“দ্য গুজরাত স্টোরি”: মোদি-শাহের রাজ্য থেকে ৫ বছরে নিখোঁজ ৪০ হাজার মহিলা!

খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দফতর ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (NCRB) সাম্প্রতিক একটি রিপোর্টে মোদি-শাহ রাজ্যের ভয়ঙ্কর এই তথ্য উঠে এসেছে। এবং তা "দ্য কেরালা স্টোরি"র মতো সেলুলয়েডের 'কাল্পনিক গল্প' নয়, একেবারে বাস্তব!

পরিচালক সুদীপ্ত সেনের “দ্য কেরালা স্টোরি” (The Kerala Story) নিয়ে যখন দেশজুড়ে তোলপাড়, ঠিক সেই আবহে উঠে এলো এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। গুজরাতে (Gujrat) বিগত পাঁচ বছরে ৪০ হাজারেরও বেশি মহিলা নিখোঁজ (Women Missing)! দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) রাজ্যের এমন ঘটনা উঠে এসেছে খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যানে! “দ্য কেরালা স্টোরি”র চলমান বিতর্কের মাঝেই নিন্দুকরা বিষয়টি “দ্য গুজরাত স্টোরি” হিসেবেই দেখতে চাইছেন!

খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দফতর ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (NCRB) সাম্প্রতিক একটি রিপোর্টে মোদি-শাহ রাজ্যের ভয়ঙ্কর এই তথ্য উঠে এসেছে। এবং তা “দ্য কেরালা স্টোরি”র মতো সেলুলয়েডের ‘কাল্পনিক গল্প’ নয়, একেবারে বাস্তব!

NCRB-এর সদ্য প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে গুজরাত থেকে ৭,১০৫ জন মহিলা নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৭ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে আরও ৭,৭১২ জন। ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে মোদি রাজ্যে মহিলাদের নিখোঁজের সংখ্যা যথাক্রমে ৯,২৪৬ এবং ৯,২৬৮ জন। ২০২০ সালে সামান্য কমে সংখ্যাটি ছিল ৮,২৯০ জন। অর্থাৎ, ২০১৬ থেকে ২০২০ এই পাঁচবছর সময়কালের মধ্যে গুজরাতে সবমিলিয়ে মহিলাদের নিখোঁজের সংখ্যা ৪১,৬২১ জন! ২০২১ সালে গুজরাত বিধানসভায় রাজ্য সরকারের দেওয়া এক বিবৃতি অনুযায়ী, কেবলমাত্র আহমেদাবাদ এবং ভাদোদরার মতো বড় শহর থেকেই মাত্র এক বছরে (২০১৯-২০) ৪,৭২২ জন মহিলা নিখোঁজ হয়েছেন। NCRB-এর এমন রিপোর্ট দেখে গোটা দেশ আঁতকে উঠছে।

বছরের পর বছর গুজরাতে ক্ষমতায় রয়েছে ডাবল ইঞ্জিন বিজেপি। দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো অতিপ্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরা এই গুজরাতের বাসিন্দা। নিজেদের রাজ্যে নিয়ে তাঁরা দেশজুড়ে বড় বড় বুলি আওরান। অথচ, তাঁদের রাজ্যেই ৪০ হাজারের বেশি মহিলা বিগত পাঁচ বছরে উধাও। এমন ঘটনায় বিজেপি শাসিত গুজরাত সরকার ও রাজ্য প্রশাসন উদাসীন বলে অভিযোগ উঠছে।

প্রাক্তন আইপিএস অফিসার এবং গুজরাত রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের সদস্য সুধীর সিনহা (Sudhir Sinha) বলছেন, “আমি দেখেছি, নিখোঁজ মহিলাদের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতো না গুজরাত পুলিশ। অথচ এই ধরণের ঘটনাকে হত্যার চেয়েও বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। কারণ, সন্তান নিখোঁজ হলে, বাবা-মা সন্তানের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করে থাকেন। তাঁরা চিন্তায় থাকেন। নিখোঁজ মামলারও হত্যা মামলার মতোই গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা উচিত।” প্রাক্তন এই পুলিশ কর্তার আরও দাবি, “বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমি দেখেছি নিখোঁজ মহিলাদের অন্যান্য রাজ্যে পতিতাবৃত্তি করতে বাধ্য করা হয়”! গুজরাত পুলিশের প্রাক্তন অতিরিক্ত ডিজি রাজন প্রিয়দর্শীরও একই দাবি করে বলেন, “আমার দেখেছি, নিখোঁজ মহিলারা বেশিরভাগই হিউম্যান ট্রাফিকিং-এর শিকার হয় এবং অন্য রাজ্যে তাঁদের বিক্রি করে দেওয়া হয়”।

গুজরাতে বিরোধী কংগ্রেস NCRB-এর রিপোর্ট নিয়ে সরব হয়েছে। বিরোধীদের কটাক্ষ, বিজেপি নেতারা কেরালায় মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। অথচ প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজের রাজ্য গুজরাতে ৪০ হাজারেরও বেশি মহিলা নিখোঁজ, যা নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেন না। শুধু গুজরাত নয়, মোদি রাজ্যের এমন তথ্য সামনে আসতেই দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

 

 

 

Previous articleচণ্ডীপুরের ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হোক সিবিআইকে!ফের হাইকোর্টে শুভেন্দু
Next articleমাঠে উল্টো প‍্যান্ট পরে ঋদ্ধি, দেখেই হাসি হার্দিকের, কেন উল্টো প‍্যান্ট? জানালেন ঋদ্ধি