কোভিডের দাপটে বেসামাল চিন! নতুন বছরেই বহু প্রানহানির আশঙ্কা  

অন্যদিকে, রয়টার্স সূত্রে খবর, বেজিংয়ের বহু বাসিন্দা তাঁদের আত্মীয়ের দেহ সৎকারের জন্য শ্মশানগুলিতে ভিড় জমাচ্ছেন। সেখানেও তাঁদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

কোভিডের বাড়বাড়ন্তে ফের হাহাকারের ছবি বিশ্বজুড়ে। সময় যত গড়াচ্ছে ততই লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। কোভিডের সেকেন্ড ওয়েভে (Second Wave) বেসামাল হয়ে পড়েছিল বিশ্ব। যেখানেই নজর গিয়েছে সেখানেই দেখা গিয়েছে কোভিডের ভয়ঙ্কর ছবি। তবে বর্তমানে চিনে (China) কোভিডের বাড়বাড়ন্তের পিছনে রয়েছে নতুন ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭ (BF.7 Variant)। এর আগে গত অক্টোবরে কোভিডের নতুন রূপে বেসামাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল আমেরিকা ও ইউরোপে। তবে সেই নতুন ভ্যারিয়েন্টের দাপটেই কার্যত মহামারীর চেহারা নিয়েছে চিন। যার জেরে সংক্রমণের মাত্রা এক লাফে কয়েকগুণ বেড়েছে বলে খবর।

তবে চিনের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, নতুন বছরে আসতে পারে বড়সড় দুঃসংবাদ। বিএফ.৭ ভ্যারিয়েন্টের কারণে প্রাণ যেতে পারে ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষের। তবে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, চিনে সংক্রমণের মাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে বেড়েছে হাসপাতালগুলিতে রোগী ভর্তির সংখ্যাও। পাশাপাশি আইসিইউগুলিতে (ICU) ভিড় উপচে পড়েছে রোগীদের (Patient)। এমনও ভয়ঙ্কর ছবি সামনে এসেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি বেডেই ঠাসাঠাসি করে শুয়ে রয়েছেন রোগীরা। অনেক রোগীর জায়গা হয়েছে হাসপাতালের মেঝেতেও। যদিও চিনের তরফে বিষয়টিকে অস্বীকার করার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) অধির্কতা (Emergency) মাইক রায়ান বুধবার বলেন, আইসিইউতে ভর্তির সংখ্যা খুবই কম বলে দাবি করছে চিন। কিন্তু বাস্তবে হাসপাতালের আইসিইউগুলি ভরে গিয়েছে কোভিড রোগীতে। এটা বলছি না যে, চিন ইচ্ছাকৃত ভাবে আমাদের এই তথ্য দিচ্ছে না। তারা হয়তো বিষয়টিকে আয়ত্তে আনতে পারছে না। আর সেকারণেই তারা সংবাদমাধ্যমকে ভুল তথ্য দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত কয়েকমাসে ভারতে মোট ৪ জন ওমিক্রনের (Omicron) নয়া ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে দু’জন গুজরাট এবং দু’জন ওড়িশার বাসিন্দা। শুধু তাই নয়, শোনা যাচ্ছে দিল্লিতে আরও বেশ কয়েকজন এই নয়া ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। অন্যদিকে, রয়টার্স সূত্রে খবর, বেজিংয়ের বহু বাসিন্দা তাঁদের আত্মীয়ের দেহ সৎকারের জন্য শ্মশানগুলিতে ভিড় জমাচ্ছেন। সেখানেও তাঁদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে। উল্লেখ্য, কোভিডবিধি তুলে নেওয়ার পর থেকেই চিনে সংক্রমণের মাত্রা লাফিয়ে বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মৃত্যুর হারও। জানা গিয়েছে, বেজিং, চংকিং এবং গুয়াংঝৌয়ের শ্মশানগুলিতে স্বাভাবিকের তুলনায় ভিড় অনেক বেশি। তবে শ্মশানগুলিতে কোভিডে মৃতের সংখ্যাই বেশি কি না সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়।

তবে কূটনৈতিক মহলের মতে, কোভিডের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে যদিও উদ্বিগ্ন নয় চিন। ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা নিয়েই ব্যস্ত তারা। তবে কী ভাবে এই অতিমারির সঙ্গে মোকাবিলা করা যায় সেদিকে কোনও নজরই দিচ্ছে না চিন। উল্টে বিষয়টি ধামাপাচা দেওয়ার চেষ্টায় মত্ত তারা। সংক্রমণবৃদ্ধি, মৃত্যুবৃদ্ধি নিয়ে এই মুহূর্তে নীরবতাই পালন করছে চিন সরকার। যদিও গোড়া থেকেই পরিস্থিতি বেগতিক হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গিয়েছিল তাদের। চলতি মাসের শুরুতে কড়া বিধি-নিষেধ তুলে নিলেও, সচেতন না হলে আগামী কয়েক মাসে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হতে পারে বলে সতর্কবার্তা দেয় তারা। তার পরেও সংক্রমণবৃদ্ধি ঠেকানো যায়নি, বরং উল্টে বেড়েছে।

 

 

Previous articleKIFF 2022 : ২৮ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে উঠে এল পশুপ্রেমীর গল্প
Next articleকল্যাণময়ের জামিন মামলায় সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট হাই কোর্ট