Friday, December 26, 2025

সুতপার ছন্দে প্রেমের উপাখ্যান, রূপঙ্করের গানে ‘চৈত্র অবসানে’র সাক্ষী মহানগর!

Date:

Share post:

‘যা ইচ্ছে তাই বলুক লোকে নিন্দুকেরা কত কিছুই রটায়, অনামী কোনও বাসস্টপে দেখা হবে পৌনে ছটায়’ – কবির লেখা পংক্তি যেন সত্যি হয়ে গেল চৈত্রের শেষ রোববারে। ঠিক ওইসময় থেকেই মহানগরীর অন্যতম সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের পীঠস্থানে ভিড় জমতে শুরু করেছে। রবীন্দ্রসদনের (Rabindra Sadan) বাইরে টাঙানো ফ্লেক্স বলছে হাতে সময় বাকি ঘণ্টা খানেক। কিন্তু রবিবারের সান্ধ্য লগ্নে আর যেন তর সইছে না। কারণ সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় (Sutapa Banerjee) এবং রূপঙ্কর বাগচি (Rupankar Bagchi) দুজনেই যে ‘একক’ রূপে ধরা দিতে চলেছেন। ঠিক ৭টায় রবীন্দ্রসদন মঞ্চের পর্দা সরল। নিকষ কালো ব্যাকড্রপের সামনে স্পট লাইটে সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় (Sutapa Banerjee)। তাঁর চোখ তাকিয়ে ‘চৈত্রের অবসানে’। সঙ্গী হলেন জীবনানন্দ, শুরু হল অনুষ্ঠান।

সামনের সপ্তাহে এই সময় বর্ষবরণের আনন্দে হয়তো বা ব্যস্ত থাকবে বাঙালি। কিন্তু ৯ এপ্রিলের এই সন্ধে তখন যেন ঝলমল করবে। মঞ্চে মাঙ্গলিক প্রতীক , সঙ্গে মঙ্গল ঘট, যার উপরে সাজানো কলাপাতা। ঠিক যেমনটা দেখে বাঙালি অভ্যস্ত সেই সব রসদ যত্ন করে যোগাড় করেছেন আয়োজকরা। পিকাসো এন্টারটেনমেন্টকে (Picaso Entertainment) তাই ধন্যবাদ জানিয়েছেন শিল্পীদ্বয়। দর্শককে ভালবাসা উজাড় করে দিয়ে সুতপার কবিতায় প্রশ্ন করেন, প্রেমের পূর্ণতা বিরহ নাকি মিলনে? বৈশাখী আমেজের সুবাসিত ছন্দে শ্রীজাত থেকে ভবানী প্রসাদ মজুমদার , সকলেই মিলে গেলেন এক ঘন্টায়। বাংলার সৌন্দর্যের রূপ বর্ণনা করতে করতে সুতপা শোনালেন সুভাষের কথা, ততক্ষণে বিপ্লবের আগুন যেন টগবগ করে ফুটতে শুরু করেছে। তাতে মিশে গেলেন বঙ্গবন্ধু।

এক ঘণ্টার অনুষ্ঠানের অন্তিম নিবেদনে রবি ঠাকুরকে সঙ্গী করে কালের যাত্রাপথ ধরলেন শিল্পী। এখানে চমক জাগল, কারণ মঞ্চের ফোকাস লাইট জানান দিচ্ছে দ্বিতীয়ার্ধের আকর্ষণ রূপঙ্করের (Rupankar) গিটার তখন বাজতে শুরু করেছে। সুতপার শেষ অনুষ্ঠানের রেশ ধরে শুরু করলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত গায়ক । সুরেলা মেজাজে শুরুতেই বললেন , ‘আমার তো গল্প বলা কাজ’। কথায় কথায় পরিচয় করালেন সঙ্গীতের সঙ্গীদের সঙ্গে। গুনগুন করলেন মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের গান ‘বনে নয় মনে মোর পাখি আজ গান গায়’। গায়ক থামার আগেই হাততালিতে ফেটে পড়ল প্রেক্ষাগৃহ। এবার যেন অনুরোধের আসরের পালা। ‘জাতিস্মর’ থেকে শুরু গায়কের নিজের অ্যালবামের নস্টালজিয়া সব ধরা পড়ল শেষের এক ঘণ্টায়।

রবীন্দ্রসদন প্রেক্ষাগৃহ ছেড়ে বেরিয়ে আসতে আসতে সত্যিই মনে হল, ‘চৈত্র অবসানে’ অলীক অন্তিমের আহ্বান নয়, বরং আগত বৈশাখের আনন্দ জাগ্রত দ্বারে।

 

spot_img

Related articles

রাতের অন্ধকারে সরল আসবাব! ১০ সার্কুলার রোডের বাংলো ছাড়ছে লালু-পরিবার

এবার ক্ষমতায় এসেই লালু প্রসাদ যাদবের (Lalu Prasad Yadav) পরিবারকে ১০ সার্কুলার রোডের বাংলো থেকে তোড়জোড় শুরু করেছিলেন...

ফের টরেন্টোতে খুন ভারতীয় ছাত্র! বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেই গুলি

হিমাংশি খুরানার মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই ফের টরেন্টোতে (Toronto) খুন আরেক ভারতীয় যুবক। নিহত পড়ুয়ার নাম শিবাংঙ্ক...

বৈভবের মুকুটে নতুন পালক, রাষ্ট্রপতির থেকে পেলেন সর্বোচ্চ সম্মান

তরুণ ক্রিকেটার বৈভব সূর্যবংশীর (vaibhav Suryavanshi)মুকুটে এবার জুড়ল নতুন পালক, নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু টিনএজার ক্রিকেটার...

ফের মমতার দেখানো পথে ডবল ইঞ্জিন সরকার! ‘মা ক্যান্টিনে‘র আদলে দিল্লিতে ‘অটল ক্যান্টিন’

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) একের পর এক জনমুখী প্রকল্প নকল করে প্রচারের আলোয় থাকতে চাইছে বিজেপি...