Tuesday, November 4, 2025

শিল্পতালুক হলদিয়ার দুই গ্রামে এখনও পৌঁছায়নি বিদ্যুৎ, অভিযোগ পেয়ে ছুটে গেলেন কুণাল

Date:

Share post:

সোমনাথ বিশ্বাস, হলদিয়া

দলের তরফে পূর্ব মেদিনীপুরে বিশেষ দায়িত্ব পাওয়ার পর কলকাতা থেকে জেলায় কার্যত “ডেইলি প্যাসেঞ্জার” হয়েছেন তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। জেলার শিল্পনগর হলদিয়া টাউনশিপের ওপর একটি ঘরও নিয়েছেন তিনি। গতকাল কাঁথিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা শেষে হলদিয়াতে সেই ঘরেই রাত কাটান কুণাল। এরপর সকাল হতেই বেরিয়ে পড়েন প্রাতঃভ্রমণে।


আরও পড়ুন:ভূপতিনগরের বিস্ফোরণ বিজেপির পূর্ব পরিকল্পিত, তোপ কুণালের

রবিবার ছুটির দিন সকালে হলদিয়া টাউনশিপের উপর মাখনবাবুর বাজারে একটি দোকানে চা খেতে ঢোকেন কুণাল। তখনই কিছু স্থানীয় কিছু যুবকের সঙ্গে তাঁর আলাপচারিতা হয়। চায়ের আড্ডাতেই তাঁরা কুণালকে দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অভিযোগ করেন। পুরসভা এলাকার অনুন্নয়নের ছবি তুলে ধরেন।

স্থানীয় ওই যুবকদের অভিযোগ, হলদিয়া শিল্পতালুক হলেও পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ এখনও বিদ্যুতের আলো দেখেননি। স্বাধীনতার এতো বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও বন্দর থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে কোথাও মাটির কাঁচা রাস্তা, কোথাও আবার আবার অবহেলায় পড়ে রয়েছে অর্ধনির্মিত কংক্রিটের রাস্তা। ভোট আসলেই রাজনৈতিক নেতাদের শুধু প্রতিশ্রুতির বন্যা। এমন অনুন্নয়ন বঞ্চনা এবং অবহেলার জন্য স্থানীয় মানুষজন সরাসরি শুভেন্দু অধিকারীকে দায়ী করেছেন। একইসঙ্গে পুরসভার এই ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের অনুন্নয়নের জন্য প্রাক্তন চেয়ারম্যান শ্যামল আদকের দিকেও আঙুল তুলেছেন তাঁরা।

এমন অভিযোগ পাওয়ার পরই নিজের ব্যস্ত কর্মসূচির মধ্যেই ওই যুবকদের সঙ্গে হলদিয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত বিষ্ণুরামচক এবং সৌতনপুর গ্রামে যান কুণাল। এই গ্রামের প্রান্তেই হলদিয়া বন্দর। সাতসকালে কুণালকে হাতের কাছে পেয়ে গ্রামবাসীরা বলতে থাকেন, “দাদা এবার কিছু একটু করুন, আমরা খুব কষ্টে আছি। শুধু ভোটের সময় নেতারা আসে, প্রতিশ্রুতি দেয়। আর ভোট চলে গেলে কেউ ফিরেও তাকায় না।”

কুণাল গ্রামের ভিতর হাঁটতে হাঁটতে সেই দুর্দশার ছবি দেখেন। এবং গ্রামবাসীদের মধ্যে দাঁড়িয়েই বিদ্যুতের জন্য সংশ্লিষ্ট শীর্ষ বিভাগের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। বিষয়টি অবিলম্বে দেখার অনুরোধ জানান। এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য বলেন।

শুভেন্দু অধিকারীর জন্য গোটা পূর্ব মেদিনীপুর এবং এই হলদিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল যে ঘুঘুরবাসা হয়েছিল, তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। ফেসবুক পোস্টে কুণাল লেখেন, “ভাবা যায়? দুটি গ্রাম। স্বাধীনতার পর থেকে এখনও যাদের বিদ্যুৎ আসেনি। হলদিয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিষ্ণুরামচক এবং সৌতনপুর। দীর্ঘ বামজমানা এবং পরবর্তীকালে অধিকারীরাজ, বারবার আবেদন নিষ্ফলা।

কাল সন্ধেয় কাঁথি থেকে হলদিয়া চলে এসেছি। সকালে মাখনবাবুর বাজার মোড়ে বসে চা খাচ্ছিলাম। নাগরিকদের সঙ্গে কথোপকথন। সেই সময়ই অভিযোগ, দুই গ্রামে বিদ্যুত নেই। রাস্তাও খারাপ। শুভেন্দু এবং শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে গুচ্ছ অভিযোগ। অতঃপর তাঁদের অনুরোধে তাঁদের গ্রামে গেলাম। বন্দরের জমি সংক্রান্ত কিছু জটিলতা আছে শুনলাম, কিন্তু তাতেও অন্যত্র বিদ্যুত আছে। সবুজ গ্রাম, একাধিক পুকুর, শান্ত সুন্দর লাগল। সকলের অনুরোধ, যুগে যুগে সবাই শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এবার তৃণমূল বিদ্যুত আনতে সক্রিয় হোক। দেখলাম। শুনলাম। দেখা যাক কী করা যায়।”

spot_img

Related articles

খুব তাড়াতাড়ি আসবেন কলকাতায়, মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তার উত্তরে জানান শাহরুখ

রবিবার শাহরুখ খানের ৬০তম জন্মদিন ছিল। এদিন শাহরুখকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই শুভেচ্ছার এবার উত্তর...

দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের নামও বাদ! এসআইআরকে ঘিরে ক্ষোভপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর 

এসআইআর প্রক্রিয়াকে হাতিয়ার করে ভোটার তালিকা থেকে বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে— এমন অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী...

Push-up-এ বাজিমাৎ! মঞ্চে সবাইকে হারালেন অভিষেক

তাঁর জিমি ওয়াক আউট করার ছবি আগেই পোস্ট করেছেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abishek Banerjee)।...

এসআইআর মঞ্চে ‘শহিদ বরণ’: সাত শহিদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন মমতা-অভিষেকের

বাংলা বিরোধী বিজেপির চক্রান্তে ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ার আশঙ্কা বাংলার লক্ষ লক্ষ মানুষের। সেই আতঙ্কে এখনও পর্যন্ত...