সমকামী বিবাহের(same sex marriage) বিরোধিতা করে সম্প্রতি শীর্ষ আদালতে(Supreme Court) ফলকনামা পেশ করেছে কেন্দ্র। যেখানে যুক্তি দেওয়া হয়েছে এই বিবাহ দেশের সংস্কৃতির পরিপন্থী। এবার কেন্দ্রের(Central) সেই মতকে সমর্থন করে নিজেদের বক্তব্য পেশ করল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ(RSS)। হিন্দু সংস্কৃতিতে বিবাহ একটি সংস্কৃতি, কোনরকম চুক্তি বা ফুর্তির জন্য নয়। তাই কেবলমাত্র বিপরীত লিঙ্গের মধ্যেই বিয়ে সম্ভব।
মঙ্গলবার এই বিষয়ে সংঘের অবস্থান স্পষ্ট করলেন আরএসএস সাধারণ সম্পাদক দত্তত্রেয় হোসবলে। তাঁর কথায়, “শুধুমাত্র বিপরীত লিঙ্গের দু’জন মানুষের মধ্যেই বিবাহ হতে পারে। বিষয়টিকে কেন্দ্রীয় সরকার যে দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখছে, তার সঙ্গে আমরা সহমত।” তিনি আরও বলেন, “বিয়ে হিন্দুদের জীবনে একটি সংস্কার। এটা কোন রকম চুক্তি বা ফুর্তির জন্য নয়। কেউ যদি একসঙ্গে থাকে সেটা আলাদা বিষয় কিন্তু যদি বিয়ের বিষয়ে আসে তবে তা কয়েক হাজার বছর ধরে হিন্দুদের সংস্কৃতিতে একটি রীতি। যেখানে দুজন ব্যক্তি বিয়ে করে একসঙ্গে থাকে শুধু তাদের নিজের জন্য নয় তাদের পরিবার এবং সমাজের জন্য। বিয়ে শুধুমাত্র অবাধ যৌনতা ও চুক্তি নয়।”
এদিকে সমলিঙ্গের বিয়ে প্রসঙ্গে কেন্দ্রের মত স্পষ্ট করে আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, “সরকার কারোর ব্যক্তিগত জীবন বা কোনও ব্যক্তির কর্মকাণ্ড নিয়ে কোনওভাবে নাক গলাতে চাইছে না। নাগরিকদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বা ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ড নিয়েও কোনও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে না। তবে যখন বিষয়টি বিয়ের মতো বিষয় নিয়ে, তখন সেটি নীতিগত বিষয়, আর তার সঠিক আলোচনা দরকার।”
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। আদালত জানায়, সমকামী সম্পর্ক অপরাধ নয়। তবে সমকামী সম্পর্ক বৈধ হলেও সমলিঙ্গ বিয়ে এখনও আইনি বৈধতা পায়নি ভারতে। সম্প্রতি সেই ইস্যুতে আদালতে দায়ের হয়েছে মামলা। যার প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালত এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় মত চায়। রবিবার শীর্ষ আদালতে হলুদনামা পেশ করে কেন্দ্র জানায়, “ভারতীয় পারিবারিক সম্পর্কের সঙ্গে তুলনা চলে না সমকামী সম্পর্ককে। ভারতীয় পরিবারের ধারণা হল স্বামী, স্ত্রী এবং তাঁদের সন্তান।” স্পষ্ট করা হয়, “সামাজিক কারণে”ই সমলিঙ্গ বিবাহের বিরোধিতা করছে কেন্দ্র। আরও দাবি করা হয়, সমলিঙ্গের বিবাহ বৈধ হলে সাধারণ বিবাহ আইনের শর্ত লঙ্ঘিত হবে। বিঘ্নিত হবে বিবাহের সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং আইনগত এতদিনের ধারণা। যা কখনই উচিত নয়।