আগামী বছর লোকসভা ভোটের আগে একটা কর্ণাটকের ফলাফল-ই বিজেপির সব হিসেব-নিকেশ ওলট-পালট করে দিয়েছে। দেশজুড়ে বিরোধীদের নতুন করে অক্সিজেন দিয়েছে। অন্যদিকে, কংগ্রেসের কাছে এমন ফলাফল স্রেফ একটি জয় নয়, চারবছর আগে কন্নড়ভূমে “অপারেশন লোটাস”-এর বদলা হিসেবেই দেখছেন অনেকে। এবার হাইভোল্টেজ কর্ণাটক ভোটে তাই কংগ্রেসের প্রচারের অন্যতম স্লোগান ছিল “সংখ্যাগরিষ্ঠতা চাই”! সিদ্ধারামাইয়া-শিবকুমারদের প্রতি আস্থা রেখেছেন কর্ণাটকবাসী। ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন ঘোড়া কেনাবেচার কারিগরদের। উচিত জবাব পেয়েছে দলবদলু বেইমান-গদ্দাররা। ফলাফল বিশ্লেষণ করলেই অঙ্ক পরিষ্কার, লোকসভার আগে বিজেপির বিভাজনের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে মানুষ। খোদ নরেন্দ্র মোদি ডেইলি পাসেঞ্জার হয়েও গেরুয়া ম্যাজিক দেখাতে ব্যর্থ।

কর্ণাটকে মানুষ দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করেছে কংগ্রেসকে। সোনিয়া-রাহুলের দল একাই ১৩৫। ১১৩ ম্যাজিক ফিগারের থেকে অনেক আগে। জোট শরিক ‘সর্বোদয় কর্ণাটক পক্ষ’র দর্শন পুট্টানাইয়ার জয়ের পর আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩৬-এ। জয়ী দুই নির্দল প্রার্থীর মধ্যে হারাপানাহল্লি কেন্দ্রের লতা মল্লিকার্জুন রবিবারই সিদ্ধারামাইয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন। অপারেশন লোটাসের বদলা নিয়ে কন্নড়ভূমে কংগ্রেসে যেন ভরা বসন্ত! এক সুখের সংসার। যা শুধু দক্ষিণের এই রাজ্য নয়, যেখানে যেখানে বিজেপির প্রধান বিরোধী শক্তি কংগ্রেস, সেখানে সেখানে এই ফলাফল প্রভাব পড়তে বাধ্য। ফলে আসন্ন রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়েও সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীর কথামতোই কর্নাটক থেকে বিজেপির শেষের শুরু হল।
এদিকে সমস্ত অভ্যন্তরীণ বিবাদ মিটিয়ে কর্ণাটকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়েই ১৮ মে, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চলেছেন সিদ্ধারামাইয়া। এর আগে ২০১৩ থেকে পাঁচ বছর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সিদ্ধারামাইয়া। তাঁর ভাবমূর্তিও স্বচ্ছ। জনপ্রিয়। প্রশাসনিক ভাবেও অভিজ্ঞ ৭৫ বছরের সিদ্ধারামাইয়া হাইকমান্ডের প্রথম পছন্দ। উপ মুখ্যমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী হচ্ছেন ডি কে শিবকুমার। সিদ্ধারামাইয়ার এটাই শেষ নির্বাচন। তাই আগামিদিনে “কংগ্রেসম্যান” শিবকুমার-ই মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসবেন বলেই মনে করছেন ওয়াকিবলহাল মহল।

আরও পড়ুন:আগামী ২৪ মে উচ্চমাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ!

