বৃষ্টি আনবে ‘বিপ*র্যয়’, আশায় বাঁচে বাংলা!

যে ঝড় আরবসাগরে থাকার জন্য মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করতে পারছে না বাংলায়, সেই বিপ*র্যয়ের অবশিষ্টাংশের হাত ধরেই হাওয়া বদল হতে পারে দক্ষিণবঙ্গে (South Bengal)।

যে বিপর্যয়ের (Biparjoy) জেরে গরমে বিধ্বস্ত বাংলা, সেই ঝড় বাংলার জন্য সুখবর উড়িয়ে নিয়ে আসতে পারে সুদূর পশ্চিম ভারত (West India)থেকে। পুড়ছে বাংলা, আর ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে বারবার ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’কে দুষছে বঙ্গবাসী। অথচ হাওয়া অফিস (Weather Department) বলছে বাংলার আকাশে মেঘের আগমনী সুর সৃষ্টি করতে এই বিপর্যয়ের উপরই ভরসা করা ছাড়া আর কোনও পথ খোলা নেই। গতকাল ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হওয়ার পর থেকেই শক্তি হারাতে শুরু করেছে বিপর্যয়। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের (Alipore Weather Department) প্রাথমিক ইঙ্গিত মিলে গেলে, এই ঘূর্ণিঝড় শক্তি হারাতে হারাতে, গুজরাত-রাজস্থান, মধ্য ভারত পেরিয়ে সোজা চলে আসতে পারে পূর্ব ভারতে। যে ঝড় আরবসাগরে থাকার জন্য মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করতে পারছে না বাংলায়, সেই বিপর্যয়ের অবশিষ্টাংশের হাত ধরেই হাওয়া বদল হতে পারে দক্ষিণবঙ্গে (South Bengal)।

তাপমাত্রার পারদ ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী। নেপথ্যে ‘বিপর্যয়’। দক্ষিণবঙ্গে সাধারণত বর্ষা (Monsoon) ১০ জুন নাগাদ প্রবেশ করে। আরও ৪৮ ঘণ্টা পর কলকাতায় ১২ জুন বর্ষার আগমন হয়। কিন্তু এই বছর গোড়া থেকেই বর্ষা লেট লতিফ, কেরালায় প্রবেশ করেছে নির্ধারিত সময়ের এক সপ্তাহ পরে। এক কথায় যত দিন বিপর্যয়ের স্থায়িত্ব, ততদিন বর্ষায় ‘বিপর্যয়’ (Biparjoy)। এই প্রসঙ্গে মৌসম ভবনের (IMD) পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Sanjib Banerjee)বলছেন, শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় থাকায় আরব সাগর অতিসক্রিয়। সব জলীয় বাষ্প ওদিকে চলে যাওয়ায় বঙ্গোপসাগরের মৌসুমি বায়ুর প্রবাহ খুব একটা সবল নয়। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ হোক বা ওড়িশা, বিহার বা ঝাড়খণ্ড, সব জায়গায় হয় তাপপ্রবাহ নয়তো ভ্যাপসা গরম। অবস্থার পরিবর্তন নির্ভর করছে বিপর্যয়ের আয়ুর উপর। হাওয়া অফিস বলছে বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলা বা ওড়িশা হয়ে নিম্নচাপ প্রবেশ করে অনেক সময়ই রাজস্থানকে ভাসিয়ে দেয়। আসলে মধ্য ভারত পেরোনোর পরই নিম্নচাপগুলি আরব সাগর থেকে জলীয় বাষ্পের জোগান পেতে শুরু করে। কিন্তু ‘বিপর্যয়’ ঠিক উল্টো রুট ফলো করছে। সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, গুজরাট হয়ে ঘূর্ণিঝড় রাজস্থানে প্রবেশ করলে শুকনো অঞ্চলে বিপর্যয় শক্তি হারাবে। মধ্য ভারত পেরোনোর পর যদি বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পের জোগান পায়, তবেই বিপর্যয়ের অবশিষ্টাংশ বেঁচে থাকবে পারবে। আর সেক্ষেত্রে বর্ষার মুখ দেখবে বাংলা।

অন্যদিকে বিপর্যয়ের কারণে যেসব এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব এলাকার মধ্য দিয়ে চলা ৯৯টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। আরও ২৩টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে, ৩টি ট্রেন শর্ট টার্মিনেট করা হয়েছে এবং ৭টি ট্রেন শর্ট-অরিজিনেট করা হয়েছে। ঝড়ের কারণে ৫২৪টি গাছ পড়ে গেছে। কোথাও কোথাও বিদ্যুতের খুঁটিও পড়ে গেছে, ৯৪০টি গ্রামে বিদ্যুৎ নেই। ঘূর্ণিঝড়ে সমুদ্র সৈকত থেকে ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কচ্ছের প্রায় ৫২ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ।

 

Previous articleগরমে গলাবন্ধ কোট পরে বিরোধীদের মদত! রাজ্যপালকে তীব্র ক.টাক্ষ কুণালের, নি.শানায় রামধনু জোটও
Next articleঅন্তঃস.ত্ত্বা ধর্ষি.তাকে সমঝোতার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ গুজরাট হাইকোর্টের