Monday, August 25, 2025

বোলপুরে চেনা মেজাজে মমতা: শিশুদের দিলেন বই-চকোলেট, সোনাঝুরিতে দোকানে বানালেন চা

Date:

সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়া তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গি। এবার বোলপুর গিয়েও তার ব্যতিক্রম হল না। বুধবার, প্রশাসনিক সভা সেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যান শিশুতীর্থে। শিশুদের সঙ্গে কাটান মুখ্যমন্ত্রী। তাদের হাতে তুলে দেন উপহার-চকোলেট। এরপরে রাস্তার ধারের চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে নিজে চা করে সবাইকে খাওয়ান মুখ্যমন্ত্রী।

সুপ্রিয় ঠাকুরের (Supriyo Thakur) জামাই সুদৃপ্ত ঠাকুর (Sudipto Thakur) জানান, “ওনার মত বাচ্চাদের মতো। আমরা আশা করিনি উনি আমাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন”। সুপ্রিয় ঠাকুরের মেয়ে রূপসা ঠাকুর (Rupsa Thakur) বলেন, “বাচ্চারা খুবই খুশি। তারা দিদিকে গান শুনিয়েছে। নাচ দেখিয়েছে। দিদি বলেন, আমি বাচ্চাদের খুব ভালবাসি। প্রচুর চকোলেট এনেছিলেন। বাচ্চাদের জন্য বই এনেছিলেন। বলেন, আমি চাই, এরা এখান থেকে বড়ো হোক। কিছু করুক।” পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্য মন্ত্রী। বাচ্চাদের সঙ্গে গল্পও করেন। তারপর শ্বেত চন্দন গাছ রোপণ করেন মমতা। যাওয়ার সময় শিশুদের লাগানো সতেজ ফুলকপি, গাজর এসব উপহার হিসেবে নিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী।

সুদৃপ্ত ঠাকুর জানান, সুপ্রিয় ঠাকুর পাঠভবন থেকে অবসরের শেষের দিকে ১৯৯৯ সালে এই স্কুল খোলেন। নার্সারি থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত মোট উনিশ জন পড়ুয়া এই স্কুলে আছেন। সুপ্রিয় ঠাকুর এদিন একটু অসুস্থ ছিলেন। আগের দিন মুখ্যসমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। কথায় কথায় তিনি জানান, “একটা সময় বিশ্বভারতী যেতাম। কিন্তু বর্তমান উপাচার্যর সময় সেটা একদম তলানিতে ঠেকেছে।” পাঁচিল বিতর্ক যে কতটা যে উপাচার্যর মস্তিষ্ক প্রসূত সেটা বোঝাতে একটি ঘটনার উদাহরণ দিয়ে সুদৃপ্ত বলেন, একসময় প্রখ্যাবত শিল্পী শান্তিদেব ঘোষের বাড়িতে ফ্ল্যাকট তোলা হবে বলে অপপ্রচার করেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। কিন্তু তার প্রমাণ দাবি করলে তিনি তা দেখাতে পারেননি! বিশ্বভারতী থেকে শিশুতীর্থ দূরত্ব খুব বেশি নয়। কিন্তু মনের দূরত্ব অনেকটাই বেড়েছে উপাচার্যর সৌজন্যে মন্তব্য সুপ্রিয় ঠাকুরের পরিবারের।

এরপরেই সোনাঝুরির মাটির চায়ের দোকানে ঢুকে নিজের হাতে চা বানান মুখ্যমন্ত্রী। আধিকারিক, নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়েই সোনাঝুরির একটি চায়ের দোকানে চা খেতে যান মমতা। সঙ্গে ছিলেন ফিরহাদ হাকিম-সহ নেতৃত্ব। সামনে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে কিছুটা ঘাবড়ে যান চা বিক্রেতা তরুণী। বুঝতে পেরে নিজেই চা, চিনি, দুধ চেয়ে নিয়ে উনুনে চা বসিয়ে দেন মমতা। শেষে তরুণীকে চা পরিবেশনও করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এরপরেই নীবিড় জনসংযোগের অঙ্গ হিসেবে মমতা জিজ্ঞাসা করেন, “তোমরা রেশন পাও? বাচ্চারা পড়াশোনা করতে যায়? তোমাদের ঘর কোথায়? এই তোমার ঘর দেখাও! দেখি কোথায় থাকো!” তারপর নিজেই পর্দা সরিয়ে দেখে নেন কাঁচা বাড়ির ঘরদোর। চায়ের বিল মেটানোর সময় জিজ্ঞাসা করেন, “কত হল? এই ওকে ১০০ কাপ চায়ের পয়সা দাও।” শেষে মমতার পা ছুঁয়ে প্রণামও করেন ওই তরুণী। মুখ্যমন্ত্রীকে এই রূপে দেখে আপ্লুত সোনাঝুরি।

আরও পড়ুন- বাজেটে হতাশ সুরাপ্রেমীরা! মদে ১০০ শতাংশ শুল্ক বসাবে কেন্দ্র, বাড়বে দাম

 

Related articles

কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি: দু-মলাটে বাংলার দুর্গোৎসবের ৪৩৪ বছরের ইতিহাস

রবিবাসরীয় সন্ধেয় গড়িয়াহাটের একটি ব্যাঙ্কয়েটে আড্ডার আবহে প্রকাশিত হল সাংবাদিক-লেখক সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের বই 'কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি'। উপস্থিত...

তৃণমূল–সমাজবাদী পার্টির পথে এবার আম আদমি পার্টি! জেপিসিতে থাকছে না আপও 

সংবিধান সংশোধনী বিল খতিয়ে দেখতে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিল আম আদমি পার্টি।...

মোদির বিরুদ্ধে সরব! হিটলারি কোপে লাদাখের সোনম ওয়াংচু

দফা এক দাবি এক। লাদাখের জন্য একই দাবিতে আজও অনড় সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk)। লাদাখের জমি, যা...

শান্তিপুরে মহিলা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ভোটে গোহারা বিজেপি! ২৬-৪-এ জয়ী তৃণমূল 

এসআইআর ইস্যু নিয়ে রাজ্যে বিজেপির মাতামাতির মধ্যে নদিয়ার শান্তিপুরে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্লাস্টার কমিটির নির্বাচনে বড় সাফল্য পেল...
Exit mobile version