তামিলনাড়ু-কর্নাটক-মহারাষ্ট্রে স্বস্তি,’জা*ল্লিকাট্টু’ বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট

জাল্লিকাট্টু বন্ধের দাবি জানিয়ে পিপল ফর দ্য এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট (পেটা) তামিলনাড়ু সরকারের আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে পিটিশন দায়ের করেছিল আদালতে।

জাল্লিকাট্টু তামিলনাড়ুর ঐতিহ্যবাহী এক প্রথা। পোঙ্গল উৎসবের সময় তামিলনাড়ুতে জাল্লিকাট্টু অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ষাঁড়ের লড়াই সংক্রান্ত শতাব্দী প্রাচীন এই প্রথা তামিলনাড়ুর ঐতিহ্যেরও প্রতীক। কর্নাটক ও মহারাষ্ট্রতেও এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। জাল্লিকাট্টুকে-কে ঘিরে একাধিক মর্মান্তিক দুর্ঘটনার জেরে এই রেস বন্ধের দাবি উঠেছিল কোনও কোনও মহল থেকে। বন্ধের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা হয়েছিল মামলা। তবে জাল্লিকাট্টু বন্ধের দাবি জানিয়ে পিপল ফর দ্য এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট (পেটা) তামিলনাড়ু সরকারের আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে পিটিশন দায়ের করেছিল আদালতে।

দেশের শীর্ষ আদালতে এই বিষয়টি নিয়ে শুনানি চলছিল। তার পরই এই আইন নিয়ে কোনও হস্তক্ষেপ করল না দেশের শীর্ষ আদালত।তামিলনাড়ু, কর্নাটক ও মহারাষ্ট্র সরকারকে স্বস্তি দিয়ে জাল্লিকাট্টু বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। এ সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলি যে আইন চালু করেছে, তা যথেষ্ট বলে মনে করছে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ।

মনোরঞ্জনের নামে প্রাণী হিংসার অভিযোগ এনে জাল্লিকাট্টু বন্ধের দাবি করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল একটি প্রাণী অধিকার সংগঠন। এ ব্যাপারে তামিলনাড়ু, কর্নাটক এবং মহারাষ্ট্র সরকার যে আইন তৈরি করেছে, তা যথেষ্ট নয় বলে সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে ২০১৭ সালে তৈরি আইনের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে সংগঠনটি।বৃহস্পতিবার জাল্লিকাট্টু বাতিল সংক্রান্ত মামলায় পর্যবেক্ষণে বিচারপতি কে এম জোসেফ নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ বলেন, জাল্লিকাট্টুতে প্রাণীদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে আইন রয়েছে তা নিষ্ঠুরতা সাহায্য করে। সংশোধিক আইনটি পেয়েছে রাষ্ট্রপতির সম্মতিও।

বিচারপতিদের মতে, জাল্লিকাট্টু বন্ধের কোনও প্রয়োজন নেই।শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে আরও বলেছে, জাল্লিকাট্টু যে তামিলনাড়ুর সংস্কৃতির অংশ, তা রাজ্যের আইনসভা ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণার বিরুদ্ধে বিচার বিভাগ কোনও ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিতে পারে না। বিচারপতিদের মতে, জাল্লিকাট্টু নিষ্ঠুর খেলা হলেও, কেউ অস্ত্র ব্যবহার করে না। এটা রক্তের খেলা বলে যে দাবি করা হয়েছে, তাও ঠিক নয় মন্তব্য করেছেন বিচারপতিরা।

এরপর জাল্লিকাট্টু বন্ধের সমস্ত রিট পিটিশন খারিজ করে দেয় সংবিধানিক বেঞ্চ। জাল্লিকাট্টুর পাশাপাশি কাম্বালা এবং বুল-কার্ট রেসিংয়ের অনুমতি দেওয়ার আইনগুলি বহাল রাখে শীর্ষ আদালত। জাল্লিকাট্টু বন্ধের আবেদন সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিলেও, জাল্লিকাট্টু তামিলনাড়ুর সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ কিনা, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি সাংবিধানিক বেঞ্চ। এর জন্য আরও বেশি করে অধ্যয়ন, প্রতিনিধিত্ব এবং জনগণের অংশগ্রহণ প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন সাংবিধানিক বেঞ্চের বিচারপতিরা।

প্রসঙ্গত, জাল্লিকাট্টু এরুথাঝুভুথাল নামেও পরিচিত। নতুন বছরে ফসল কাটার উৎসবের অংশ হিসেবে একটি ষাঁড়-টেমিং খেলা। প্রসঙ্গত, গত বছর ডিসেম্বর মাসে জাল্লিকাট্টু অনুমতি দেওয়াকে চ্যালেঞ্জ করা একটি মামলার শুনানিতে ভিন্নমত পোষণ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এ খেলা বিপজ্জনক এবং নিষ্ঠুরতম বলে জানিয়েছিল শীর্ষ আদালত। নিষ্ঠুরতার হাত থেকে পশুদের রক্ষার জন্য যে আইন রয়েছে, জাল্লিকাট্টু সেই আইন লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছিল আদালত।

Previous articleঅ.বৈধ সম্পর্কের ভ.য়ানক পরিণতি! নারী নি.র্যাতনে ফের সংবাদ শিরোনামে মোদিরাজ্য
Next article“ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গবাসীর জন্য বিশেষ উপহার”! বাংলার দ্বিতীয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর