মমতার ধর্নামঞ্চে সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার শপথ: বক্তা সব প্রজন্মের তৃণমূল নেতৃত্ব

ধর্নার দ্বিতীয় দিনেও কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় উঠল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Bandopadhyay) ধর্না মঞ্চ। শপথ নেওয়া হল সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার লড়াইয়ের। এদিনের মঞ্চে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি বক্তব্য রাখলেন তরুণ প্রজন্মের নেতানেত্রীরা। বৃহস্পতিবার, তৃণমূল সুপ্রিমোই সকলে জানিয়ে দেন এদিন তিনি যুব প্রজন্মের কথা শুনবেন। সেই মতো তৃণমূলের সব প্রজন্মের নেতৃত্বেরই নিজেদের কথা বলার মঞ্চ হয়ে উঠল নেত্রী ধর্নার দ্বিতীয় দিন।

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ দল হিসেবে বিজেপি শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই বিরোধী নয়, বাংলা-বিরোধীও। বাংলাকে সহ্য করতে পারে না ওরা। তাই অর্থনৈতিক অবরোধ করছে। রাহুল গান্ধীকে নেতা সাজিয়ে জননেত্রীকে আটকাতে চেষ্টা করেছিলেন মোদী। সেই অঙ্কেই বাংলাকে শেষ করতে চাইছে ওরা। কিন্তু মনে রাখতে হবে, রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার পরে ট্যুইটে প্রথম প্রতিবাদ জানিয়েছেন আমাদের নেত্রীই। ৩৪ বছরের সিপিএমকে শেষ করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই বিজেপি কিছুই করতে পারবে না তাঁর সঙ্গে লড়াই করে। তাঁর নেতৃত্বেই ঐক্যবদ্ধ হবে বিজেপি বিরোধী সমস্ত গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি।

 

সৌগত রায়ঃ যারা ভয় পাচ্ছে মোদীর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে তাদের সাহস জোগাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধরনা। রসদ পাবে লড়াইয়ের। বাংলায় লোকসভার ৪২টি আসন ঘুরিয়ে দিতে পারে দেশের রাজনীতির মোড়। সেই কারণেই বাংলাকে না খাইয়ে মারার চক্রান্ত করছে ওরা। সেই ষঢ়যন্ত্রে মদত জোগাচ্ছে শুভেন্দু। নেত্রী নির্দেশ দিলে উচিত শিক্ষা দিতে হবে ওকে।

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ ২০২১ এর নির্বাচনে ঘরে ঢুকে গিয়েছিল বিজেপি। তাই রাজ্যের ন্যায্য পাওনা আটকাতে বাহানা খুঁজে বেড়াচ্ছে ওরা। কেন আর্থিক প্রতারণার মামলা হবে না ওদের বিরুদ্ধে? হিন্ডেন্সবার্গের রিপোর্টেই তো কেন্দ্রের বিভিন্ন স্তরে এই প্রতারণার কথা প্রতিফলিত হয়েছে। লজ্জার কথা, ৩৪ বছর অত্যাচার চালিয়ে, চিরকূটে চাকরি কেলেঙ্কারি করে সিপিএম আজ বড়বড় কথা বলছে। ওদের সময় অপহরণ করা হয়েছিল বাক স্বাধীনতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন বলেই ওরা আজ এত কথা বলতে পারছে।

ফিরহাদ হাকিমঃ বাংলার মানুষ ভিক্ষে চায় না। শেস, কর -সহ বিভিন্ন খাতে বাংলার মানুষের টাকা নিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র। বাংলার উন্নয়নে ন্যায্য পাওনা ওরা আটকে রাখে কোন মুখে? প্ল্যানিং কমিশন তুলে দিয়ে নীতি আয়োগ করার এই পরিণতি। দুর্নীতির মিথ্যে অপবাদ দিচ্ছে বিজেপি। কিন্তু কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টই তো বলছে কোনও অনিয়ম নেই। আসলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই কেন্দ্র বাংলাকে ভাতে মারার চেষ্টা করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই এর যোগ্য জবাব দেবে বাংলা।

শশী পাঁজা: রাস্তায় থেকে ৩০ ঘণ্টা ধরে ধর্না করছেন। এটা সংবিধানের বাঁচানোর লড়াই। মানুষের অধিকার রক্ষার লড়াই। মানুষকে ভাতে মারতে কেন্দ্র থেকে যত লোক এসেছেন, বাংলায় সেই পরিমাণ বিজেপি নেই। এরা সবকা সাথ সবকা বিকাশ মুখে বলছে আর সকলের সর্বনাশ চাইছে। এরা আসলে কাপুরুষের দল। এদের শেষ জবাব মানুষ দেবেন।

অরূপ বিশ্বাসঃ ধর্নামঞ্চে একটা রিহার্সালেই প্রমাণিত, বিজেপিকে বুঝে নেওয়ার জন্য আমাদের ছাত্র-যুবরা যথেষ্ট। আসলে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পেরে উঠছে না ওরা। তাই অর্থনৈতিক অবরোধের চক্রান্ত করছে। আমাদের রাজস্বের টাকা নিয়ে আমাদেরই বঞ্চিত করছে। কোথায় গেল ২কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি? ব্যাঙ্কে ১৫ লক্ষ টাকা? মিথ্যেবাদী বিজেপি।মনে রাখা দরকার, নিজেদের টাকাতেই বাংলার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ জননেত্রী।

জয়প্রকাশ মজুমদারঃ বিজেপির আসল রূপটা আমি দেখে ফেলেছি। ওরা যে রামরাজত্বের কথা বলে তা ভয়ঙ্কর। বিচারের অধিকার শাসকেরই। সংবিধানে বিশ্বাস নেই ওদের। ২০২১এর নির্বাচনে বিপর্যস্ত হয়ে ওদের দলীয় বৈঠকে আলোচনা হয়েছিল, জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজনৈতিকভাবে রুখতে পারবে না ওরা। তাই ব্রিটিশদের মতো দমননীতি চালাতে হবে বাংলায়। নন্দীগ্রামে লোডশেডিং করিয়ে, কারচুপি করে যেভাবে জনতার রায়কে উলটে দিয়েছিল শুভেন্দু তা আমার কাছে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। এ গণতন্ত্রের লজ্জা।

দেবাংশু ভট্টাচার্যঃ ২০১৬তে একটা সুবিধাবাদী জোট বাংলা দখলের স্বপ্ন দেখেছিল। মুখ থুবড়ে পড়েছে। ধরাশায়ী হয়েছে তৃণমূলের কাছে। নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে সিপিএম। ২০২১ এ একই স্বপ্ন দেখে উচিত শিক্ষা পেয়েছে বিজেপি। রাজনৈতিকভাবে মৃত্যুর প্রতীক্ষায় ওরা। শুধুমাত্র জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই পারবেন দেশকে প্রকৃত প্রগতির পথে নিয়ে যেতে।

আগামী প্রজন্মকে মানুষের অধিকার রক্ষার আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করলেন জননেত্রী। পথ দেখালেন আন্দোলনের। এদিন রেড রোডে মুখ্যমন্ত্রীর ধরনামঞ্চে বিশেষ গুরুত্ব পেল ছাত্র-যুবরা। মুখ্যমন্ত্রী নিজে চেয়ে নিলেন ছাত্র-যুব বক্তা তালিকা। তাঁদের হাতে তুলে দিলেন মাইক্রোফোন। ধারাল যুক্তি বিশেষ মাত্রা দিল ছাত্রনেত্রী ঋতুপর্ণা সিনহা এবং ছাত্রনেতা সমরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে। একদিকে বিজেপি, অন্যদিকে সিপিএমকে তুলোধোনা করলেন তাঁরা। ঋতুপর্ণা দেখিয়ে দিলেন কেমন করে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস করছে বিজেপি। সমরজিৎ তুলে ধরলেন জননেত্রীর নেতৃত্বে সিপিএমের বিদায়ের কাহিনী। মঞ্চে তখন উপস্থিত সায়নী ঘোষ, তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যরা।

আরও পড়ুন:প্রেমিকের দিল্লিতে পা পড়ল প্রেমিকা পরিণীতির !

 

 

Previous articleপ্রেমিকের দিল্লিতে পা পড়ল প্রেমিকা পরিণীতির !
Next articleসুপার কাপের প্রস্তুতি ম্যাচে মহামেডানকে ৪-৩ গোলে হারাল ইস্টবেঙ্গল