আমবাঙালির আম পার্বণ! কাউন্সিলর সোমা চৌধুরীর উদ্যোগে আমহার্স্ট স্ট্রিট আম উৎসব 

উদ্যোক্তা কাউন্সিলর সোমা চৌধুরী সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে এই আম উৎসবকে আরও বৃহত্তর করে তোলার স্বপ্ন দেখালেন উত্তর কলকাতার মানুষকে।

গ্রীষ্মকাল মানেই বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে সবার আগে যে ফলের নাম উচ্চারণ করা হয় সেটা হল আম (Mango)। বৈশাখ মাস পড়তে না পড়তেই বাঙালি বাজারে আম খুঁজতে থাকেন। এবার ধরুন কোথাও যদি দেখেন বিনামূল্যে আমের নানা পদ আপনার হাতের সামনে চলে আসছে, তাহলে কী করবেন? à§©à§­ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সোমা চৌধুরীর (Soma Chowdhury) উদ্যোগে আমহার্স্ট স্ট্রিট ‘আম উৎসব'(Amherst Street Aam Utsav) উত্তর কলকাতার মানুষের কাছে সেরকমই একটা সুযোগ এনে দিচ্ছে বিগত ৯ বছর ধরে। এবার তা দশ বছরে পা দিল। একটা গোটা সন্ধে আমের নানা পদ হাতে পাওয়ার অপেক্ষা। পিয়াল চৌধুরী এবং সোমা চৌধুরী (Piyal Chowdhury and Soma Chowdhury) উত্তর কলকাতার মানুষকে এক নতুন পার্বণ উপহার দিয়েছেন। দশ বছরে যা জনপ্রিয়তার নিরিখে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারে অন্য যেকোনও উৎসবকে। আম উৎসবের (Aam Utsav) ভিড় মনে করাবে দুর্গাপুজোর কথা। শুক্রবার ২৬ মে ২০২৩-এ এই বছরের আমহার্স্ট স্ট্রিট আম উৎসব (Aam Utsav) পালিত হল। একদিকে আমের রকমারি খাবার, অন্যদিকে মঞ্চ জমজমাট অতিথিদের আগমনে।

চৌধুরী দম্পতি বারো মাসে তেরো পার্বণের সঙ্গে আম পার্বণকে জুড়ে দিয়েছেন, উৎসবে উপস্থিত হয়ে এমন কথাই বললেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। পিয়াল চৌধুরী এবং সোমা চৌধুরীর অনুরোধ রেখে গানে গানে মাতালেন বর্ষণ মুখর উৎসবের সন্ধ্যা। অতিথি তালিকায় কে নেই! সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (Sudip Banerjee), কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), মন্ত্রী সুজিত বসু (Sujit Bose), সাংসদ মালা রায়, সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, ,রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, বিধায়ক দেবাশীষ কুমার, নির্মল মাঝি, তাপস রায়, বৈশ্যানর চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা। একদিকে যেমন জয়প্রকাশ মজুমদার, সায়নদেব চট্টোপাধ্যায়রা উপস্থিত তেমনই আবার ছেলে বৌমাকে নিয়ে হাজির স্মিতা বক্সী। যুবনেতা সৌম্য বক্সীকে সকলে বিয়ের অভিনন্দনও জানালেন উৎসবের মঞ্চে। উত্তর কলকাতার (North Kolkata) এই অনুষ্ঠানে সোমেন মিত্রর স্মৃতিচারণায় তাঁর স্ত্রী শিখা মিত্র।

ঘড়ির কাটায় ঠিক সন্ধ্যা সাড়ে ছটা, অনুষ্ঠান শুরু হবে বলে সঞ্চালকরা যখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখনই আকাশ কালো করে মুষলধারায় বৃষ্টি নামল, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। বৃষ্টির দাপট কমছে না দেখে অতিথিদের বসার জায়গাতেই তাঁদেরকে বরণ করে নিলেন ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সোমা চৌধুরী। সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেকের হাতে চলে এলো আম ভর্তি মাটির থালা। শুধুই কি পাকা আম, তার সঙ্গে রয়েছে আমের কুলফি, আম রসগোল্লা, আমের ফিরনি, আমপোড়া শরবত, আমের চপ, আম দই, এবং এই বছরের স্পেশাল আম মোমো। কাউন্টারে ততক্ষণে ভিড় উপচে পড়ছে। আমের ফুচকা খেতে ধাক্কাধাক্কি শুরু, বয়স সাত হোক বা সত্তর উন্মাদনা যেন কমার নয়।

অনুষ্ঠানে অতিথিরা প্রত্যেকেই তাদের বক্তব্যের মধ্যে আম উৎসবের ভাবনাকে এতটা জনপ্রিয় করে তোলার জন্য শুভেচ্ছা জানালেন পুরপ্রতিনিধি সোমা চৌধুরীকে এবং তাঁর স্বামী পিয়াল চৌধুরীকে। মঞ্চে উঠে এলো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার প্রসঙ্গ। কুণাল ঘোষ বলেন, ” আমরা তবু এখানে উৎসবের মঞ্চে আনন্দ করতে পারছি, কিন্তু অভিষেক ঘরবাড়ি প্রিয়জনদের ছেড়ে রাস্তার মধ্যে তাঁবু খাটিয়ে দিনের পর দিন কাটাচ্ছেন।” এই মঞ্চ থেকে সংসদ ভবন উদ্বোধনের প্রসঙ্গ টেনে মোদি সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন কুণাল।

বাংলাকে বঞ্চনার প্রতিবাদে কেন্দ্রের বিদেশ সফরের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার কথাও জানালেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সুস্থ-সংস্কৃতির যে নানা উৎসব প্রাণ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে তা যেন এদিনের আম আলোচনায় বারবার উঠে এলো। ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় (Ananya Banerjee) বললেন, আম আজ শুধু বাংলার নয় বিশ্ব বাংলার। উদ্যোক্তা কাউন্সিলর সোমা চৌধুরী সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে এই আম উৎসবকে আরও বৃহত্তর করে তোলার স্বপ্ন দেখালেন উত্তর কলকাতার মানুষকে।