শুভেন্দুর বাড়বাড়ন্তে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন সুকান্ত, ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ তৃণমূল বিধায়কের

কটাক্ষের সুরে সুকান্তর উদ্দেশ্যে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, বিজেপিতে দলবদলু শুভেন্দুর বাড়বাড়ন্তে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন সুকান্ত, পাগলের প্রলাপ বকছেন

হাওড়ায় রামনবমীর মিছিলে পিস্তল হাতে অশান্তি পাকানোর অভিযোগে বিহারের মুঙ্গের থেকে গ্রেফতার হয়েছে সুমিত সাউ নামের এক যুবক। তাকে সিআইডির হাতে তুলে দিয়েছেন হাওড়া পুলিশের গোয়েন্দারা। সুমিত স্বীকার করে নিয়েছে, সে বিজেপির সক্রিয় কর্মী। শাসক দল তৃণমূলের তরফেও সুমিতের প্রত্যক্ষ বিজেপি লিঙ্ক নিয়ে একাধিক ছবি প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। সুমিতের মা সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন, টাকার লোভেই ছেলে নাম লিখিয়েছিল বিজেপিতে। আজ তাকে আদালতে তোলা হবে। সেই পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে সুমিত সাউকে তৃণমূলের লোক বলে দাবি করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

একটি ট্যুইটে সুকান্তর দাবি, তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সুমিত সাউ। তৃণমূলের কর্মসূচিতেও দেখা গিয়েছে সুমিতকে। তাঁর আরও সংযোজন, তৃণমূলের চক্রান্ত ফাঁস হয়ে গিয়েছে। নিজের লোক ঢুকিয়ে তারপর গ্রেফতার? বিজেপি ও হিন্দুদের বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে?

সুকান্ত মজুমদারের এমন দাবির পরই তাঁর দিকে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরী। বিজেপি রাজ্য সভাপতি পাগলের প্রলাপ বকছেন বলেই খোঁচা দিয়েছেন গৌতমবাবু। কটাক্ষের সুরে সুকান্তর উদ্দেশ্যে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, বিজেপিতে দলবদলু শুভেন্দুর বাড়বাড়ন্তে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন সুকান্ত, পাগলের প্রলাপ বকছেন। অবিলম্বে তাঁকে ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দেন গৌতম চৌধুরী।

তৃণমূল বিধায়কের কথায়, “উনি (সুকান্ত মজুমদার) মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন। ওঁকে ভালো কোনও ডাক্তার না দেখালে কিছু হবে না। উত্তর হাওড়ার বুথের প্রেসিডেন্ট, ওয়ার্ড সভাপতি থেকে আজ ধাপে ধাপে আমি বিধায়ক হয়েছি। দল করছি ১৯৯৮ সাল থেকে। ২০২১ সালে বিধায়ক হয়েছি। আমার এলাকায় ২৩২ট বুথে এমন কোনও ছেলে নেই যাকে আমি চিনব না। সুকান্ত মজুমদার পুরো পাগল হয়ে গিয়েছে। উনি বড় নাকি শুভেন্দু বড়, এনিয়ে ঝগড়া করতে করতে ওর জীবনটা বেকার হয়ে গিয়েছে। সুমিতের সঙ্গে যাদের ছবি দেখছেন তারা কি তৃণমূলের নেতা? আগামী লোকসভা নির্বাচনে লড়তে হবে। তার আগে শরীরটাকে একটু ফিট করুন উনি। আগে নিজেকে সুস্থ করুন সুকান্তবাবু”!

উল্লেখ্য, রামনবমীতে প্রবল অশান্তি বাঁধে হাওড়ার কাজিপাড়ায়। ওই ঘটনার পরই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ট্যুইটে লেখেন, “বিজেপির দাঙ্গাবাজি ফর্মুলা আবার চালু হয়েছে। সম্প্রদায়কে একে অপরের বিরুদ্ধে উসকে দেওয়া হচ্ছে। হিংসা ছড়াতে অস্ত্রের জোগান দেওয়া হচ্ছে। ইচ্ছাকৃতভাবে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে। রাজনৈতিক ফায়দা আদায় করার জন্য। বিজেপি-র প্লেবুক থেকে একটি ক্লাসিক অপবিত্র ব্লুপ্রিন্ট!” সেই সঙ্গে এই যুবকের পিস্তল হাতে ছবিও পোস্ট করেন তিনি। এরপরই পিস্তল হাতে ওই যুবকের খোঁজখবর শুরু হয়ে যায়। এবং অবশেষে পুলিশ তাকে বিহারের মুঙ্গের থেকে গ্রেফতার করে।

এদিকে, সুমিত সাউয়ের গ্রেফতারির পর তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ”রামনবমীর মিছিলের নামে অশান্তি সৃষ্টির জন্য বিজেপির যে কর্মীকে হাতে বন্দুক নিয়ে দেখা গিয়েছিল যে দায় বিজেপি অস্বীকার করছিল, হঠাৎ দায় এড়াতে যাচ্ছিল সেই সুমিত সাউ ধরা পড়েছে মুঙ্গের থেকে। অভিযুক্ত স্বীকার করেছে সে মুঙ্গের থেকে এসে বন্দুক নিয়ে মিছিল করছিল। বিজেপির অভিসন্ধি সামনে এসেছে। মুখ লোকানোর জায়গা নেই আর। বাইরে থেকে লোক ঢুকিয়ে বাংলায় গন্ডগোলের চেষ্টা করছে।”

 

Previous articleকুর্মি আ*ন্দোলনের জেরে দুর্ভো*গ, ৩০ ঘণ্টা পরেও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের একাধিক ট্রেন বাতিল
Next articleহাওড়া-রিষড়ার অশান্তি নিয়ে হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিল রাজ্য সরকার