জীবিকার টানে সিকিমে কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু হল বাংলার দুই শ্রমিকের। আহত আরও ২। মৃতরা প্রত্যেকেই জলপাইগুড়ি জেলার বাসিন্দা বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। সিকিমের পেলিংয়ে স্কাইওয়াক নির্মানের কাজে গিয়েছিলেন তারা। পেশায় প্রত্যেকেই রাজমিস্ত্রি। ধসের কবলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে এই দুই জনের। এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ জলপাইগুড়ির সদর ব্লক। শনিবারই মৃতদের দেহ এসে পৌঁছেছে জলপাইগুড়িতে। জানা গিয়েছে, গত ১৫ ডিসেম্বর জীবিকার তাগিদে ঘর ছেড়েছিলেন বাংলার মোট ১১ জন নির্মাণ শ্রমিক। এদের মধ্যে ৮ জন রাজগঞ্জ ব্লকের বারোপেটিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। বাকি তিন জন ধামিপাড়া গ্রামের। এদের প্রত্যেকের শুক্রবারই একসঙ্গে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। নিয়তির পরিহাসে দু’জন আর পারলেন না ঘরে ফিরতে।

জানা গেছে, সিকিমের পেলিংয়ে গিয়েছিলেন স্কাইওয়াক নির্মাণের কাজে। সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজ করছিলেন তাঁরা। শুক্রবার সকালে কাজ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই আচমকা ধস নামে। ধসে চাপা পড়েন চার জন শ্রমিক। সেখানে উপস্থিত অন্যরা উদ্ধার কাজে হাত লাগান। ধস সরিয়ে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রবি রায় (৩০) এবং সুধামা ওড়াওকে (৪২) মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। বাকি দুজনের চিকিৎসা চলছে। আহতদের মধ্যে এক জনের নাম প্রশান্ত রায়। পরে আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পাঁচজন নিচে নেমে সাটারিংয়ের কাজ করছিলেন। সাটারিংয়ের কাঠ আনতে কিছুটা দূরে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়ই আচমকা শব্দ। তাকিয়ে দেখেন হুড়মুড় করে পাহাড় ভেঙে পড়ছে। অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বাঁচলেও ধসে চাপা পড়েন তাঁর ৪ সহকর্মী। বারোপেটিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের উপপ্রধান কৃষ্ণ দাস জানিয়েছেন, শুক্রবার ঘটনার পর থেকেই তাঁরা খোঁজখবর নিচ্ছেন। যে সংস্থার হয়ে কাজ করতে গিয়েছিলেন ওই যুবকেরা, সেই সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছেন। আর্থিক সাহায্যের ব্যাপারে কথা হয়েছে। পঞ্চায়েতের তরফে আহত ও নিহতদের পরিবারকে সমস্তরকম সহযোগিতারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়েই হতাহতদের পরিবারের লোকেরা পৌঁছে গিয়েছিলেন পেলিংয়ে। সিকিমে ময়নাতদন্তের পর রাতেই দেহ নিয়ে জলপাইগুড়ি ফেরেন তাঁরা।ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে বারোপেটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝাকুয়া পাড়া, ধামিপাড়া এলাকায়।