আর নয় ডলার, সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন হবে টাকাতেই

খায়রুল আলম, ঢাকা: ডলার নির্ভর অর্থনীতিকে দূরে সরিয়ে ভারতীয় টাকার দর বাড়াতে আন্তরাষ্ট্রীয় বাণিজ্যে ভারতীয় টাকা(Indian rupees) ব্যবহারের ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। ভারতের সেই প্রস্তাব সাদরে গ্রহণ করেছিল বাংলাদেশ। জানা গেল, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকেই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ (Bangladesh) বাণিজ্য করতে চলেছে ভারতীয় টাকাতেই। প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এই পদক্ষেপে ডলার থেকে রুপিতে রূপান্তর বাবদ বাড়তি খরচ গুনতে হবে না। এতে টাকা সাশ্রয় হবে। চাহিদা থাকলে চিনের(China) মুদ্রা ইয়ানেও এলসি (ঋণপত্র) খোলা যাবে।

বাংলাদেশ সরকারের তরফে জানা গেছে, দিল্লি খেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পর চলতি বছরের শুরুতে এ বিষয়ে কারিগরি কাজ শুরু হয়েছিল। সেপ্টেম্বর মাসে রুপিতে বাণিজ্য শুরু হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত তাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য লেনদেনের একটি অংশ নিজ নিজ মুদ্রায় নিষ্পত্তি করতে ঐক্যমতে পৌঁছানো গেছে। তিনি বলেন, এখানে আমরা দুটি কাজ কাজ করছি। প্রথমত, ভারতের সাথে আমাদের রফতানির চেয়ে আমদানি অনেক বেশি। এ কারণে আমাদের রুপির আধিক্য কম। তাই আমরা ভারতীয় মুদ্রাতে বাণিজ্য করার চেষ্টা করছি। যেমন, আমরা দুই বিলিয়ন ডলার রফতানি করছি। এই দুই বিলিয়ন ডলার থেকে রুপিতে কনভার্ট করতে যে খরচ আছে, সেটা আমরা সাশ্রয় করতে পারি। তিনি আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য অনেক বড়। আনুষ্ঠানিক যদি ১৮ বিলিয়ন ডলার হয়। অনানুষ্ঠানিক আরও ৫০ শতাংশ। তার মানে হলো ভারতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ২৭ বিলিয়ন ডলারের। রুপিতে বাণিজ্য শুরু করলে এটা সম্প্রসারিত হবে।

দ্বিতীয়টি হলো ডেবিট কার্ড। বাংলাদেশের অনেক মানুষ ভারতে যাচ্ছে। তারা ডলার কিনছে। ভারতে গিয়ে আবার ডলার কনভার্ট করে রুপি কিনছে। তারা ঘুরতে যাচ্ছে, চিকিৎসার কাজে যাচ্ছে, ধর্মীয় কাজে যাচ্ছে। আমি আগেও বলেছি জুলাই-আগস্ট থেকে আমরা ডেবিট কার্ড চালু করতে যাচ্ছি। এর নাম দিয়েছি ‘টাকা পে কার্ড’। এই ডেবিট কার্ড দেশের যেকোনো ব্যাংকে টাকাতে ইস্যু করা ম্যান্ডেটরি করছি। এটা রুপির সাথে ট্যাগ করে দিচ্ছি; যোগ করেন গর্ভনর।

তিনি বলেন, এই কার্ড যেকোনো ব্যাংক ডেবিট কার্ড হিসেবে ইস্যু করতে পারবে। বিল পেমেন্ট করা যাবে। এমনকি ভারতে গেলে ট্রাভেল কোটার ১২ হাজার ডলারও, এই কার্ড দিয়ে সরাসরি ব্যবহার করা যাবে। এর ফলে ভারতে যেতে একবার টাকা থেকে ডলার, আরেকবার ডলার থেকে রুপিতে রূপান্তরের জন্য যে বাড়তি খরচ লাগে সেটা করতে হচ্ছে না। প্রায় ৬ শতাংশ খরচ সাশ্রয় করা যাবে। ভারতে বাংলাদেশের ভ্রমণকারী সর্বোচ্চ। ডেবিট কার্ড চালু হওয়ার পর এই বিপুল সংখ্যক মানুষের বড় অংকের টাকা খরচ বাঁচবে।