“টেস্ট টিউব বেবিরও বাবা-মা থাকে, তারা অ*বৈধ নয়”, চিকিৎসকদের নিশানায় শতরূপ

শতরূপ হাজার হাজার টেস্ট টিউব বেবি ও তাঁদের বাবা-মা'কে আঘাত দিয়েছেন, অপমান করেছেন বলেও মনে করেন ডাঃ সুজয় দাশগুপ্ত। শতরূপের এমন মন্তব্য নিয়ে নেটিজেনরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন

“জানিনা টেস্ট টিউব বেবি কিনা। যদি টেস্ট টিউব বেবি না হয়ে থাকেন, উনারও একটা বাবা থাকা উচিত।” সম্প্রতি তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সম্পর্কে এমনই অশালীন মন্তব্য করেছিলেন সর্বহারা সিপিএমের বাইশ লাখি নেতা শতরূপ ঘোষ। তার এই অসভ্যতামিকে একেবারেই ভালোভাবে নিচ্ছে না শিক্ষিত নাগরিক সমাজ। বামেদের চার আনার এই টেলিভিশন নেতাকে এবার নীতি-শিক্ষা দিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ সুজয় দাশগুপ্ত। শতরূপকে ধিক্কার জানিয়েছেন আরেক চিকিৎসক ডাঃ ইন্দ্রনীল সাহা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে শতরূপের এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইন্দ্রনীলবাবু। তিনি লিখেছেন, “টেস্ট টিউব বেবিরও বাবা মা থাকে। তারা অবৈধ সন্তান নয়। এটা নিয়ে মজা করা অশিক্ষার পরিচয়।” শতরূপ হাজার হাজার টেস্ট টিউব বেবি ও তাঁদের বাবা-মা’কে আঘাত দিয়েছেন, অপমান করেছেন বলেও মনে করেন ডাঃ সুজয় দাশগুপ্ত ও ইন্দ্রনীল সাহা। শতরূপের এমন মন্তব্য নিয়ে নেটিজেনরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। কেউ শতরূপকে “ছাগল” বলছেন তো কেউ বলছেন “অসভ্য”, “অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত”! কেউ কেউ টেস্ট টিউব বেবি ও তাঁদের মা-বাবার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছেন। অবিলম্বে শিশু সুরক্ষা কমিশনের এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার দাবি তোলা হচ্ছে কোনও কোনও মহল থেকে।

কুণাল ঘোষ সম্পর্কে শতরূপের অশালীন ও দুর্ভাগ্যজনক মন্তব্য প্রসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি লম্বা পোস্ট করে
ডাঃ সুজয় দাশগুপ্ত লিখেছেন— এখানে রাজনীতি আনবেন না, দয়া করে। শুধু কলকাতা বা ভারতে নয়, সারা পৃথিবী জুড়ে যেসব দম্পতিরা টেস্ট টিউব বেবি বা আইভিএফ করছেন বা করেছেন, এটা তাঁদের কাছে একটা ভীষনভাবে অপমানজনক মন্তব্য। মনে রাখতে হবে, আইভিএফ কিন্তু কোন হাল ফাশ্যানের জামাকাপড় নয়, পাঁচতারা হোটেলের দামী ব্রেকফাস্ট নয় বা শখ করে কেনা ২২ লক্ষ টাকার গাড়ি নয়, যে লোকে শখ করে আইভিএফ করবে। যাঁরা করছেন, তাঁরা কতটা মানসিক ও শারীরিক ভাবে বিধ্বস্ত থাকেন, সেটা তাঁরা নিজেরাই জানেন। এটা শুধু বড়লোকেরা করছে (“আমার বাবার টাকা দিয়ে আইভিএফ করছি তো কে কি বলবে”) তা নয়, আমাদের মত গরীব দেশে অনেক নিঃসন্তান দম্পতি ঘটিবাটি বিক্রি করেও আইভিএফ এর পথে এগোন, যখন সন্তানলাভের অন্য সব রাস্তা তাঁদের কাছে বন্ধ হয়ে যায়। এখনো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দম্পতিরা (সে মার্সিডিজ চড়ে যাঁরা আসেন, তাঁরাও) বলেন, “দেখুন না, যদি স্বাভাবিক ভাবে প্রেগন্যান্সি টা আসে”।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আইভিএফ এ যে বাচ্চা হয়েছে, সেটা “biologically” সেই দম্পতিরই। কারণ তাঁদের শুক্রাণু ও ডিম্বাণু নিয়েই তো আইভিএফ করা। কিন্তু যদি ডোনার শুক্রাণু বা ডিম্বাণু (যেটা দম্পতির অনুমতি নিয়ে করা হয়) ব্যবহার করা হয়, সেই ক্ষেত্রে ও তো তাঁরাই বাবা মা হলেন।যারা এই পদ্ধতিতে সন্তান পান তারা তাদের সন্তান কে ভালোবাসেন না, নাকি দামী গাড়ি কিনে দেওয়াই ভালো বাবা হওয়ার একমাত্র যোগ্যতা। এটা আমার মতামত মাত্র। খারাপ লাগল প্লীজ ক্ষমা করে দিয়ো।”

শতরূপ কে “শিক্ষিত” বলেই জানতাম, কথা বার্তা বেশ রুচিসম্মত ও যৌক্তিক মনে হতো। কে জানে “বিদ্যা দদাতি বিনয়ং বিনয়াদ্ যাতি পাত্ৰতাম্” কথাটা বোধহয় শ্লোকেই রয়ে গেছে, বাস্তবে হয়না।

আরও পড়ুন:আজ থেকে দাম বাড়লো ORS, প্যারাসিটামল সহ বহু জীবনদায়ী ওষুধের

 

 

Previous articleআজ থেকে দাম বাড়লো ORS, প্যারাসিটামল সহ বহু জীবনদায়ী ওষুধের
Next articleসোমেই জেলা সফর মুখ্যমন্ত্রীর! চলছে জোরকদমে প্রস্তুতি