Thursday, August 21, 2025

সুতপার ছন্দে প্রেমের উপাখ্যান, রূপঙ্করের গানে ‘চৈত্র অবসানে’র সাক্ষী মহানগর!

Date:

‘যা ইচ্ছে তাই বলুক লোকে নিন্দুকেরা কত কিছুই রটায়, অনামী কোনও বাসস্টপে দেখা হবে পৌনে ছটায়’ – কবির লেখা পংক্তি যেন সত্যি হয়ে গেল চৈত্রের শেষ রোববারে। ঠিক ওইসময় থেকেই মহানগরীর অন্যতম সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের পীঠস্থানে ভিড় জমতে শুরু করেছে। রবীন্দ্রসদনের (Rabindra Sadan) বাইরে টাঙানো ফ্লেক্স বলছে হাতে সময় বাকি ঘণ্টা খানেক। কিন্তু রবিবারের সান্ধ্য লগ্নে আর যেন তর সইছে না। কারণ সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় (Sutapa Banerjee) এবং রূপঙ্কর বাগচি (Rupankar Bagchi) দুজনেই যে ‘একক’ রূপে ধরা দিতে চলেছেন। ঠিক ৭টায় রবীন্দ্রসদন মঞ্চের পর্দা সরল। নিকষ কালো ব্যাকড্রপের সামনে স্পট লাইটে সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় (Sutapa Banerjee)। তাঁর চোখ তাকিয়ে ‘চৈত্রের অবসানে’। সঙ্গী হলেন জীবনানন্দ, শুরু হল অনুষ্ঠান।

সামনের সপ্তাহে এই সময় বর্ষবরণের আনন্দে হয়তো বা ব্যস্ত থাকবে বাঙালি। কিন্তু ৯ এপ্রিলের এই সন্ধে তখন যেন ঝলমল করবে। মঞ্চে মাঙ্গলিক প্রতীক , সঙ্গে মঙ্গল ঘট, যার উপরে সাজানো কলাপাতা। ঠিক যেমনটা দেখে বাঙালি অভ্যস্ত সেই সব রসদ যত্ন করে যোগাড় করেছেন আয়োজকরা। পিকাসো এন্টারটেনমেন্টকে (Picaso Entertainment) তাই ধন্যবাদ জানিয়েছেন শিল্পীদ্বয়। দর্শককে ভালবাসা উজাড় করে দিয়ে সুতপার কবিতায় প্রশ্ন করেন, প্রেমের পূর্ণতা বিরহ নাকি মিলনে? বৈশাখী আমেজের সুবাসিত ছন্দে শ্রীজাত থেকে ভবানী প্রসাদ মজুমদার , সকলেই মিলে গেলেন এক ঘন্টায়। বাংলার সৌন্দর্যের রূপ বর্ণনা করতে করতে সুতপা শোনালেন সুভাষের কথা, ততক্ষণে বিপ্লবের আগুন যেন টগবগ করে ফুটতে শুরু করেছে। তাতে মিশে গেলেন বঙ্গবন্ধু।

এক ঘণ্টার অনুষ্ঠানের অন্তিম নিবেদনে রবি ঠাকুরকে সঙ্গী করে কালের যাত্রাপথ ধরলেন শিল্পী। এখানে চমক জাগল, কারণ মঞ্চের ফোকাস লাইট জানান দিচ্ছে দ্বিতীয়ার্ধের আকর্ষণ রূপঙ্করের (Rupankar) গিটার তখন বাজতে শুরু করেছে। সুতপার শেষ অনুষ্ঠানের রেশ ধরে শুরু করলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত গায়ক । সুরেলা মেজাজে শুরুতেই বললেন , ‘আমার তো গল্প বলা কাজ’। কথায় কথায় পরিচয় করালেন সঙ্গীতের সঙ্গীদের সঙ্গে। গুনগুন করলেন মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের গান ‘বনে নয় মনে মোর পাখি আজ গান গায়’। গায়ক থামার আগেই হাততালিতে ফেটে পড়ল প্রেক্ষাগৃহ। এবার যেন অনুরোধের আসরের পালা। ‘জাতিস্মর’ থেকে শুরু গায়কের নিজের অ্যালবামের নস্টালজিয়া সব ধরা পড়ল শেষের এক ঘণ্টায়।

রবীন্দ্রসদন প্রেক্ষাগৃহ ছেড়ে বেরিয়ে আসতে আসতে সত্যিই মনে হল, ‘চৈত্র অবসানে’ অলীক অন্তিমের আহ্বান নয়, বরং আগত বৈশাখের আনন্দ জাগ্রত দ্বারে।

 

Related articles

কালা আইন এনে দুর্নীতি দমন! বিজেপির দুই শীর্ষ মন্ত্রীর মিথ্যাচার ফাঁস তৃণমূলের

সংবিধান সংশোধন করে নরেন্দ্র মোদি দেশ থেকে দুর্নীতি তাড়াবেন। বুধবার সংসদে কালা কানুন (Black Bill) জারি করার প্রথম...

বাংলাদেশ বিরোধী কার্যকলাপ ভারতে নেই: বাংলাদেশের প্রশ্নের উত্তর ঘুরিয়ে দিল বিদেশ মন্ত্রক

ভারতেই লুকিয়ে রয়েছেন বাংলাদেশের বিতাড়িত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লিগের আরও নেতা মন্ত্রীদের লুকিয়ে থাকার সন্দেহও প্রকাশ করেছে...

যোগীরাজ্যের পাঠ্যপুস্তকে বাদ কেন রবীন্দ্রনাথকে? সাংসদ ঋতব্রতর প্রশ্নে অস্বস্তিতে কেন্দ্র

উত্তরপ্রদেশের দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কি বাদ দেওয়া হয়েছে? তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নে স্পষ্টতই...

প্রয়াত সিপিএম নেতা-প্রাক্তন মন্ত্রী দীনেশচন্দ্র ডাকুয়া

প্রয়াত সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা দীনেশচন্দ্র ডাকুয়া। বুধবার এনআরএস হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।...
Exit mobile version