নন্দীগ্রামে  অবরোধ- বিক্ষো*ভে আদি-নব্য বিজেপির দ্ব*ন্দ্ব বেআব্রু

পুরো মন্ডল কমিটি ও তাদের সমর্থকরা এই বিক্ষোভে অংশ নেন।

নন্দীগ্রামে বিজেপিতে বিদ্রোহ অব্যাহত।  নন্দীগ্রাম ২ উত্তর মণ্ডলকে বিভাজন করার প্রতিবাদে, রবিবার ফের মন্ডল কার্যালয়ের সামনে পথ অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি করলো বিক্ষুব্ধ বিজেপি। ২৪ ঘন্টা আগে পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া মন্ডল সভাপতি চন্দ্রকান্ত মন্ডল, সহ-সভাপতি তারক প্রামাণিক সহ পুরো মন্ডল কমিটি ও তাদের সমর্থকরা এই বিক্ষোভে অংশ নেন।

অখন্ড মণ্ডল ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বিক্ষোভকারীরা বিজেপির জেলা নেতৃত্বকে এদিন ২৪ ঘন্টা সময়সীমা বেধে দিয়েছেন। তা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে রবিবারের বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে।

রাজ্যের বিরোধী দলনেতার নির্বাচনী কেন্দ্র নন্দীগ্রামে বারবার আদি বিজেপিদের এমন বিদ্রোহে রীতিমতো অস্বস্তিতে পদ্ম শিবির। শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নাতে সভা করতে গিয়ে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা নন্দীগ্রামের পদাধিকারীদের এই গণ ইস্তফাকে গুরুত্ব না দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।

এই প্রসঙ্গে বিক্ষুব্ধ বিজেপি তথা আদি নেতা চন্দ্রকান্ত মন্ডল বলেন, “ উনি গুরুত্ব দেবেন, কি দেবেন না, অথবা কাকে, কখন, গুরুত্ব দেবেন, সেটা ওনার ব্যাপার। তবে আমরা ওনার কথামতো এই আন্দোলনে নামেনি।”

এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কারণ নন্দীগ্রামে এমন ঘটনা প্রথম নয়। কয়েক মাস আগেই নন্দীগ্রামের আদি বিজেপির বেশ কয়েকজন নেতা একই ভাবে গেরুয়া শিবির ছেড়েছিলেন। এবার নন্দীগ্রাম মন্ডল ৪ এর সভাপতি তথা নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের দাপুটে বিজেপি নেতা চন্দ্রকান্ত মন্ডল,সহ সভাপতি তারক প্রামানিক এবং কমিটির সকলে বিজেপির দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। রবিবার ফের সংবাদমাধ্যমের সামনে সমর্থকদের নিয়ে নিজের ক্ষোভ উগরে দেন চন্দ্রকান্ত মন্ডল। বলেন, “বিজেপি নিজস্ব সংবিধান ও নীতিকে না মেনে, মন্ডলকে বিভাজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নিয়ম মতো জেলা পরিষদ অনুযায়ী একটা মন্ডল হয়। যেখানে জেলা পরিষদ ভাগ হলো না, সেখানে মন্ডলকে ভাগ করে দেওয়া হল। এটা কার স্বার্থে ও কিসের ভিত্তিতে করা হলো ? নন্দীগ্রামে বিজেপিকে আমরাই বিকশিত করেছিলাম। একুশের বিধানসভার আগে যারা বিজেপিতে এসেছে, তারা এখানে বিজেপির গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেনি। আগামীদিনে আমরা মানুষের পাশেই দাঁড়াবো।”

পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই ইস্তফা ও আন্দোলনের ফলে গেরুয়া শিবিরের দলীয় গোষ্ঠীকোন্দল যে প্রখর হয়ে উঠলো তা বলাই বাহুল্য। নন্দীগ্রামের বিজেপিতে আদি ও নব্যদের ঠান্ডা লড়াই একেবারে ওপেন সিক্রেট। আর বারবার সেই লড়াইতে কোনঠাসা হয়ে পড়ছে আদি বিজেপি নেতারা । আদি বিজেপি নেতারা মনের দুঃখে , অপমানে বারবার দলীয় পদ ছেড়ে দেওয়ায়, জেলা বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিধানসভা কেন্দ্রতে কেন বার বার আদি বিজেপি নেতারা বিদ্রোহ করছেন, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পদ্ম শিবিরের সাধারণ কর্মী সমর্থকরা। নন্দীগ্রামের বিজেপির এমন পরিস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল কংগ্রেস।

তৃণমূল নেতা বাপ্পাদিত্য গর্গ বলেন, “ নন্দীগ্রামের বিজেপিতে এখন মুসল পর্ব চলছে। আদি ও নব্য বিজেপির দ্বন্দ্বে পদ্ম শিবির জর্জরিত। অটল বিহারী বাজপেয়ি এবং লালকৃষ্ণ আদবাণীকে দেখে নন্দীগ্রামে যারা বিজেপি করতেন, তারা এখন নিজের দলেই কোণঠাসা। এখানে দলের মধ্যে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা স্বৈরাচারী মনোভাব চালাচ্ছে বলে, বিজেপির অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায়। নন্দীগ্রামের হরিপুরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য, বিজেপি আগাম প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে যে চমক দিতে চেয়েছিল, তার উপর বিজেপি নেতা চন্দ্রকান্ত মন্ডল জল ঢেলে দিলেন।”

 

Previous articleসুতপার ছন্দে প্রেমের উপাখ্যান, রূপঙ্করের গানে ‘চৈত্র অবসানে’র সাক্ষী মহানগর!
Next articleআইপিএল-এ প্রথম জয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদের, পাঞ্জাবকে হারাল ৮ উইকেটে