সেট্টারের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ! নির্বাচনের আগেই ২৭ কর্মীকে বহিষ্কার বিজেপির  

নির্বাচন কমিশন কর্ণাটকের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ কুমার মীনাকে বিধানসভা নির্বাচনে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কড়া নজরদারি রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election) আগেই গেরুয়া সঙ্গ ত্যাগ করে হাত শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ সেট্টার (Jagdish Shettar)। প্রাক্তন বিজেপি নেতার অভিযোগ, শুধু যে তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়নি তাই নয়, উল্টে তাঁকে চরম অপমানও করা হয়েছে। তাই বিজেপিকে (BJP) তিনি নিজের ক্ষমতা দেখিয়ে কংগ্রেসে যোগ দেন সেট্টার। আর তারপর থেকেই কর্ণাটকে বিজেপির করুণ দশা সামনে আসে। এবার গেরুয়া শিবিরের ২৭ জন কর্মী সমর্থককে বহিষ্কার করল দল। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দলের নিয়ম না মেনেই বর্তমান কংগ্রেস নেতা তথা কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কারণেই ২৭ বিজেপি কর্মী সমর্থককে দল থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সম্প্রতি এক প্রকাশিত রিপোর্টে জানা গিয়েছে, কর্ণাটক বিজেপির প্রবীণ কর্মী সমর্থকরা জানতে পেরেছিলেন, ওই কর্মীরা দলের অন্দরে থেকেও সেট্টারের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করছেন। আর এই অভিযোগ সামনে আসতেই চটে লাল গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে ২৭ জন কর্মীদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে যাদের বিরুদ্ধে আগামী ১০ মে নির্বাচনের জন্য কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সেট্টারের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজের অভিযোগ উঠেছে।

উল্লেখ্য, কর্ণাটকের হুবলি সেন্ট্রাল (Hoobly Central) কেন্দ্র থেকে ৬ বার বিধায়ক হয়েছেন জগদীশ সেট্টার। একবার কিছুদিনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীও হন তিনি। কর্ণাটকের প্রভাবশালী লিঙ্গায়েতদের অন্যতম বড় নেতা সেট্টার। তিনি বিজেপি ছাড়ার পরই নির্বাচনের আগে বিজেপি যে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সেকথা মেনেও নিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা। এদিকে বিজেপি ইতিমধ্যে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মহেশ টেঙ্গিনাকাইকে হুবলি-ধারওয়াদ কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হিসাবে মনোনীত করেছে। যেখানে কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কর্ণাটকের প্রাক্তন বিধায়ক জগদীশ সেট্টার। আর বিজেপির টিকিট না পেয়েই রাগে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর টিকিট না পাওয়ার জন্য বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষকেই দায়ী করেছেন তিনি।

অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশন কর্ণাটকের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ কুমার মীনাকে বিধানসভা নির্বাচনে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কড়া নজরদারি রাখার নির্দেশ দিয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে জোর করে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করেন। আর সেই অভিযোগে রাজ্যের মন্ত্রী এবং বিজেপি প্রার্থী ভি সোমান্নার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। আর তারপরই নির্বাচন কমিশনের তরফে একাধিক নির্দেশ জারি করা হয়। তবে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে দেওয়া চিঠিতে কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে, এই বিষয়ে দায়ের করা এফআইআরটি ভালোভাবে খতিয়ে দেখা হবে। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরু পুলিশের কাছে রাজ্যের আবাসন মন্ত্রী সোমান্নার বিরুদ্ধে কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল অভিযোগ জমা দিয়েছে। ভাইরাল হওয়া একটি অডিও ক্লিপ হাতিয়ার করে কংগ্রেসের অভিযোগ, সোমান্না নামে যাকে বিজেপি বরুণা এবং চামরাজানগর থেকে প্রার্থী করেছে, তিনি জেডিএস নেতা তথা চামরাজানগর প্রার্থী মল্লিকার্জুন স্বামীকে ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।

একদফায় হতে চলেছে কর্ণাটকের বিধানসভা নির্বাচন। যে রাজ্যে মোট বিধানসভা আসনের সংখ্যা ২২৪। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী ১০ মে কর্ণাটকে ভোটগ্রহণ হবে। তারপর আগামী ১৩ মে ঘোষণা করা হবে ভোটের ফলাফল। সেইসঙ্গে ১০ মে কয়েকটি আসনে উপ-নির্বাচনও হবে বলে জানিয়েছে কমিশন (Election Commission of India)।

 

 

Previous articleনগদ ১৭ লক্ষ টাকা ডাকাতির অভিযোগে গ্রেফতার খোদ দুই পুলিশকর্মী
Next articleনিয়োগ দুর্নী.তি মামলায় সোমবারই প্রবীর কয়ালকে তলব CBI-এর!