মর্মান্তিক! অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া দিতে না পারায় ৫মাসের সন্তানের দেহ ব্যাগ ভরে বাড়ি ফিরছেন বাবা। রবিবার, এই খবরে তোলপাড় হয় গোটা রাজ্য। উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরও। এর জেরে উত্তর দিনাজপুরের CMOH-এর কাছে রিপোর্ট (Report) তলব করল স্বাস্থ্য ভবন।

মাস পাঁচেক আগে যমজ পুত্র সন্তানের জন্ম দেন কালিয়াগঞ্জের মুস্তাফানগরের বাসিন্দা অসীম দেবশর্মার (Ashim Devsharma) স্ত্রী। নবজাতকরা অসুস্থ হলে পড়ায় প্রথমে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাদের রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। বৃহস্পতিবার এক শিশু সুস্থ হয়ে গেলেও অপরজনের অবস্থার অবনতি হয়। তাকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে শনিবার রাতেই মৃত্যু হয় শিশুর। অসীমের অভিযোগ, চিকিৎসের পরামর্শে তিনি ১০২ অ্যাম্বুল্যান্স সার্ভিসে ফোন করলেও কোনও সাহায্য মেলেনি। এরপরই বাইরে অ্যাম্বুল্যান্সের সঙ্গে কথা বলেন মৃত শিশুর বাবা। তাঁর কাছে ৮ হাজার টাকা চাওয়া হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু অত টাকা দেওয়ার ক্ষমতা অসীমের ছিল না। রবিবার সকালে ১৭০ টাকা দিয়ে ব্যাগ কিনে, সেই ব্যাগে করেই মৃত সন্তানের দেহ ফিরিয়ে আনেন তিনি। অসীমের কথায়, “কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছিল।“

এই ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই, অস্বস্তিতে পড়ে স্বাস্থ্য দফতর। ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানতে চেয়ে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে উত্তর দিনাজপুরের সিএমওএইচের কাছে। কোনও গাফলতির ঘটনা ঘটলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।

অ্যাম্বুল্যান্স না পাওয়া প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, একটি শিশুর মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখের। কিন্তু এই বিষয়টা নিয়ে অকারণে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। এখানে অ্যাম্বুল্যান্সের প্রসঙ্গই ওঠে না। কারণ অ্যাম্বুল্যান্সে রোগী নিয়ে যাতায়াত করা হয়। মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য শববাহী গাড়ি রয়েছে। এক্ষেত্রে অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া যায়নি- এই বিষয়টিকে ইস্যু করার কোনও অর্থই হয় না। বিরোধীরা অকারণে মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছে।
