একদিকে তাঁর দাবাং স্টাইল। জেলার সমস্ত ভালো-মন্দ, সমস্যা-প্রয়োজনীয়তা দক্ষ হাতে সামলান। তবে অপরাধীদের কাছে তিনি একেবারে ‘যমরাজ’। একটু এদিক ওদিক হলেই সর্বনাশ। কিন্তু তারই পাশাপাশি তিনি বলিউড অভিনেত্রীও। লাইট, ক্যামেরা ছাড়া এতটুকু দিন কাটে না তাঁর। পাশাপাশি নিজের চেষ্টায় প্রথমবারেই ইউপিএসসিতে (UPSC Exam) উত্তীর্ণ হয়ে দেশের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। হ্যাঁ, আজ এমনই এক মানুষের গল্প আপনাদের শোনাব। যার কৃতিত্ব ও দক্ষতার গল্প শুনলে অনাক হবেন আপনিও। একজন মহিলা হয়েও কীভাবে একা হাতে তিনি সবটুকু সামলাচ্ছেন সেই গল্পই আজ আলোচনা করব। তবে হয়তো মহিলা বলেই সবদিক দশ হাতে সামাল দিতে পারেন তিনি।

নাম সিমালা প্রসাদ (Simala Prasad)। ১৯৮০ সালের ৮ অক্টোবর ভোপালে জন্ম। মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) এই ‘মহীয়সী’ কন্যা পেশায় আইপিএস অফিসার। বর্তমানে মধ্যপ্রদেশেরই বেতুল জেলার এসপি। তবে শুধু সেটুকু বললে তাঁর পরিচয় সম্পন্ন হয় না। সিমালার পড়াশোনা থেকে কেরিয়ার, এমনকি পারিবারিক পরিচিতিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। অভিনয়ের পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও মনের ভিতরে সবসময় দেশের জন্য কিছু করার এক অদম্য চেষ্টা সবসময় কাজ করত। আর সেকারণেই রুপোলী পর্দা ছেড়ে আইপিএস হন। তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হল, আইপিএস (IPS) কর্তা হিসাবে প্রায় বছর ছয়েক কাটিয়ে ফেলার পর তাঁর কাছে সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব আসে।

২০১০ সালের মধ্যপ্রদেশ ব্যাচের আইপিএস অফিসার সিমালা। ইতিমধ্যে একাধিক জেলার দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি এবং সফল ভাবে শাসকের দায়িত্ব পালনের জন্য বিশেষ প্রশংসিতও হয়েছেন। এই সময়ে ঘটে এক আশ্চর্য ঘটনা। দিল্লির একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে দেখেন বলিউড পরিচালক (Bollywood Director) জাইঘাম ইমাম। সিমালার সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান ইমাম। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে ছবি ‘আলিফ’-এ অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়ে রাজিও হয়ে যান সিমালা। এরপর জাইঘাম তাঁর পরের ছবি ‘নক্কাশ’-এও একটি চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন সিমালাকে। ছবিটি কান চলচ্চিত্রোৎসবে পুরস্কার পায়। তবে কোনও ছবিতেই নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেননি তিনি। পাশাপাশি লেখাপড়াতেও অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন এই আইপিএস অফিসার। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বর্ণপদক (Gold Medal) পাওয়া এই মেধাবী ছাত্রী স্কুল-কলেজে শীর্ষ স্থানাধিকারী ছিলেন বরাবর।
সিমালার বাবা ভগীরথ প্রসাদও আইএএস অফিসার। দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। আবার ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশের ভিণ্ড থেকে নির্বাচিত সাংসদও (MP) ছিলেন তিনি। সিমালার মা মেহরুন্নিসা পারভেজ একজন লেখিকা। লকডাউন চলাকালীন সিমালার লেখা কবিতা ‘ম্যায় খাকি হুঁ..’ সাড়া ফেলেছিল দেশে। সিমালার কাজের প্রশংসা করেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান (Shivraj Singh Chouhan) এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও (Narendra Modi)। সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যন্ত সক্রিয় সিমলা। ইনস্টাগ্রামে (Instagram) তাঁর ফলোয়ার ১১ হাজারেরও বেশি।
