Monday, May 5, 2025

দেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বিদেশে সমাদৃত এই ১৩ ভারতীয় চলচ্চিত্র

Date:

Share post:

বিদেশে (Abroad) প্রশংসা কুড়িয়েছে যথেষ্ট। সমালোচকদের (Critics) কাছে প্রশংসিত হয়েছেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। মুক্তি পেয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে (Film festival)। কিন্তু নিজের দেশেই পড়েছে সেন্সরের (Censor Board) কাঁচি। যৌনতা ও হিংসাত্মক দৃশ্য দেখানোর অভিযোগে ভারতীয় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হয়নি সিনেমাগুলিকে। ভারতে নিষেধাজ্ঞা (Ban) জারি হয়েছে অথচ বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত রইল এমন বেশ কিছু বলিউড ছবির (Bollywood movie)। তালিকা –

১. ব্যান্ডিট কুইন (Bandit Queen), ১৯৯৪

চম্বলের দুঃসাহসী ডাকাত রানী ফুলন দেবীর (Phoolan Devi) আত্মজীবনী নিয়ে তৈরি ছবিটি। যৌন ও আপত্তিকর বিষয়বস্তুর কারণে ভারতীয় সেন্সর বোর্ড ছবিটিকে নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু কান চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিল।

২. ফায়ার (Fire), ১৯৯৬

ছবিটি ছিল হিন্দু পরিবারের দুই সমকামী (lesbian) জা(sisters-in-law)-এর গল্প নিয়ে। ট্রেলার লঞ্চ হওয়ার পরেই বিতর্কের ঝড় উঠতে থাকে। শিবসেনা (Shiv Sena) সহ বহু হিন্দু গোষ্ঠী সিনেমাটির বিরোধিতা করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত সেন্সর বোর্ড ছবিটি মুক্তি দিতে রাজি হয়নি। কিন্তু বিদেশে ছবিটি যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছিল।

৩. কাম সূত্র (Kama Sutra), ১৯৯৬

মীরা নায়ার (Mira Nair) পরিচালিত ‘কাম সূত্র’র কেন্দ্রে ছিল এক ভালবাসার গল্প। বেশ কিছু সাহসী দৃশ্য থাকার কারণে ছবিটি ভারতীয়দের ক্রোধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ভারতবাসী ছবিটিকে অনৈতিক বলে দাবি করে এবং একটি সময়ের পর ছবিটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়।

৪. ইউআরএফ প্রফেসর (Urf Professor), ২০০০

পঙ্কজ আদবানী (Pankaj Advani) পরিচালিত সিনেমাটি এগিয়েছিল গল্পের নায়কের লটারি জেতাকে সঙ্গে নিয়ে। বেশ কিছু অশ্লীল দৃশ্য এবং সাহসী সংলাপের যুক্তি দেখিয়ে সিনেমাটিকে ভারতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ফরাসি প্রযোজকদের (Foreign producer) কাছে ছবিটি যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছিল।

৫. দ্য পিঙ্ক মিরর (The Pink Mirror), ২০০৩

ট্রান্সজেন্ডারদের (Transgender) একটি গল্প প্রযোজক তুলে ধরেছিলেন ছবিটিতে। কিন্তু অশ্লীল অভিযোগ দিয়ে ভারতীয় প্রেক্ষাগৃহে ছবিটিকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। ভারতে সমালোচনা সত্ত্বেও বিশ্বের বহু ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ছবিটি এক বাক্যে প্রশংসার দাবি রেখেছিল।

৬. পাঞ্চ (Paanch), ২০০৩

অনুরাগ কাশ্যপের (Anurag Kashyap) ছবিটির কেন্দ্রে ছিল ১৯৯৭ সালে হওয়া যোশী-অভয়ঙ্কর সিরিয়াল মার্ডার (Joshi-Abhyankar serial murder)। চরম বর্বরতা, সাহসী সংলাপ এবং ওষুধের অপব্যবহারের যুক্তি দেখিয়ে ভারতীয় সেন্সর বোর্ড ছবিটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

৭. ব্ল্যাক ফ্রাইডে (Black Friday), ২০০৪

সত্য ঘটনা ‘বম্বে বিস্ফোরণ’কে (Bombay blast) অবলম্বনে অনুরাগ কাশ্যপ (Anurag Kashyap) তৈরি করেছিলেন ছবিটি। হিংসাত্মক এবং অসংবেদনশীল দৃশ্য থাকার কারণে বম্বে হাইকোর্ট (Bombay High Court) ছবিটিকে নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেছিল।

৮. পারজানিয়া (Parzania), ২০০৫

২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার (Gujarat riot) সময় নিখোঁজ হয়ে যায় ‘আজহার’ (Azhar) নামে এক বালক। এই সত্য ঘটনাটিকে অবলম্বন করে তৈরি হয় পারজানিয়া। কিন্তু অসংবেদনশীল এবং হিংস্র শব্দ দুটির মাধ্যমে সেন্সর বোর্ড ছবিটিকে নিষিদ্ধ করে। তা সত্ত্বেও ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে গোপনে মুক্তি পায় ছবিটি। ছবিটি পরবর্তীকালে জাতীয় পুরস্কার (National Award) পেলেও গুজরাটে (Gujarat) মুক্তি দেওয়া হয়নি।

