তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Benarjee) সভাকে টক্কর দিতে গিয়ে কাঁথিতে এমনিতেই মুখ পুড়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Shubhendu Adhikari)। এই পরিস্থিতিতে আবার স্থানীয় আদি বিজেপি (BJP) নেতাদের রোষের মুখে পড়েছেন দলের বিধায়ক। বিতর্ক তাঁর পোস্টার ঘিরে। বুধবারের শুভেন্দুর সভার নিয়ে যে পোস্টার পড়েছিল, তাতে নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) থেকে স্থানীয় নেতা- সবার ছবি আছে, শুধু ছবি নেই প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh)। আর এই নিয়েই বেজায় ক্ষুব্ধ মেদিনীপুরের আদি বিজেপি নেতা-কর্মীরা। দিলীপের অপমানে বেজায় চটেছে RSS-ও।

‘মর্নিং ওয়াক’ থেকে ‘তারিখ পে তারিখ’- দিলীপ-শুভেন্দুর বাগযুদ্ধ এখন আর গেরুয়া শিবিরের অন্দরের কথা নয়, রীতিমতো প্রকাশ্যেই সেয়ানে-সেয়ানে টক্কর চলছে। এর মধ্যেই ২১ ডিসেম্বর কাঁথিতে সভা করেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে সে সভায় একেবারেই লোক টানতে পারেননি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। চূড়ান্ত ফ্লপ-শো। আর সেই সভার যে পোস্টার তাতে নেই পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের ছবি। আর এই নিয়েই চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ আদি বিজেপি নেতৃত্ব থেকে শুরু করে আরএসএস শিবির। তাদের অভিযোগ, শুভেন্দুর সভায় লোক হয়নি। মান রাখতে বাইরে থেকে দলবদলুদের নিয়ে গিয়ে জমায়েতের চেষ্টা করেছেন বিজেপি বিধায়ক। অথচ যে দিলীপ ঘোষের নামে তাদের সভা ভরে যায়, তার একটা ছবি পর্যন্ত নেই পোস্টারে। নরেন্দ্র মোদি, জে পি নাড্ডা (JP Nadda)-সবার ছবি রয়েছে। রয়েছে বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ছবিও। যদিও কিছুদিন আগে পর্যন্ত সুকান্ত-শুভেন্দু লুকোচুরি চলেছে বিধানসভার অলিন্দ্য থেকে শুরু করে জনসভা পর্যন্ত। কিন্তু সেই সুকান্তর ছবিও নিজের পোস্টারে সেঁটেছেন বিরোধী দলনেতা। তবে, দিলীপে সঙ্গে শুভেন্দু গরমাগরম নতুন নয়। দিলীপের ‘মর্নিং ওয়াক’ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। পাল্টা জবাব দিয়েছেন দিলীপ। শুভেন্দুর তারিখ নিদান প্রবল আক্রমণ করেছিলেন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। শেষ পর্যন্ত সুর নরম করতে বাধ্য হন শুভেন্দু অধিকারী। সংবাদ মাধ্যমে জানান, দিলীপ ঘোষ তাঁর নেতা। তবে আরএসএস ঘরানার দিলীপের তাতে সুর নরম হয়নি। শুভেন্দুর কার্যকলাপ যে আদি বিজেপি এবং আরএসএস মেনে নিতে পারছে না তার প্রমাণ মিলিছে ছত্রেছত্রে। আরএসএস-এর সাংগঠনিক বৈঠকে ডাক পাননি বিরোধী দলনেতা। এই পরিস্থিতিতে দিলীপকে এইভাবে ব্রাত্য করে দেওয়াটা মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না মেদিনীপুরের আদি বিজেপি নেতাকর্মীরা। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে মেদিনীপুরের গেরুয়া শিবিরের একাংশ।

