Monday, May 19, 2025

অঙ্ক বলছে লোকসভায় ”নো ভোট টু বিজেপি” ও “একের বিরুদ্ধে এক”, এই দুই ফর্মুলাতেই চেকমেট!

Date:

Share post:

লোকসভা ভোটের ঠিক একবছর আগে দক্ষিণী রাজ্য কর্ণাটকে মোক্ষম ধাক্কা খেয়েছে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। বাংলার মতো কন্নড়ভূমে ডেইলি পাসেঞ্জার হয়েও ম্যাজিক করতে ব্যর্থ নরেন্দ্র মোদি। ঝড় তো ওঠেনি বরং গেরুয়া আরও ফিকে হয়েছে। একটি জয় দেশজুড়ে বিজেপিকে তছনছ করেছে, অন্যদিকে বিরোধীদের অক্সিজেন জুগিয়েছে।

কর্ণাটক থেকেই শুরু হোক কাউন্টডাউন, এমনটাই চেয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি দেশে বিজেপি বিরোধী মুখগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছেন। কর্ণাটক নিয়ে তুমুল আলোচনার মাঝেই একের বিরুদ্ধে এক—এই ফর্মুলাই যে মোদি-ব্রিগেডকে মসনদ থেকে হটাতে পারে, তা ফের একবার
স্মরণ করেছেন মমতা। আর এই ফর্মুলাকে কাজে লাগিয়ে
বিজেপি-বিরোধী শক্তিকে একজোট করতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

কর্ণাটকে কংগ্রেস বিজেপির ফানুস ফুটো করলেও গোটা দেশে সোনিয়া-রাহুলের দল লোকসভায় মোদি-শাহদের বেগ দেওয়ার জায়গায় নেই। তাই প্রয়োজন আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে বিজেপি বিরোধী সংঘবদ্ধ লড়াই। ফলে দিল্লির মসনদ থেকে বিজেপিকে উপড়ে ফেলার জন্য
কংগ্রেস নামটা এখানে প্রধান ফ্যাক্টর নয়। এই প্রেক্ষাপটে সর্বাত্মক বিরোধী জোটের দিশা স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বুঝিয়ে দিলেন “একের বিরুদ্ধে এক” লড়াইয়ে মডেল আজ কর্ণাটক। দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে এই সমীকরণেই সিলমোহর দিয়েছেন তিনি। এই প্রক্রিয়ায় কংগ্রেসের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত, তাও বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশজুড়ে স্লোগান হোক ”নো ভোট টু বিজেপি”!

খাতায় কলমে কংগ্রেস দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং জাতীয় দল। কিন্তু সংখ্যাতত্বে বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের ফারাক অনেকটাই। তাই মমতা বক্তব্য, “যে যেখানে শক্তিশালী, সেখানে সেই বিরোধী দলকে আসন ছেড়ে দিতে হবে কংগ্রেসকে। সবাইকে দিতে হবে সমান গুরুত্ব। কিছু পেতে হলে কিছু ত্যাগ করতে হয়।”

রাজ্যে রাজ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আঞ্চলিক দলগুলির প্রাদেশিক শক্তি কখনও অস্বীকার করতে পারবে না কংগ্রেস। মমতার ব্যাখ্যা, লোকসভার মোট ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ২০০টি আসনে কংগ্রেস শক্তিশালী। ওই সব আসনে কংগ্রেস লড়লে কোনও অসুবিধা নেই। তারা সরাসরি বিজেপি বা বিজেপি সহযোগী দলগুলির বিরুদ্ধে একের বিরুদ্ধে এক ফর্মুলায় লড়ুক। সেই সেই জায়গায় অবিজেপি দলগুলি কংগ্রেসকে পূর্ণ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিক। ঠিক একইভাবে দেশের বাকি আসনগুলিতে অন্যান্য বিরোধী দলের প্রার্থীকে একইভাবে সমর্থন করুক কংগ্রেসকে। তাহলেই মুখ থুবড়ে পড়বে বিজেপি। তাই কংগ্রেস যদি সত্যিই বিজেপিকে হটিয়ে দেশ বাঁচাতে চায়, তাহলে কিছু জায়গায় তাদেরও স্বার্থ ত্যাগ করতে হবে।

 

দেশের বেশিরভাগ রাজ্যে আঞ্চলিক অনেক দল প্রবল শক্তিশালী। তার মধ্যে যারা অবিজেপি দল এবং বিভিন্ন রাজ্যে ক্ষমতায় আছে সেখানে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি দাঁত ফোঁটাতে পারবে না। যেমন পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে “একের বিরুদ্ধে এক” লড়াই দেবে। একইভাবে দিল্লি ও পাঞ্জাবে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপ। বিহারে নীতীশ কুমার, তেজস্বী এবং কিছুটা কংগ্রেস জোট বেঁধে লড়াই করতে পারে। ঝাড়খণ্ড, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, শক্তিশালী আঞ্চলিক দলগুলিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। অন্যদিকে, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ে নিজেদের শক্তঘাঁটিতে একক ভাবে লড়াই করুক কংগ্রেস।

এই মুহূর্তে বড় রাজ্যগুলির মধ্যে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত ছাড়া কোথাও ক্ষমতায় নেই কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। ফলে ডাবল ইঞ্জিন বিকল। অন্যদিকে, অনেক বড় রাজ্যে শাসন ক্ষমতায় অবিজেপি আঞ্চলিক দল রয়েছে। তাই কংগ্রেসের উচিত দেশের স্বার্থে “একের বিরুদ্ধে এক” জোট ফর্মুলায় লোকসভা ভোটে লড়াই করা। তাহলে অঙ্ক এবং খেলা দুটোই খুব সহজ হবে।

আরও পড়ুন:ভুল তথ্য দেওয়ার জেরে ববিতার চাকরি বাতিলের নির্দেশ হাইকোর্টের

 

 

spot_img

Related articles

ভারতীয় সেনার তৎপরতা – সাহসিকতা! ভেস্তে গেল স্বর্ণমন্দিরে পাকিস্তানের হামলার চক্রান্ত

ভারতীয় সেনার তৎপরতা ও সাহসিকতায় রক্ষা পেল পবিত্র ধর্মস্থান স্বর্ণমন্দির। স্বর্ণমন্দিরকে লক্ষ্য করে পাকিস্তানের ছোড়া একের পর এক...

ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে জটিলতা! যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আপাতত স্থগিত ভর্তিপ্রক্রিয়া

ওবিসি সংরক্ষণ সংক্রান্ত মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন থাকায় চলতি শিক্ষাবর্ষে উচ্চশিক্ষায় ভর্তির ক্ষেত্রে সৃষ্টি হয়েছে নানা জটিলতা। সেই...

রানিগঞ্জ কয়লাখনি অঞ্চলে পুনর্বাসন প্রকল্পে জোরদার অগ্রগতি, ৫০% ফ্ল্যাট নির্মাণ সম্পূর্ণ

রানিগঞ্জ কয়লাখনি অঞ্চলে আগুন ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে গৃহায়ন দফতরের বিশাল আবাসন প্রকল্প জোরকদমে এগোচ্ছে। ২০২৪-২৫...

নিরাপত্তারক্ষী পুলিশের কনস্টেবলকে লক্ষ্য করে গুলি! নদিয়ায় ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ধৃত তৃণমূল নেতা

ঘুমোতে যাওয়া নিয়ে বচসা। তার জেরে নিজেরই নিরাপত্তারক্ষীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল নেতা সেজাজুল হক...