৯. সিন্স (Sins), ২০০৫

কেরালার (Kerala) এক পুরোহিতের (Priest) গল্প রয়েছে ছবিটিতে। তিনি হঠাৎই প্রেমে পড়েন এক মহিলার এবং তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ক্যাথলিক (Catholic) সমাজ এবং সেন্সর বোর্ডের সমালোচনার মুখে পড়ে ছবিটি। ফিল্মের দৃশ্যগুলিকে অসামাজিক আখ্যা দিয়ে সেন্সর বোর্ড ছবিটিকে নিষিদ্ধ করে দেয়।

১০. ওয়াটার (Water), ২০০৫

বেনারসের বিধবাদের (Indian widows of Banaras) জীবনযাত্রাকে কেন্দ্র করে এগিয়েছে ছবির গল্প। তাঁদের একঘরে জীবনযাত্রার বেশ কিছু দৃশ্য ছিল ছবিতে। ছবির গল্পকে ঘিরে নিন্দার ঝড় ওঠে ভারতীয় সমাজে। ভারতীয় সেন্সর বোর্ড ছবিটিকে নিষিদ্ধ করে দিলেও বিদেশের বহু প্রান্তে ছবিটি মুক্তি পায় এবং যথেষ্ট প্রশংসা কুড়ায়।

১১. গান্ডু (Gandu), ২০১০

এটি ছিল নির্ভেজাল সাদা-কালো (Black-and-white) একটি বাংলা সিনেমা (Bengali film)। যৌন দৃশ্যের জন্য সেন্সর বোর্ড ভারতে এটিকে মুক্তি দেয়নি। কিন্তু বার্লিন (Berlin International Film Festival) এবং স্ল্যামড্যান্স আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে (Slamdance Film Festival) ছবিটি দেখানো হয়েছিল। বিশেষত গল্প এবং দৃশ্যের জন্য ছবিটি প্রচুর প্রশংসা কুড়িয়েছিল।

১২. ডেসড ইন দুন (Dazed in Doon), ২০১০

দুনে (Doon) অবস্থিত অত্যন্ত নামী একটি স্কুলের ছাত্রকে কেন্দ্র করে এগিয়েছিল গল্পটি। ছবিতে ড্রাগের ব্যবহার এবং নগ্নতা থাকার কারণে স্কুলটি ছবিটি মুক্তি দিতে তীব্র বিরোধিতা করে। শেষ পর্যন্ত সেন্সর বোর্ড ছবিটিকে মুক্তি দেয়নি।

১৩. আনফ্রিডম (Unfreedom), ২০১৫

ছবির কেন্দ্রে ছিল অপহরণের (kidnap) গল্প। এক ইসলামিক মৌলবাদী (Islamic fundamentalist) অপহরণ করেন মার্কিন নিবাসী এক উদারপন্থী মুসলিমকে (liberal Muslim) এবং এক ভারতীয় সমকামী অপহরণ করেন তাঁর সমকামী প্রেমিকাকে (lesbian lover)। ছবিটি বিদেশে প্রশংসা কুড়ালেও ভারতীয় সেন্সর বোর্ড ছবিটিকে নিষিদ্ধ করে দেয়।

spot_img

Related articles

খুনের হুমকি মহম্মদ সামিকে, এফআইআর ভাইয়ের

খুনের হুমকি এবার মহম্মদ সামিকে(Mohammed Shami)। এক কোটি টাকা চেয়ে মহম্মদ সামিকে(Mohammed Shami) খুনের হুমকি দিয়ে ইমেল। আর...

ভূমিকম্পের পূর্বাভাস মিলবে সংখ্যাতত্ত্বে, গবেষণায় অভূতপূর্ব সাফল্য বাঙালি অধ্যাপকের

জলবায়ু ও আবহাওয়ার নির্ভুল পূর্বাভাস মিললেও, ভূমিকম্প(Earthquake) বা অগ্ন্যুৎপাতের আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া কার্যত অসম্ভব ছিল বিজ্ঞানীদের কাছে। সেই...

বড়বাজারের অগ্নিকাণ্ডের জের! সমস্ত হোটেল-স্কুলে ফায়ার সেফটি অডিট করার সিদ্ধান্ত রাজ্যের 

বড়বাজারের ঋতুরাজ হোটেলে প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর প্রেক্ষিতে এবার রাজ্যের...

হিমালয়ের হিমবাহ গলে বাড়ছে সমুদ্রের জলস্তর, বিপদে ভারতও

বিশ্ব উষ্ণায়ন(Global Warming) থেকে রক্ষা নেই হিমালয়ের(Himalaya) সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টেরও(Mount Everest)। এভারেস্টের উচ্চতম হিমবাহ সাউথ কোলও দ্রুত গলছে।...