Friday, July 4, 2025

এই যে লিখছি সাদা ক্যানভাসের মতো শরীরে। এতে লিখে যে অতি ক্ষুদ্রমাত্রায় খাতার অনুভব পাওয়ার চেষ্টা করছি তার কারণ কাগজ। হয়তো এমন একদিন আসবে যখন কাগজে লেখা খুব কম হয়তো হবেও না, আবার উলটো হতে পারে, হয়তো এমন যান্ত্রিক লেখা সরে গিয়ে সেই আগের মতো পাতায়, কাঠে, পুঁথিতে লিখতে হবে। এই ভাবনা নিয়েই বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির উদ্যোগ সাহিত্য উৎসব  ‘কাগজে কলমে’। আগামীতে আরো বৃহত্তর ও উন্নততর হয়ে ওঠার প্রতিশ্রুতি নিয়ে সবার প্রিয় এই উৎসব।

প্রবীণ সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বললেন, নিজের একাকীত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আমি কলম তুলে নিয়েছিলাম। অসহায়ের মতো একটি কিশোর একটা সময় মানুষের সাথে কমিউনিকেট করতে চেয়েছিল।
সাহিত্যে ভাষার গুরুত্ব নিয়ে তিনি বলেন, বাঙালি বরাবরই দ্বিভাষিক। আগেও রুজির টানে ইংরেজি শিখতে হত। কিন্তু এখন একটা ধারণা হয়েছে, ইংরেজি শিখতে গেলে বাংলা ভুলতে হবে। নানান ভাষা জানা ভাল। কারণ, বিভিন্ন ভাষায় নানা অসাধারণ সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছে। ভাষা না জানলে সেটা জানা সম্ভব হতো না। প্রবীণ সাহিত্যিকের মতে, সাহিত্য ও সিনেমা সম্পূর্ণ আলাদা মাধ্যম । কোনও সাহিত্যকেই পুরোপুরি সিনেমা করা যায় না।

কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী-সুরকার শ্রীজাতকে সহজ ভাষায় আলোচনার মধ্যে নিয়ে এলেন সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির চ্যান্সেলর সত্যম রায়চৌধুরী। অকপটে শ্রীজাত বললেন, আমি লিখতে চেয়েছিলাম আর সেটাই করছি। এটা আমার কাছে জীবনের বড় প্রাপ্তি।
প্রথম বইয়ের নাম ‘শেষ চিঠি’ কেন এই প্রশ্নের উত্তরে লেখক বলেন, কোনওদিনই বিশেষ কিছু করার ইচ্ছে ছিল না। আসলে আমি ভেবেছিলাম যে সেটাই বোধহয় আমার প্রথম এবং শেষ দেখা তাই এমন অদ্ভূত নাম দিয়েছিলাম। আলস্যকে বলতে পারেন আমি শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছি। মাত্র ২৭ বছর বয়সে ‘আনন্দ পুরস্কার’ পান শ্রীজাত। সাহিত্য সময়ের একটা আয়না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা সাহিত্যে পরিবর্তন এসেছে। শ্রীজাত তাঁর স্বরচিত কবিতা বনলতা সেন পাঠ করেন। যা শুনে মুগ্ধ শ্রোতারা। আলোচনায় উঠে আসে তাঁর ‘মানবজীবন’ ছবিতে অরিজিৎ সিং এর গান গাওয়ার প্রসঙ্গ। রামপ্রসাদী গানকে অরিজিৎ এক অনন্য উচ্চতা নিয়ে গিয়েছেন। শ্রীজাত র অকপট স্বীকারোক্তি, ‘শঙ্খ ঘোষ আমার জীবনদেবতা’। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো মানুষ আমি দেখিনি কখনো। আর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি যে সাম্যের কথা বিশ্বাস করি, দুর্বা আমার সেই সুখ দুঃখের সাথী।
প্রখ্যাত লেখক প্রচেত গুপ্ত বলেন, আমার লেখা শুরুটাই ‘না’ দিয়ে। কেন ‘না’ তারও ব্যাখ্যা করেন তিনি। এখনো এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা বই পড়েন, এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। তরুণ প্রজন্ম লিখতে এবং পড়তে যে ভালোবাসে তা তিনি নিশ্চিত। এখন অনেকটা মাধ্যম পাল্টেছে। অনেকেই ডিজিটাল মাধ্যমে লিখছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখছেন। লেখাটা কোথায় হবে সেটা কোনও বিষয় নয়। লেখাটা কোন পর্যায়ের সেটাই মূল বিষয়।
তিনি বলেন, আমার লেখার দর্শন যদি পাঠককে নাড়া দেয়, তবেই সেটা সার্থক বলে মনে হয়। তার স্পষ্ট কথা, আমরা যদি আবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে বইকে ফিরিয়ে আনতে পারি, তাহলে হয়তো এই প্রজন্মের কাছে বই পড়া আবার একটা অভ্যাসে পরিণত হবে।

 

Related articles

গিলের চওড়া ব্যাটে রানের পাহাড়ে টিম ইন্ডিয়া

শুভমন গিলের (Shubman Gill) অধিনায়কোচিতো ইনিংস। আর তাতেই রানের পাহাড়ে টিম ইন্ডিয়া। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এজবাস্টনে (Edgebaston) ইতিহাস লিখেছেন...

রেলের সিগন্যাল কেবল ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ ওড়াল ডব্লিউবিএসইডিসিএল 

রেলের সিগন্যাল কেবল ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ ওড়াল ডব্লিউবিএসইডিসিএল। সংস্থার স্পষ্ট বক্তব্য, ওভারহেড তারের বদলে আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল সিস্টেম করা...

কেন রুদ্ধদ্বার শুনানি? বিজেপির ‘ধর্ষকবন্ধু’ কার্তিক মহারাজের জবাব চাইল হাই কাের্ট 

ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশি তলবে সাড়া না দিয়ে গ্রেফতারি এড়াতে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছেন বিজেপির ‘ধর্ষকবন্ধু’ কার্তিক মহারাজ। বিচারপতি জয়...

বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের হুমকির অভিযোগ! বিজেপি নেতা কৌস্তভকে নোটিশ থানার 

ওয়্যারলেস মোড় লাগোয়া একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগীমৃত্যু ঘিরে অশান্তির আবহে বিজেপি নেতা ও আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর বিরুদ্ধে ‘হুমকি‑হেনস্তা’র...
Exit mobile version