সোমনাথ বিশ্বাস, কাঁথি

তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাকে কেন্দ্র করে কাঁথিতে জনজোয়ার। প্রভাতকুমার কলেজ মাঠ কাঁথি শহরের সবথেকে বড় মাঠ। শনিবারের সেই জনসভাকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনা চোখে পড়ার মতো। তবে এদিনের জনসভা থেকে শুধু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই নন, দলের একাধিক নেতা, মন্ত্রীদের বক্তব্যে উঠে এল ‘গদ্দার’ শুভেন্দু ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে উৎখাতের প্রসঙ্গ।

একনজরে দেখে নিন কাঁথির জনসভায় এদিন আর যারা বক্তব্য রাখলেন

বিপ্লব রায়চৌধুরী (মন্ত্রী)

আমরা উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চাই। অন্য কোনও ক্ষেত্রে হানাহানি নয়। জঙ্গলমহলে মানুষের দুর্দশা দেখে কেঁদে ফেলেছিলেন। আমি যদি কোনওদিন সুযোগ পাই, এদের চোখের জল মুছিয়ে দেবো। তিনি কথা রেখেছেন। ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষকে খাবার জন্য ২টাকা কেজি চাল দিয়েছেন। তারপর একের পর এক প্রকল্প। যিনি সর্বদা গরিবের কথা ভাবেন। তাঁকে দমানো যাবে না। নেত্রীর পথেই হাঁটছেন আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

অখিল গিরি (মন্ত্রী)

কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে যে বঞ্চনা বঞ্চিত করছে তার বিরোধিতা করে এই সভা। মূল্যবৃদ্ধির পরিবাদে এই সভা।
পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, বিজেপির লোকেরা ততই অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে। ডায়মন্ড হারবারে লোক হবে না বুঝে নিজের মঞ্চ নিজের ভেঙেছে। পঞ্চায়েতে প্রার্থী দিতে পারবে না বুঝে প্ররোচনা দিচ্ছে। কেউ ওদের ফাঁদে কেউ পা দেবেন না। তবে আমরাও চুপ করে বসে থাকবো না, আর একটা কর্মীর গায়ে হাত দিলে আমরাও জবাব দিতে তৈরি।

কুণাল ঘোষ (রাজ্য সাধারণ সম্পাদক)

৮০ শতাংশ পদ মন্ত্রী নিয়ে বেইমানি করেছো, তাই তুমিও ৮০ শতাংশ গালাগাল খাবে। ইডি সিবিআই থেকেই বাঁচতে বিজেপির জুতো পালিশ করতে গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের কলঙ্ক শুভেন্দু অধিকারী। একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়ন অন্যদিকে কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতি। তাই উন্নয়নকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিটি বুথে জোড়াফুল প্রার্থীদের ভোট দিন।

বিজেপির দুই ভাই, সিপিএম আর কংগ্রেস(আই)। যে যত জোট করুক প্রতিটি বুথে ৫১-১০০% ভোট নিশ্চিত করুন। কোনও জোর জুলুম নয়, মানুষকে বুঝিয়ে ভোট করতে হবে। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রকল্প। মানুষের ভোটে জিততে পারেনি। তাই সিবিআই, ইডি দিয়ে প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলার পরিকল্পনা ছিল। সবাই জানে কাঁথির সভায় সড়ক পথে আসবেন অভিষেক। গত কয়েকদিন দিন ধরে বোমা মজুত করা হয়েছিল। পুলিশ প্রশাসনকে আমরা বলছি, অবিলম্বে এর তদন্ত করতে হবে।

সৌমেন মহাপাত্র (তমলুক সাংগঠনিক সভাপতি)

সন্ত্রাস করে জনগণের আশীর্বাদ পাওয়া যায়না। আসুন উন্নয়নের লড়াই হোক। উন্নয়নের জন্য বিরোধীদের সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করার আবেদন। বাংলা আজ বঞ্চিত। অনেক টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। লড়াই, হিংসা বন্ধ করুণ। সবাই এগিয়ে এসে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করুন।

উত্তম বারিক (জেলা সভাধিপতি)
দুর্নীতি নয়, সততা। এটাই শিখিয়েছেন আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৪ সাল থেকে কেন্দ্রের সরকার সবকা সাথ সবকা বিকাশ বলে ঠকাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীকে প্রাক্তন করার স্বপ্ন সাত জন্মেও পূরণ হবে না।
সুপ্রকাশ গিরি (যুব সভাপতি)
মেদিনীপুরের মাটি সংগ্রামের, লড়াইয়ের, গর্বের মাটি। কাঁথির মাটি প্রমাণ করল আয় গদ্দার দেখে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতা। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে শপথ নিতে হবে এই মাটি কোনওদিন মাথা নিচু করেনি, শিরদাঁড়া বিক্রি করেনি। শুভেন্দু অধিকারী পালিয়ে গেছে। তৃণমূলের সম্পদ আমাদের কর্মীরা। আমাদের শপথ নিতে হবে প্রতিটি পঞ্চায়েতকে উন্নততর পঞ্চায়েত গঠন করতে হবে। বিজেপি হিংসা, প্ররোচনায় পা দেবেন না। ডিসেম্বরে শুভেন্দু আগে নিজের পরিবার সামলাও, তারপর তৃণমূল নিয়ে কথা বলবে। থুতু উপরে ছুঁড়লে নিজের গায়ে পড়ে, সেটা শুভেন্দু জানে না।
জ্যোতির্ময় কর (এইচডিএ চেয়ারম্যান)
কাঁথিতে মানুষের মাথা। আর ওদিকে হনুমানের লেজ। শহিদ ক্ষুদিরামের জন্মদিনে যখন শ্রদ্ধা বার্তা দিতে মেদিনীপুরে আসছেন, ঠিক তখনই মেদিনীপুর ছেড়ে পালালেন শুভেন্দু। এই নাকি ওর দেশপ্রেম। যে বাংলার উন্নয়ন নয়, বিরোধিতা করছে। দিল্লিতে গিয়ে বাংলার নামে কুৎসা করছে, বাংলার বরাদ্দ করতে বলছে। আপনি তো হেরে হেরে হারাধন হয়েছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দয়ায় জিতে বাছাধন হয়েছে। আপনার মতো চুলকানো ওলকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাঘা তেঁতুল। এতবড় সর্বনাশা বিরোধী দলনেতা আগে কখনও আসেনি।
তরুণ জানা (কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক)
কাথির মানুষ গদ্দার, বিজেপির সঙ্গে নেই। কাথির মানুষ মমতা, অভিষেকের সঙ্গেই রয়েছেন। বিধানসভায় বিরোধিতা করতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গবাসীর বিরোধী হয়ে গেছেন। সবকিছুতেই রাজ্য সরকারের বিরোধিতা করছেন। চিঠি লিখে কেন্দ্রের পায়ে ধরে টাকা বন্ধ করে দিতে বলছে। পঞ্চায়েতের প্রতিটি বুথে দিকে দিকে জেতাতে হবে তৃণমূলকে, এটাই আমাদের অঙ্গীকার। যতই ভগবানপুর, খেজুরিতে সন্ত্রাস করুক না কেন? আমাদের উন্নয়ন সবকিছুর মোক্ষম জবাব দেবে।