Thursday, November 6, 2025

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ অনিয়ম,পর্ষদকে বিস্তারিত হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

Date:

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে গত জুনে ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিল হয়েছিল। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ টেট অনুত্তীর্ণ ২৭৩ জন প্রার্থীর এক নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কারণ, একটি প্রশ্নে ভুল ছিল। তার পরেই ওই ২৭৩ জনের মধ্যে থেকে ২৬৯ জনকে চাকরি দেওয়া হয়।বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু ও বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছেন, গোটা বিষয়টি জানিয়ে পর্ষদকে সোমবারের মধ্যে কোর্টে হলফনামা জমা দিতে দেবে।আগামী বুধবার এ বিষয়ে ফের শুনানি হবে।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে যোগ্যতা সত্ত্বেও চাকরি না পাওয়া প্রার্থীদের হয়ে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য প্রশ্ন তোলেন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কী ভাবে জানলো এই ২৭৩ জনই ওই ভুল প্রশ্নে ভুল উত্তর দিয়েছেন! টাকার বিনিময়ে এই সব প্রার্থীদের নম্বর বাড়ানো হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ।

তার যুক্তি, মাথা পিছু সাড়ে সাত লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছে বলে সিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে। তা জানতে পেরেই হাই কোর্ট তাঁদের চাকরি খারিজ করে দিয়েছে। কারা প্রশ্নে ভুল থাকার জন্য ভুল উত্তর দিয়েছিলেন, কারা নম্বর বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে চান, তা জানতে চেয়ে কোনও বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়নি। পুরোটাই করা হয়েছে অত্যন্ত গোপনে।

চাকরিহারাদের আইনজীবী পি এস পাটওয়ালিয়ার অভিযোগ, তাঁদের বক্তব্য না শুনেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় একতরফাভাবে চাকরি খারিজের নির্দেশ দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়ে চাকরিহারাদের বক্তব্য শোনার নির্দেশ দেয়। কিন্তু বিচারপতি শুধুমাত্র জানতে চান, প্রার্থীরা কোনও মেসেজ পেয়েছিলেন কি না, তাঁদের কাছে নথি রয়েছে কি না। এর ভিত্তিতেই চাকরি খারিজের নির্দেশ বহাল রাখেন তিনি।

পর্ষদের আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত বলেন, ২৭৩ জন প্রশিক্ষিত টেট পরীক্ষার্থী প্রথমে অকৃতকার্য হয়েছিলেন। পরে তাঁরা বাড়তি এক নম্বর পেয়ে যোগ্যতামান অর্জন করেন। তার ভিত্তিতে ২৬৯ জনকে চাকরি দেওয়া হয়। বিকাশের অভিযোগ, ২৩ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে কী ভাবে ওই ২৬৯ জনকে বাছাই করা হল, হাই কোর্টেও পর্ষদ তার উত্তর দিতে পারেনি।

প্রাথমিক ছাড়াও অন্যান্য শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীদের মধ্যে যাঁদের হাই কোর্টের রায়ে চাকরি গিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট সেই সব ক্ষেত্রে হাই কোর্টের রায়ে আপাতত স্থগিতাদেশ জারির নির্দেশ দিয়েছে। আগেই শীর্ষ আদালত অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। কিছু ক্ষেত্রে হাই কোর্টের রায় ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। হাই কোর্টের রায়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি স্কুলের ১,৯১১ জন গ্রুপ-ডি কর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছিল। তাঁরাও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। ওই মামলা আগামী সোমবার শোনা হবে।

চাকরিহারাদের আইনজীবী মুকুল রোহতগি এদিন অভিযোগ করেন, চাকরি খারিজের নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি হলেও তাঁরা চাকরিতে ফের যোগ দিতে পারছেন না। কারণ জেলা শিক্ষা পর্ষদ তার অনুমতি দিচ্ছে না। স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী কুণাল চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, কিছু আইনজীবী স্থগিতাদেশ জারি হয়নি বলে সাক্ষাৎকার দিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করেছেন। বিচারপতি ধুলিয়া বলেন, ছাত্রছাত্রীদের দিকটাও ভাবতে হবে।

 

 

Related articles

বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় আজ বিহারে ১২১ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ

আজ থেকে শুরু হল বিহার বিধানসভা নির্বাচন। বৃহস্পতিবার প্রথম দফার ভোটগ্রহণ (Bihar Election 2026 First Phase)।এই পর্বে মোট...

KIFF: সিনেপার্বণের সূচনায় আজ শহরে নক্ষত্র সমাবেশ, বিকেলে ফিল্মোৎসবের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী

রুপোলি সিনেমা শহরে দিল পা, বছর ঘুরে আবার এল কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (31st Kolkata International Film Festival...

সুপ্রিম নির্দেশে রাজ্যে ফের শুরু ১০০ দিনের কাজ, নবান্নে তৎপরতা তুঙ্গে 

প্রায় তিন বছর পর ফের রাজ্যে শুরু হতে চলেছে কেন্দ্রীয় ১০০ দিনের কাজ (এমজিএনআরইজিএ) প্রকল্প। সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা...

রাত পোহালে প্রথম দফার নির্বাচন বিহারে: হিংসা ঠেকানোই চ্যালেঞ্জ

নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে পরপর খুন। রাজনৈতিক নেতা থেকে সমর্থক। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে তাই শান্তি বজায় রাখাই চ্যালেঞ্জ...
Exit mobile version