ত্রিপুরায় নির্বাচনী প্রচারে হাতে মোটে আর দুদিন। আজ শেষ রবিবার। এদিন, বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেবকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। বার্তা দেন, ক্ষমতায় এলে বাংলার মডেলে ত্রিপুরায় (Tripura) উন্নয়নের। তিনি বলেন, বাংলায় রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্প নকল করছে অন্যান্য় বিজেপি শাসিত রাজ্য। অর্থাৎ জেরক্স করছে তারা। ত্রিপুরার মানুষ জেরক্স নেবেন কেন, অরিজিনাল নিন। ডাবল ইঞ্জিনের নয়া ব্যাখ্যা দেন তৃণমূল মুখপাত্র। বলেন, তৃণমূল জিতলে বাংলা ও ত্রিপুরায় উন্নয়নের ডবল ইঞ্জিন।

এরপরেই একসঙ্গে ত্রিপুরার শাসকদল বিজেপি (BJP), আগের দুই শাসকদল বাম ও কংগ্রেসকে নিশানা করেন কুণাল। প্রথমেই প্রশ্ন তোলেন, যদি বিজেপি সরকারে ভালো কাজই করছে, তাহলে তাদের মুখ্যমন্ত্রী বদল করতে হয় কেন! এরপরেই তৃণমূল মুখপাত্র বার্তা দেন, আগে মুখ্যমন্ত্রী বদল, এবার সরকারে পালাবদল। কুণালের কথায়, বিজেপি-কংগ্রেস-সিপিএমের (CPIM) বাংলায় দোস্তি আর ত্রিপুরায় কুস্তি। বাংলায় তৃণমূলকে হারাতে হাত মিলিয়ে লড়েছে বাম আর বিজেপি। বাংলায় পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে সমবায় দখল- সব ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে বিজেপিকে সমর্থন করছে বামেরা। আর এখানে তার দেখাচ্ছে তারা বিপক্ষ। সিপিএমের ভ্রান্ত নীতির জন্যই বাংলায় তারা শূন্য। একই ভাবে হারিয়ে গিয়েছে কংগ্রেসও। এখন বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে অস্বস্তি রক্ষা করার চেষ্টা করেছে তারা।

ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের (Manik Sarkar) সম্পর্কে সম্মান জানিয়েই কুণাল বলেন, মানিকবাবু নিজে নির্বাচনে লড়বেন না, কারণ দলের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী নন তিনি। বাংলার বাম জমানার অপশাসনের অভিযোগ তোলেন কুণাল। তাঁর মতে, বাম জমানায় বাংলায় শিক্ষার মান নেমে গিয়েছিল। পুরো একটা প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তৃণমূল সরকারের আমলে শিক্ষার মান উন্নয়ন হয়েছে।

তৃণমূলস মুখপাত্র জানান, কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে যাননি তাঁরা। তাও হালে পানি পাচ্ছে না কংগ্রেস। বাংলায় সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেস মহাশূন্য-তীব্র খোঁচা কুণালের। বাম-কংগ্রেস অশুভ শক্তির জোট বলেও মন্তব্য করেন কুণাল।
এরপরেই বাংলার উন্নয়নমূলক প্রকল্পের খতিয়ান দেন তৃণমূল মুখপাত্র। বলেন, উন্নয়নমূলক প্রকল্পে দেশের মধ্যে সেরা বাংলা। তৃণমূল সরকারের দুয়ারে সরকার প্রকল্প দেশের মধ্যে সেরার শিরোপা পেয়েছে। আর নারী নির্যাতনে দেশের মধ্যে প্রথমসারিতে উত্তরপ্রদেশ-সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি। বিজেপিশাসিত গুজরাট দুয়ারে সরকারের নকল করছে। দেশের মধ্যে কর্মসংস্থানেও এগিয়ে বাংলা। পর্যটন ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি হয়েছে। ছবির মতো সুন্দর ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরা। এখানেও পর্যটনের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বিজেপি দুর্নীতি করে কোনও উন্নয়ন করেনি। ক্ষমতায় এলে ত্রিপুরার পর্যটনক্ষেত্র ঢেলে সাজাবে- প্রতিশ্রুতি তৃণমূলের।

বাম আমলের দুর্নীতির ফলে ত্রিপুরায় ১০৩২৩ শিক্ষক কাজ হারিয়ে রাস্তায় বসেছেন। আর এরা বাংলার দুর্নীতির কথা বলে! তীব্র কটাক্ষ কুণালের। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলায় আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীরা বুঝে গিয়েছেন বামেদের মামলার ফলেই তাঁদের কাজ পেতে দেরি হচ্ছে। বাংলার বিরোধী দলনেতাকে আক্রমণ করে কুণাল বলেন, সারদার এফআইআর নেমড শুভেন্দু অধিকারী গ্রেফতারি এড়াতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, আর এখন নিজে দুর্নীতির কথা বলছেন! এটা হাস্যকর।
