Tuesday, November 4, 2025

অন্ধকার জগতকে পিছনে ফেলে বিশ্বকাপে তারকা রিচার্লিসন, কী ছিল তাঁর অতীত

Date:

শুক্রবারের ম্যাচেই সার্বিয়ার (Serbia) বিরুদ্ধে সাইডভলিতে তাঁর করা বিশ্বমানের গোলে ইতিমধ্যেই মজেছেন ব্রাজিল সহ বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা। তবে রিচার্লিসনের (Richarlison) বিশ্বকাপের মঞ্চে রাতারাতি তারকা হয়ে ওঠার রাস্তা মোটেও খুব সহজ ছিল না। অন্ধকার জগতকে এড়িয়ে কীভাবে ফুটবলকে পাথেয় করে তাঁর এগিয়ে চলা, তা শুনলে রীতিমতো চমকে যেতে হবে। আর সেই গল্প নিয়েই এখন শুরু জোর চর্চা।

১৯৯৭ সালে ব্রাজিলের (Brazil) এস্পিরিটো সান্টোর নোভা ভেনেসিয়ার এক অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রিচার্লিসন। বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। পাঁচ ছেলেমেয়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় রিচার্লিসন। মা সাফাইকর্মীর কাজ করার পাশাপাশি সংসারের খরচ সামলাতে আইসক্রিমও (Ice Cream) বেচতেন। আর এমন এক পরিবারের ছেলের বিপথে যাওয়ার বিষয় খুব একটা কঠিন ছিল না। কিন্তু বাবা–মায়ের সঠিক শিক্ষার জন্য তা হয়ে ওঠেনি। রিচার্লিসনের বাবা ছেলেকে বলেছিলেন, ‌সৎ পথে থেকে কিছু একটা করো। দেখবে ভালো হবেই।‌ আর সেই বেদবাক্য মাথায় নিয়েই জীবনে এগিয়ে চলেন ব্রাজিলিয়ান এই তারকা। আর সেই বিশ্বাসেই বন্ধুদের কুসঙ্গ ও পরামর্শ এড়িয়ে রাস্তার মোড়ে চকোলেট, চিপস আর মায়ের সঙ্গে আইসক্রিম ফেরি করে বেড়াতেন তিনি।

 

রিচার্লিসনের কথায়, ‌বন্ধুরা ড্রা*গস বিক্রির জন্য বারবার বলত, প্রলোভন দেখাত বাঁকা পথে অনেক অর্থ উপার্জনের (Money Income)। কিন্তু আমি ওদের কথায় কান দিইনি কখনই। মনে হয়েছিল, ওটা অন্যায়। তাই চকোলেট, আইসক্রিম বিক্রির পাশাপাশি লোকের গাড়ি ধোয়ামোছার কাজ করেছি। আর ফুটবল খেলা দাঁতে দাঁত চেপে চালিয়ে গিয়েছি। ব্রাজিলিয়ান এই তারকা আরও জানান, যখন আমার ৭ বছর বয়স, বাবা আমার জন্য নিজের ক্ষমতার বাইরে গিয়েও ১০টা বল কিনে এনেছিলেন। আসলে বাবা চাইতেন আমি বড় ফুটবলার হই। রাস্তাতেই ফুটবল খেলতাম বন্ধুদের সঙ্গে।

পাশাপাশি তিনি আরও জানান, বাড়িতে টিভি ছিল না। প্রিমিয়ার লিগের (Premier League) খেলা দেখতাম পাশের এক প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে। খেলার গতি আমাকে সবসময় মুগ্ধ করে রাখত। বাবাকে কথা দিয়েছিলাম, তোমার সব কষ্টের মূল্য আমি দেব। প্রিমিয়ার লিগে খেলবই। এছাড়াও মাদক পাচারকারী বন্ধুদের সঙ্গে মেশার খেসারত তাঁকে কীভাবে দিতে হয়েছিল তাও বলেন এই প্রতিভাবান ফুটবলার। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, এক বার বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সময় ১৪ বছরের রিচার্লিসনকে ধরে ফেলেছিলেন এক মাদক পাচারকারী। তাঁর মাদক চুরি হয়ে গিয়েছিল। ওই পাচারকারী ভেবেছিলেন, রিচার্লিসনই মাদক চুরি করেছেন। কিশোর ফুটবলারের মাথায় সেদিন পিস্তলও ঠেকানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। অতীতের দিনের কথা কথা স্মরণ করে রিচার্লিসন জানান, সেই মুহূর্তে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। একবার যদি পিস্তল চালিয়ে দিত, সব শেষ হয়ে যেত।

সার্বিয়া ম্যাচে ব্রাজিলের দুই গোলের নায়ক রিচার্লিসনের বর্তমান বয়স মাত্র ২৫ বছর। ৯ নম্বর জার্সি গায়ে ব্রাজিলের হয়ে এর আগেও তিনি বিপক্ষকে নাজেহাল করে ছেড়েছেন। চলতি মরসুমে ৭ ম্যাচে তাঁর গোল সংখ্যা ৯।

Related articles

ফের SIR আতঙ্কে বাংলায় আত্মহত্যার অভিযোগ! উলুবেড়িয়ায় মৃত্যু ৩০বছরের যুবকের

SIR, আর তার পথ ধরে NRC- কেন্দ্রের এই নীতির আতঙ্কে একের পর এক প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে বাংলায়। এবার...

পাখির চোখ মহিলা ভোটব্যাঙ্ক: ক্ষমতায় এলে ৩০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি তেজস্বীর

পথিকৃত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বিভিন্ন ভাবে দিচ্ছে দেশের অন্যান্য কয়েকটি রাজ্যের...

প্রয়াণ দিবসে সুব্রতকে স্মরণ, দীর্ঘদিনের সৈনিককে শ্রদ্ধার্ঘ্য অভিষেকের

দক্ষ প্রশাসক, বর্ষীয়ান নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের( Subrata Mukharjee) আজ প্রয়াণ দিবস। তাঁর প্রয়াণ দিবসে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও...

শতবর্ষে ঋত্বিক, কিংবদন্তি পরিচালককে শ্রদ্ধার্ঘ্য অভিষেকের

শতবর্ষে বিশিষ্ট চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক(Ritwik Ghatak)। কিংবদন্তি পরিচালকের জন্মশতবর্ষে নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে তাঁকে শ্রদ্ধা জানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের...
Exit mobile version