এসএসসির গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি পদে শিক্ষাকর্মী এবং নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা নিয়ে আপাতত স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে বলে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালতে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু ও বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার ডিভিশন বেঞ্চে এসএসসির নিয়োগ সংক্রান্ত সবক’টি মামলার একত্রে শুনানি চলছে।
মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৬ এপ্রিল। আইনজীবীদের একাংশের ব্যাখ্যা, শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের চাকরি বাতিল এবং নতুন করে কাউন্সেলিং সংক্রান্ত যে সব নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্ট দিয়েছে, সেগুলিতেই স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে। ফলে ইডি বা সিবিআই এক্ষেত্রে যেমন তদন্ত করছে, সেই কাজ তারা চালিয়ে যাবে। তবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ফের বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে। শীর্ষ আদালতে প্ৰশ্ন তুলেছেন খোদ বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু।

এদিকে, চাকরি হারানো শিক্ষকদের পক্ষে আইনজীবী মুকুল রোহতগি এবং পি এস পাটওয়ালিয়া প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কারও বক্তব্য না শুনে তাদের চাকরি খারিজ করে দিতে পারেন? কিভাবে এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হলো তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয় সুপ্রিম কোর্টে।


শীর্ষ আদালতে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর এজলাসে দাঁড়িয়ে শুনানিতে মামলাকারীদের তরফে প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহাতগি কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন৷ তাঁর যুক্তি, “পাঁচ বছর আগে আমার মক্কেলরা পাকা চাকরি পেয়েছিল৷ হাইকোর্ট সেই চাকরি কেড়ে নিল। কিন্তু আমাদের কোনও বক্তব্য রাখতে দেওয়া হয়নি৷ এসএসসি নিয়োগ করেছে, নাইসা প্রশ্ন তৈরি করেছে, তারাই উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেছে৷ এখানে আমাদের পাকা চাকরি কীভাবে খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট?”

অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “যে বড় মাত্রার দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে সে ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট সচেতন। এই মামলা হাইকোর্টের প্রক্রিয়াগত ত্রুটি নিয়েও আমরা উদ্বিগ্ন। চাকরি খারিজ করার আগে চাকরিরতদের বক্তব্য শোনা হয়নি।”


ফলে চাকরি খারিজ নিয়ে শীর্ষ আদালতে বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়লেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যা তাঁর কাছে খুবই অস্বস্তিকর বলে মনে করছেন আইনজ্ঞদের একাংশ।
