বকেয়া ১০০ দিনের কাজের টাকা, কেন্দ্রের শর্তে বন্ধ একাধিক কাজ

পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে খবর,ওই সব শর্ত মানতে গিয়ে বাংলার বুকে আড়াই লক্ষর বেশি স্কিমের কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য সরকার।

১০০ দিনের কাজ (100 Days work) সহ একাধিক প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ করে রেখেছে কেন্দ্রের মোদি সরকার (Modi Govt)। প্রায় বছর ঘুরতে গেলেও মেলেনি টাকা। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। এবার গরিব মানুষের কর্ম সংস্থানের ওই প্রকল্পে কেন্দ্র সরকার চাপিয়ে দেওয়া শর্তে বন্ধ হয়ে গেলো ওই প্রকল্পের আওতায় চলা বহু ধরনের কাজ বা স্কিম (Scheme)।

পঞ্চায়েত দফতর(Panchayat department) সূত্রে খবর,ওই সব শর্ত মানতে গিয়ে বাংলার বুকে আড়াই লক্ষর বেশি স্কিমের কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য সরকার। গত ৫ মাসে এই সব কাজ বন্ধ রয়েছে রাজ্যে। বরাদ্দ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের চাপানউতোরের মধ্যেই নয়া শর্ত চাপিয়ে গ্রামবাংলার উন্নয়নে আরও একবার নিঃশব্দে কোপ বসিয়েছে মোদি সরকার (Modi Government)।

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে কেন্দ্র সরকার ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বেশ কিছু নয়া শর্ত আরোপ করে। ওইসব শর্তে বলা হয়েছে, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে একসঙ্গে ২০টির বেশি স্কিমের কাজ করা যাবে না। একটি পঞ্চায়েতে এককালীন সর্বাধিক ২০টি স্কিমের কাজ করা যাবে। ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দ এবং বকেয়া টাকা পেতে গেলে এই নির্দেশিকা মেনে চলতেই হবে। কেন্দ্রের সেই চিঠি পেয়েই নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয় নবান্ন। সেই সময় বাংলার বুকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প বা মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্টের অধীনে ১৪.৩৮ লক্ষটি স্কিমের কাজ চলছিল। কিন্তু কেন্দ্রের সেই চিঠির জেরে একপ্রকার বাধ্য হয়েই রাজ্য সরকার সমীক্ষা শুরু করে কোন কোন কাজ বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব, তা চিহ্নিত করতে। সেই সমীক্ষা শেষে পুকুর কাটা, সোকপিট তৈরি, খাল সংস্কারের মতো ২.৮১ লক্ষ স্কিম চিহ্নিত করা হয় ও সেগুলির কাজ রাজ্য সরকার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। বাকি যে সব স্কিমের কাজ বজায় রাখা হচ্ছিল সেগুলির কাজও এখন মাঝপথে থমকে দাঁড়িয়েছে। রাজ্যে এখন এমন স্কিমের সংখ্যা ১১.৫৭ লক্ষ। সামগ্রী বাবদ খরচ এবং বরাদ্দ শ্রমদিবসের সংখ্যা নিশ্চিত করলেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করা যাবে কাজগুলি।

রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাতেও বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সেই চিঠির আবার কোনও উত্তর এখনও পায়নি নবান্ন। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে, কেন্দ্র সরকার যখন গত বছর জানিয়েছিল যে একটি পঞ্চায়েতে এককালীন সর্বাধিক ২০টির বেশি স্কিমের কাজ করা যাবে না তখন কিন্তু বাংলার পাশাপাশি দেশের আরও বেশ কিছু রাজ্যের তরফেও আপত্তি জানানো হয়। কেননা, কেন্দ্রের যুক্তি ছিল সঠিক মানদণ্ড বজায় রেখে প্রকল্পের কাজ চালাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঘটনা কাজ কমালেই যে মানদণ্ড ঠিক থাকবে, এই চিন্তাভাবনা ঠিক নয়। বাংলা সহ দেশের আরও বেশ কিছু রাজ্যের সেই আপত্তির জেরে কেরলের জন্য একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে এককালীন চলা কাজের সংখ্যা ২০ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করেছে কেন্দ্র। কিন্তু বাংলার জন্য তা আর বাড়ানো হয়নি। সেটা এখনও ২০ করেই রাখা হয়েছে। অথচ কেরলের মতো সেটিও ৫০ করে দিলে যে সব কাজ বাকি আছে বা বাদ পড়েছিল সেগুলি অনায়াসে শেষ হয়ে যেতে পারে। এখন দেখার বিষয় বাংলার তরফে যে আবেদন কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হয়েছে তা নিয়ে মোদি সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নেয় কিনা।

 

 

Previous articleগ্রুপ-ডি নিয়োগ মামলায় এসএসসি এবং পর্ষদের কাছে চার প্রশ্নের জবাব তলব বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের
Next articleসন্তোষ ট্রফিতে জয়ের ধারা অব‍্যাহত বাংলার, ছত্তিশগড়কে হারাল ২-০ গোলে