অমিতাভ শোনালেন ভারতীয় ফিল্মের ইতিহাস, সোশ্যাল মিডিয়াকে বার্তা বাদশার: আপ্লুত সৌরভ

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় যেভাবে চলচ্চিত্র উৎসব প্রত্যেক বছর নিত্যনতুন ভাবনায় সমৃদ্ধ হচ্ছে একযোগে তার প্রশংসা করেন উপস্থিত সব শিল্পীরাই। আগামী ১৬ তারিখ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত শহরের বুকে শুধুই সিনেমার আনন্দ।

সিনেমার বিশ্বে (World of Cinema) মিলছে বিশ্বের সিনেমা(World Cinema) । ২৮ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের (28th Kolkata International Film Festival)এটাই বিশেষত্ব। উৎসবের বোধনের মঞ্চে তারকার মেলা। যেন সিনে জগতের গ্যালাক্সি আজ মহানগরীর বুকে। তিন বছর পর কলকাতায় এসে ‘বাংলার জামাই’ দেদার খুশি ,চোখে মুখে ধরা পড়লো আনন্দের ঝিলিক। নির্ধারিত সময়ে তিনি নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে (Netaji Indoor Stadium) উপস্থিত হন বলিউড শাহেনশা অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan)। বিগ স্ক্রিনে বিগ বি, কানায় কানায় পূর্ণ স্টেডিয়ামে তখন ‘ইয়ারানা’র সেই স্মৃতি। সকলের সঙ্গে প্রীতি বিনিময় করার পর বলিউড শাহেনশাহ বলেন, “আমি আপনাদের জামাইবাবু। জীবনভর আপনাদের জামাই থাকব।”

এই বছরের চলচ্চিত্র উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ অমিতাভ বচ্চন অভিনীত সিনেমা এবং প্রদর্শনী। এই সম্মান নিঃসন্দেহে অনবদ্য এমনটাই মন্তব্য করেন অমিতাভ বচ্চন। তাঁর বক্তৃতায় ফুটে ওঠে বাংলা তথা ভারতীয় সিনেমার দীর্ঘ ইতিহাস (History of Indian Cinema)। সিনেমা কীভাবে যুগে যুগে সময়ের দলিল হয়ে থেকেছে, সে ব্যাপারেও বিস্তারিত ভাষণ দেন তিনি। ৮০তম জন্মবর্ষে তাঁকে শুভেচ্ছা জানানো হয় উৎসব-মঞ্চে। এবার যে মানুষের কথা বলার পালা তাঁর অপেক্ষায় অধীর হয়ে তাকিয়ে ছিলেন গঙ্গার পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিটি মানুষ। তাঁরা খবর পেয়েছিলেন এই স্টেডিয়ামে আসছেন বলিউড বাদশা। ভিতরে গিয়ে দেখার সুযোগ হয়তো মিলবে না, তাই আমজনতা রাস্তার ধারে ভিড় জমিয়ে ছিলেন একবার শাহরুখ খানের (Shahrukh Khan)গাড়ি দেখার জন্য। নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামের পিছনের দিকের গেট দিয়েছিল ভিআইপি এন্ট্রি। রানি মুখোপাধ্যায়কে (Rani Mukherjee) সঙ্গে নিয়ে নির্ধারিত সময়ের একটু পরেই পৌঁছলেন শাহরুখ খান (Shahrukh Khan)। তাঁকে বাইরে এসেই অভিবাদন জানান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সঙ্গে ছিলেন বাংলা ছবির সুপারস্টার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee) সহ অন্যান্যরা। সিকিউরিটির ঘেরাটোপ টপকে প্রত্যেকেই তখন চাইছেন একবার শাহরুখকে দেখতে। ‘ পাঠান ‘ গাড়ি থেকে নেমেই মাথা নিচু করে দিদির পা ছুঁলেন। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে(KIFF) প্রতিবারের মতো এবারও দর্শকদের মন জয় করে নিলেন বাংলার ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ শাহরুখ খান। ততক্ষণে করতালিতে ফেটে পড়তে শুরু করেছে প্রেক্ষাগৃহ। কিং খান বক্তব্য শুরু করেন বাংলায়। রসিকতা করে বলেন, “রানিকে বুঝিয়ে বাংলায় স্ক্রিপ্ট লিখিয়েছি। যদি ভালো পড়ি আমার প্রশংসা করবেন। খারাপ হলে ওকে ধরবেন।” এই দিন চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে তিনি বিশেষ বার্তা দেন সোশ্যাল মিডিয়ার উদ্দেশ্যে। বলিউডের ‘বাজিগর’ জানান সোশ্যাল মিডিয়া কখনও কখনও ক্ষুদ্র মানসিকতায় পরিচালিত হয়। এটি মানুষকে আটকে রাখে অনৈতিকতার মধ্যে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমিক মানসিকতা বিভেদের এবং ধ্বংসের মানসিকতাকে দূরে সরিয়ে এক আশার আলো দেখার আহ্বান জানান তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে এবং যথাযথ দায়িত্ব নিয়ে উপস্থিত সকলের সঙ্গে প্রীতি বিনিময় করে , চেনা শাহরুখ যেন আবার চিনিয়ে দিলেন নিজেকে এই কলকাতার বুকে। বলি বাদশা তাঁর বক্তব্যে চলচ্চিত্র উৎসবের সাফল্য কামনার পাশাপাশি কলকাতার মানুষের ভালোবাসার কথাও বলেন । তাঁর কণ্ঠ হয়ে ওঠার জন্য ধন্যবাদ জানান কুমার শানু এবং অরিজিৎ সিংকে।

এই বছরে অনুষ্ঠান মঞ্চে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Saurav Ganguly)। মহারাজ সবসময়ই কলকাতার গর্বের বাংলার অহংকারের আর ভারতের গৌরবের এক মানুষ। তিনি বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছর খুব খারাপ সময় কেটেছে ৷ তবে এই বছর আবারও স্বমহিমায় কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান সৌরভ। ক্রীড়া জগতের মানুষ হয়েও চলচ্চিত্র উৎসবে আমন্ত্রিত হওয়ায় নিজেকে ধন্য বলে মনে করেন সৌরভ। পাশাপাশি অমিতাভ বচ্চনকে ৮০তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান সৌরভ। সাফল্য কামনা করেন শাহরুখ খানের আগামী ছবির। পরিশেষে, ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের (Dona Ganguly) উদ্বোধনী নৃত্যানুষ্ঠান চলচ্চিত্র উৎসবের বোধনকে যথাযথ করে তোলে তা বলাই বাহুল্য। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় যেভাবে চলচ্চিত্র উৎসব প্রত্যেক বছর নিত্যনতুন ভাবনায় সমৃদ্ধ হচ্ছে একযোগে তার প্রশংসা করেন উপস্থিত সব শিল্পীরাই। আগামী ১৬ তারিখ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত শহরের বুকে শুধুই সিনেমার আনন্দ।

 

Previous articleওড়িশা এফসির সঙ্গে গোলশূন‍্য ড্র বাগানের
Next articleবাংলার জয়ের জন‍্য দরকার ১০১ রান