যু.দ্ধ বিধস্ত ইউক্রেনে বাঁধ বি.পর্যয়ে আরও আ.তঙ্কে স্থানীয়রা!

নিপ্রো নদীর পশ্চিম পাড় ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে নদীর উপর জলাধার সহ পূর্ব দিকটি রাশিয়ার অধীনে। বুধবার সকালে একটি ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে।

তবে কী এবার বন্যায় (Flood) ভাসতে চলেছে ইউক্রেন (Ukraine)? নোভা কাকোভকা জলাধারের (Dam) ভাঙনে কার্যত কপালে চিন্তার হাত ইউক্রেনবাসীর। আর জলাধার ভেঙে পড়ার কারণে আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে খবর। গ্রামের পর গ্রাম জলে তলিয়ে যাচ্ছে। বাঁধ ভাঙা নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে তোলপাড়। আর এমন আবহে ফের সম্মুখসমরে নেমে পড়েছে রাশিয়া (Russia) ও ইউক্রেন। এমন আচমকা দুর্ঘটনার জেরে দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপের খেলায় মেতে উঠেছে। তবে দিনকয়েকের মধ্যে প্রবল জলোচ্ছাসের কারণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে চরম সমস্যায় পড়বেন সাধারণ মানুষজন। আর তার জেরেই বাড়ছে উদ্বেগ। তবে বন্যা সর্বনাশা রূপ নিলে কি হবে? আর এই বাঁধ ভাঙার ফলে কারাই বা লাভবান হচ্ছেন? সেই সব প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝে এ যেন অনেকটা গোদের উপর বিষফোঁড়া বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

জানা গিয়েছে, নিপ্রো নদীর পশ্চিম পাড় ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে নদীর উপর জলাধার সহ পূর্ব দিকটি রাশিয়ার অধীনে। বুধবার সকালে একটি ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। তার পরেই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রাচীরে ফাটল ধরে বলে সন্দেহ। এরপরই হুড়মুড় করে জল বেরোতে শুরু করে ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার থেকে। বাঁধের জলে ভেসে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। আর সেকারণেই জলাধারের আশপাশের এলাকার মানুষজনকে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হচ্ছে। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, পরিস্থিতি যত সামনে এগোবে ততই এই বন্যা সর্বনাশা রূপ নিতে পারে। আর এমন পরিস্থিতির কারণে ১৬ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। এদিকে বন্যার জল থইথই করছে এলাকায়। স্থানীয় সরকারি দফতরের চারপাশে রাজহাঁস ভেসে বেড়াচ্ছে। জলাধারের কাছে খেরসন শহরের নিচু এলাকার বাসিন্দাদের যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৮টি গ্রাম বন্যার জলে তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি আরও এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে কিভ প্রশাসনের আশঙ্কা, জল সরলে তখন বোঝা যাবে ঠিক কত ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু তার আগে সরকার নিশ্চিত হতে চাইছে, এটা কী কোনও অঘটন নাকি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র! তবে ইউক্রেনীয় নেতাদের একাংশের দাবি, এবার জলকে হাতিয়ার করেছে রাশিয়া।

যদিও এমন পরিস্থিতির জন্য পাল্টা ইউক্রেনকেই দায়ী করছে রাশিয়া। তাদের অভিযোগ, ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে জল থেকে বঞ্চিত করতেই এই ‘নাশকতা’ চালিয়েছে ইউক্রেন। এদিকে জলাধারে এমন বিপর্যয়ের পরই তড়িঘড়ি বৈঠকে বসেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জ়েলেনস্কি। সরকারের পক্ষ থেকে সাফ জানানো হয়েছে, ঘটনাটি ‘ইকোসাইড’ বা ইচ্ছাকৃত ভাবে পরিবেশের ক্ষতি করা নাকি, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঠিক কেন ও কী ভাবে বাঁধ ভেঙেছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। ইউক্রেন ও রাশিয়া একে অপরকে দুষে চলেছে। দু’পক্ষেরই দাবি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে নিপ্রো নদীর জলাধারটির কংক্রিটের প্রাচীরে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফাটল ধরানো হয়েছে।