Thursday, November 13, 2025

মুখ ফিরিয়েছে মানুষ, নেই কর্পোরেট চাঁদাও, কমেছে লেভি! খরচ তুলতে গাড়ি বিক্রি করছে সিপিএম

Date:

বাংলার বুকে একটানা ৩৪ বছর ক্ষমতায় ছিল সিপিএম। প্রায় সাড়ে তিনদশক ক্ষমতায় থাকার সুবাদে কয়েকশো কোটির সম্পত্তি করেছিল সিপিএম। ফুলেফেঁপে উঠেছিল আলিমুদ্দিন থেকে শুরু করে জেলায় জেলায় প্রাসাদপম অট্টালিকার মতো শীততাপ নিয়ন্ত্রিত পেল্লাই সব পার্টি অফিস। রাজ্য, জেলা থেকে জোনাল, লোকাল কমিটির নেতাদের জন্য নামিদামি চার চাকার গাড়ি। সেইসঙ্গে সর্বহারা পার্টির কোষাগারে কোটি কোটি টাকা। শুধুমাত্র একটি জেলা কমিটির যা সম্পদ ছিল, সেটা অনেক প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের মোট সম্পত্তির থেকেও কয়েকগুণ বেশি।

শাসক দল থাকাকালীন বাংলায় সিপিএমের এই বিপুল সম্পত্তির উৎস ছিল কর্পোরেট জগতের শিল্পপতিরা, মুখপাত্র ও পার্টির কর্মসূচিতে বছরের পর বছর সরকারি বিজ্ঞাপন, পার্টি সদস্যদের থেকে লেভি আদায়, সর্বোপরি রাস্তাঘাটে দাঁড়িয়ে কৌটো নাড়িয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায়। সেইসঙ্গে তোলাবাজি, হুমকি, সিন্ডিকেট তো ছিলই।

কিন্তু এখন সিপিএমের না আছে সেই রাম, না আছে অযোধ্যা। ২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে বিপুল আয়ের উৎসও ক্রমশ কমতে থাকে। নামে রেজিমেন্টেড পার্টি হলেও দলে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। কেউ দলবদলে শাসকদলে নাম লেখান, কেউ আবার সদস্যপদ নবীকরণ না করে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। ফলে ২০১১ সালের পর থেকেই ভিতরে ভিতরে সিপিএমের রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যায়।

সদস্য পদ কমায় লেভি সংগ্রহ তলানিতে ঠেকেছে সিপিএমের। মুখ ফিরিয়েছেন কর্পোরেট জগতের মানুষ থেকে শিল্পপতিরা। অন্যদিকে, মানুষের বিশ্বাস-ভরসা হারিয়ে কৌটো নেড়ে উঠছে না চাঁদাও। বন্ধ সরকারি বিজ্ঞাপন থেকে আয়ও। ক্ষমতা হারিয়ে তোলাবাজি, চোখরাঙানিও এখন বন্ধ। সিপিএমের লাগাতার রাজনৈতিক রক্তক্ষরণ অব্যাহত। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে পার্টির খরচ জোগাতে এখন বিক্রি করতে হচ্ছে পাপের টাকায় করা একের পর এক গাড়ি।

এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে গাড়ি বিক্রি করছে পূর্ব বর্ধমান জেলায় সিপিএম। পার্টির ৬টি গাড়ি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা কমিটি। একটা সময় অবিভক্ত বর্ধমান জেলার সিপিএমের লেভির সিংহভাগই আসত খনি ও শিল্পাঞ্চল থেকে। যার জোগান দিত কয়লা মাফিয়ারা। কোটি কোটি টাকা পার্টি ফান্ডে জমা দিলেই পাওয়া যেত কয়লার চোরাই কারবারের লাইসেন্স।

তবে অনেকেই মনে করছেন গাড়ি বিক্রি করে রাজনৈতিক কর্মসূচি নেওয়ায় সিপিএমের লোক দেখানো। মানুষকে নতুন করে বোকা বানানো ছাড়া আর কিছু নয়। সিপিএমের এখনও যা সম্পদ রয়েছে, তাতে কয়েক পুরুষ চলে যাবে সর্বহারা পার্টির।

Related articles

“রিচার নামে স্টেডিয়াম ইতিহাস হয়ে থাকবে”, উচ্ছ্বসিত ঝুলন

শিলিগুড়িতে রিচা ঘোষের(Richa Ghosh)  নামে স্টেডিয়াম হচ্ছে শিলিগুড়িতে। কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা করেছেন বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারের নামে...

‘হাঁটি হাঁটি পা পা’-র ট্রেলার-পোস্টার লঞ্চে ‘বাবা-মেয়ে’র রসায়নে চিরঞ্জিৎ-রুক্মিণী

অর্ণব মিদ্যার ছবি 'হাঁটি হাঁটি পা পা'-র ট্রেলার ও পোস্টার লঞ্চের জমজমাট অনুষ্ঠান হল ফ্লোটেলে। বৃদ্ধ বাবা ও...

লক্ষ্য ২০২৭! ২৫ নভেম্বর শুরু ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে। রাজ্যের সেচ ও জলপথ মন্ত্রী মানস...

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কে স্বচ্ছতা আনতে চালু অনলাইন অডিট ব্যবস্থা

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। এ বার থেকে সমস্ত সমবায় সমিতি...
Exit mobile version