ভূপতিনগরে তদন্তে বম্ব স্কোয়াড! অশান্তির চেষ্টা করায় আটক বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী

রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। বিরোধীরা রাজনীতি করতে, জোর করে কিছু একটা ধামাকা তৈরি করতে এনআইএ তদন্তের দাবি জানাচ্ছে। বিজেপি ইচ্ছে করেই প্রশাসনের উপর অনাস্থা প্রকাশ করে, কিন্তু তাতে কিছু আসে যায় না।

প্রায় ৬০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও পৌঁছয়নি ফরেনসিক টিম (Forensic Team)। নির্দিষ্ট সময়ের থেকে অনেকটা পরেই সোমবার ঘটনাস্থলে পৌঁছেয় বম্ব ডিটেকশন অ্যান্ড ডিসপোজাল স্কোয়াড (Bomb Detection and Disposal Squad)। পুলিশ কুকুর নিয়ে চলছে তল্লাশি। ব্যবহার করা হচ্ছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। এদিকে কোথাও কোনও বিস্ফোরক লুকিয়ে রাখা হয়েছে কী না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বোমা নাকি বাজি? কী কারণে ভূপতিনগরে বিস্ফোরণ (Bhupatinagar Blasts), তা এখনও স্পষ্ট নয়। এদিকে সোমবার বিজেপি-তৃণমূল সংঘাতকে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তপ্ত পরিস্থিতি ভূপতিনগরে। পুলিশ সূত্রে খবর, এদিন এলাকারই একটি তৃণমূল কার্যালয়ে কয়েকজন বিজেপি কর্মী হামলা চালায়। পরে পুলিশ (Police) ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে চেষ্টা করলে বিজেপির কর্মী সমর্থকরা অশান্তির সৃষ্টি করে। বাধা দিতে গেলে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে হাতাহাতি বেঁধে যায়। ঘটনায় কয়েকজন বিজেপি সমর্থককে গ্রেফতার (Arrest) করে পুলিশ। পাশাপাশি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে তৃণমূলের ওই পার্টি অফিসটিকে (TMC Party Office) কিছুদিনের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর স্থানীয়রা বিজেপি কর্মীদের গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেয়।

সোমবার রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার (Sashi Panja) অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। বিরোধীরা রাজনীতি করতে, জোর করে কিছু একটা ধামাকা তৈরি করতে এনআইএ তদন্তের (NIA Investigation) দাবি জানাচ্ছে। বিজেপি ইচ্ছে করেই প্রশাসনের উপর অনাস্থা প্রকাশ করে, কিন্তু তাতে কিছু আসে যায় না। কিন্তু সারাক্ষণ কেন্দ্রীয় সরকার বা সংস্থার অধীনস্থ সংস্থার আধিকারিকরা  আসবেন। কিন্তু অদ্ভুতভাবে এই সংস্থাগুলো বিজেপি শাসিত রাজ্যে পৌঁছয় না।

অন্যদিকে সোমবার বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, মিহির ভৌমিকের মতো সিনিয়র নেতাকে রাস্তায় ফেলে মারা হয়েছে। গুলি চলেছে। তিনি কপাল জোরে বেঁচেছেন। তখন বিজেপির এসব বড়বড় কথা কোথায় ছিল? আমরা কোনও অবস্থাতেই অশান্তি চাই না। পুলিশও কোনও সংঘাত বা জোর করে কোনও দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা কোনওটাই পুলিশ করেনি। পুলিশ বারবার চেষ্টা করেছে শান্তি রেখে সমস্ত বিষয়টা সামাল দিতে। যারা বোমা, গুলি চলাল তাদের যখন পুলিশ ধরতে যাচ্ছে তখনই বিজেপির লোকেরা বাধা দিচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করছে না একথা বলাটা ভুল।

কুণালের অভিযোগ, মিহির ভৌমিককে যারা খুনের চেষ্টা করেছে, তাদের যখন পুলিশ গ্রেফতার করতে যাচ্ছে বা মজুত বোমা উদ্ধার করতে যাচ্ছে তখন পুলিশকে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আর পুলিশ সেখানে বলপ্রয়োগ না করে একটু সময় নিয়েছে। এতে গাফিলতি বা তদন্ত হচ্ছে না এসব দেখতে পাচ্ছি না। পুলিশ কোনও প্ররোচনায় পা দেয়নি। কুণাল বলেন, আমরাও ঘটনাস্থলে যেকোনো সময় যেতে পারতাম কিন্তু আমরা যাওয়ার থেকেও পুলিশ প্রশাসন পুরো বিষয়টা কড়া হাতে সামলাচ্ছেন সেটাই বড় বিষয়। আমরা কী বললাম সেটা বড় কথা নয়। জেলা নেতৃত্ব বিষয়টির উপর সবসময় নজর রাখছেন। স্থানীয়রা এসব চাইছেন না। আমরা পুলিশকে নির্দিষ্ট কিছুজনের নাম দিয়ে বলেছি এদের ধরা হোক।

ভূপতিনগর বিস্ফোরণকাণ্ড ক্রমশই চাঞ্চল্যকর মোড় নিচ্ছে। পুলিশ সূত্রে দাবি, নিহতের স্ত্রী দাবি করেন, তাঁদের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে বাজি বানানো হত। তাঁর স্বামী রাজকুমার ছাড়াও লালু মান্না এবং বিশ্বজিৎ গায়েনও সেখানে বাজি বানাতেন। লতারানির অভিযোগ, এই নিয়ে বারবার আপত্তি জানানো সত্বেও, স্বামী ও কর্মচারীরা কর্ণপাত করেননি! শুক্রবার রাতে, বাজি তৈরির সময় কেউ ধূমপান করছিলেন। তারই ফুলকি গিয়ে পড়ে বারুদে। তা থেকেই এত বড় বিস্ফোরণ।

 

 

Previous articleআরজিকর হাসপাতালের শৌচাগার থেকে উদ্ধার রোগীর নিথর দেহ! তদন্তে পুলিশ
Next articleবিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বার্তা মোবাইলে, প্রতারণার ফাঁদ এবার মেখলিগঞ্জে !