনুযায়ী...

বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের সৌজন্যে হারানো পুলিশের চাকরি ফিরে পাচ্ছেন বাবা

কয়েকদিন আগেই আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ(ICC World Cup)  জিতেছে ভারতীয়  মহিলা দল। মেয়েদের সাফল্যে গর্বিত মা-বাবারা। তবে বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের...

গ্যাস-সমস্যায় নিঃশ্বাসের পরীক্ষা: যুগান্তকারী আবিষ্কারে বিশ্বে স্বীকৃতি বাঁকুড়ার চিকিৎসকের

একটি সাধারণ সমস্যা, যাতে জর্জরিত বর্তমান যুবসমাজ থেকে শিশুরা পর্যন্ত। গ্যাস বা গ্যাসট্রাইটিসের মতো সমস্যা নির্ধারণ করার জন্য...

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে বাড়তে পারে আসন সংখ্যা, জানালো এসএসসি 

রাজ্যের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ফলাফল ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী,...
Exit mobile version