গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরার ৬০টি আসনে বিধানসভা ভোট শেষ হয়েছে। গণনা ২ মার্চ। কিন্তু ভোটের দিন থেকে শুরু করে প্রতিনিয়ত রাজ্যে একের পর এক অশান্তির ঘটনা ঘটেই চলেছে। সবমিলিয়ে ভোট পরবর্তী হিংসায় শান্তিপ্রিয় ত্রিপুরা এখন উত্তাল। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, গেরুয়া সন্ত্রাসের পাশাপাশি চলছে লাল সন্ত্রাসও। আর পশ্চিমবঙ্গে যাঁরা “ভোট পরবর্তী হিংসা” নিয়ে লম্পঝম্প করছিলেন তাঁরা এখন শীত ঘুমে। এঁদের মধ্যে অনেকেই আবার “গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল” ত্রিপুরায় ভোট প্রচারেও গিয়ে লম্বা-চওড়া ভাষণ দিয়ে এসেছেন।
ভোট পরবর্তী হিংসায় এখন যখন উত্তাল ত্রিপুরা, তখন শুভেন্দু অধিকারী, যিনি এ রাজ্যে পান থেকে চুন খসলেই পুলিশ আর শাসক দলকে কাঠগড়ায় তোলেন। বাংলার বদনাম করতে “ভোট পরবর্তী হিংসা” নিয়ে বাজার গরম করেছিলেন সেই শুভেন্দু এখন চুপ কেন? কোথায় অগ্নিমিত্রা পাল? যিনি নিজের লোকসভা আসনে রেকর্ড মার্জিনে হারেন, তিনি আবার নাকি আবার ত্রিপুরায় বিজেপির তারকা প্রচারক! কোথায় তাঁর মুখে টু শব্দ নেই কেন ত্রিপুরার ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে। ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন কেন ঠুঁটো জগন্নাথ? কোথায় গেলেন বিজেপি নেত্রী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল?
ত্রিপুরা কি দেশের বাইরে? ভোট পরবর্তী হিংসায় ফ্যাক্ট ফাইন্ড করতে কেন ত্রিপুরায় যাচ্ছে না কেন্দ্রীয় দল? যেখানে ভোটের আগে বাংলার মতোই ডেইলি পাসেঞ্জার হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, ত্রিপুরায় ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে তাঁর দফতরের কোনও বিবৃতি নেই কেন? ডাবল ইঞ্জিন রাজ্য বলেই কেন তাঁদের এতো নীরবতা?
ভোট পরবর্তী হিংসার ত্রিপুরায় গেরুয়া সন্ত্রাসের পাশাপাশি চলছে লাল সন্ত্রাসও। ফলাফল বেরোনোর ফল তা আরও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি নেবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কোথায় গেলেন সুজন চক্রবর্তী-মহম্মদ সেলিমরা। বাংলায় তো মুখে ফুলঝুরি ফোটে, ত্রিপুরার ঘটনা নিয়ে নিশ্চুপ কেন এ রাজ্যের সিপিএম নেতারা?
অভিযোগ, ত্রিপুরা জুড়েই ভোটের পর থেকে বিরোধীদের উপরে শারীরিক আক্রমণ, খুন, অগ্নিসংযোগ, বাড়িঘরে আক্রমণ, পরিবার প্রতিপালনের উৎসকে বিনষ্ট করে দেওয়া, মিথ্যা মামলা রুজু করে বিরোধী দলের নেতা, কর্মী, সমর্থক, শুভাকাঙ্ক্ষীদের বিপদগ্রস্ত ও বিপন্ন করার চেষ্টা চলছে। এই অবস্থায় শাসক দলের পক্ষ থেকে পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে বিশেষভাবে সদর্থক ভূমিকা থাকা দরকার। কিন্তু তাঁরা আরও বেশি ইন্ধন দিচ্ছে। বাম-কংগ্রেস জোটের বিরুদ্ধেও ব্যাপক অশান্তির অভিযোগ উঠছে। প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ সবাইকে নিরপেক্ষভাবে সদা সতর্ক ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু সকলেই নির্বিকার।