এভারেস্টের পর এবার লক্ষ্য অন্নপূর্ণা ও মাকালু! অভিযান শুরু পিয়ালীর

সুমন করাতি, হুগলি

এভারেস্টের পর আরও দুই আট হাজারি শৃঙ্গ জয় করতে বেরিয়ে পড়লেন পাহাড় কন্যা পিয়ালী (Piyali Basak)। কৃত্তিম অক্সিজেন ছাড়াই পৃথিবীর দশম উচ্চতম শৃঙ্গ অন্নপূর্ণা (৮০৯১ মিটার ) ও পৃথিবীর পঞ্চম উচ্চতম শৃঙ্গ মাকালু (৮৪৮১ মিটার) জয়ের লক্ষ এবার পিয়ালীর। বৃহস্পতিবার বিকালে চন্দননগর স্টেশন থেকে মিথিলা এক্সপ্রেসে করে রওনা দেয় পিয়ালী। পর্বতারোহণ শুরু ১৯ মার্চ।

তবে মাত্র ৩ লক্ষ টাকা নিয়েই পাড়ি দিল পিয়ালী। কিন্তু, আর্থিক প্রতিকূলতার মধ্যেও থেমে থাকছে না তাঁর পর্বতারোহণ। এবারের অভিযানে প্রয়োজন ৩১ লক্ষ টাকা। তার মাথার উপর বিপুল টাকা ঋণের বোঝা। তারপর ও সেই সমস্ত বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে চলেছে। এর আগে বহু মানুষ ও সংস্থা আর্থিকভাবে সাহায্য করেছিল। এবারেও সেই আশাতেই নিজের পর্বতারোহণ শুরু করতে চলেছে পিয়ালী।

এর আগে ২০২১ এ বিনা অক্সিজেনের ধৌওলাগিরি পর্বতারোহণ করেছেন পিয়ালী। ২০২২ সালে বিনা অক্সিজেনে এভারেস্ট জয়েরও রেকর্ড রয়েছে তার। যদিও ৮৪৯০ মিটারে পর তুষার ঝড়ের কারণে সাপ্লিমেন্টারি অক্সিজেন নিতে বাধ্য হয়েছিল বাঙালি এই পর্বতারোহী। তবে আগে থেকেই সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যেই বিনা অক্সিজেনের অন্নপূর্ণা সহ আরও বেশকিছু শৃঙ্গ জয় করার স্বপ্ন দেখছিল পিয়ালী। পিয়ালী ও তার পরিবারের একটাই আবেদন রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার কাছে। যাতে আর্থিক ভাবে সাহায্য করুক তাকে।আগামীদিনে তার এই সাফল্য গোটা দেশের গর্ব হতে পারবে পিয়ালী। চন্দননগর কাঁটাপুকুর এর বাসিন্দা পিয়ালী বসাক বাবার হাত ধরে প্রথমে পাহাড়ে ঘুরতে যাওয়া। সেখান থেকেই পাহাড়ে চড়ার নেশা শুরু ।পরের চন্দননগর বিভিন্ন পর্বতারোহণ সংস্থার সাহায্যে বিভিন্ন পর্বতারোহণ করে সে। পর্বতারোহণের জন্য সে পাশে পায় অপূর্ব চক্রবর্তীসহ বেশকিছু শুভানুধ্যায়ী মানুষজনকে। আগের এভারেস্ট জয়ে রোটারি অনেকটা অংশ সাহায্য করেছিল। চিকিৎসক থেকে সাধারণ মানুষ এগিয়ে এসেছিল। এবারে আর্থিক দিক থেকেও তাকে সাহায্য করলে ভারতের মধ্যে বড় সাফল্য আনবে এই বঙ্গ তনয়া ।

পিয়ালী বলেন আমার আশা আবহাওয়া যদি সঙ্গ দেয় নিশ্চিত মাকালু ও অন্নপূর্ণা শৃঙ্গ জয় করব। মোট ৩১ লক্ষ টাকা প্রয়োজন।পশ্চিমবঙ্গ স্বরোজগার কর্পোরেশন ২ লক্ষ ২ হাজার টাকা দিয়েছে। আরও এক লক্ষ টাকা ক্রাউড ফান্ডিং উঠেছে। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছি। ঝুঁকি নিয়েও দেশের মুখ উজ্জ্বল করছি। প্রতিপদে মৃত্যুর সত্বেও নাওয়া খাওয়া ভুলে টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছি। টাকা না পেলে মাঝ পথে থেকে ফিরিয়ে দেবে। তবে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন আশ্বাস দিয়েছেন ৫ লক্ষ টাকা দেবার। এভাবে যদি কর্পোরেট সংস্থা এগিয়ে আসে তাহলে দুটি শৃঙ্গ জয় করতে পারব। ১৯ শে মার্চ থেকে যাত্রা শুরু হবে। নেপালের সংস্থা আমাকে ৩রা এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিয়েছে। যাতে বাকি টাকা জোগাড় হতে পারে। তুষার ঝড়ের আগেই সামিট শেষ করতে হবে আমাকে।

পিয়ালীর মা স্বপ্না বসাক বলেন যাওয়ার সময় চিন্তা হলেও আশা করি সামিট শেষ করুক। এটা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ সেটা যারা করে তারাই জানে। বেস ক্যাম্প পর্যন্ত যোগাযোগ থাকলেও অভিযানে গেলে আর যোগাযোগ থাকে না।আর্থিক ভাবে কয়েকজন এগিয়ে এসেছে। এভারেস্ট এর সময় কোন কর্পোরেট বা রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের থেকে পায়নি। এবারে যদি সকলে এগিয়ে আসে তাহলে পিয়ালীর সামিট সফল হবে।

আরও পড়ুন- ভাঙা পা নিয়েই নেত্রীর ডাকে কালীঘাটে কুণাল! মমতা বললেন, ‘বিশ্রাম নাও’

Previous articleভাঙা পা নিয়েই নেত্রীর ডাকে কালীঘাটে কুণাল! মমতা বললেন, ‘বিশ্রাম নাও’
Next articleডিএ বৃদ্ধি মন পসন্দ নয়! ‘ডিজিটাল অসহযোগিতা’র পথে বি*ক্ষুব্ধ সরকারি কর্মীরা