Thursday, December 18, 2025

রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থে রাজভবনে পশ্চিমবঙ্গ দিবস রাজ্যপালের: তোপ তৃণমূলের

Date:

Share post:

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোনে আশ্বাস দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করবেন না রাজ্যপাল। তবে গেরুয়া শিবিরের রাজনৈতিক স্বার্থে ফুঁ দিয়ে মঙ্গলবার রাজভবনে পালিত হল পশ্চিমবঙ্গ দিবস। এই ঘটনায় রাজ্যের রাজ্যপালকে তীব্র আক্রমণ শানালো তৃণমূল। রাজ্যে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পাশাপাশি রাজ্যপালের ভূমিকার সমালোচনায় সরব হলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।

রাজভবনে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের পর টুইটারে সরব হয়ে শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু লিখলেন, “ক্ষুদ্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই ধরনের কর্মকাণ্ড একেবারেই অসমীচীন।” একই সঙ্গে তৎকালীন ইতিহাস তুলে ধরে সরব হলেন তিনি। সেই সময়ের ইতিহাস বিস্তারিত তুলে ধরে এদিন টুইটারে ব্রাত্য বসু লেখেন, “প্রসঙ্গ পশ্চিমবঙ্গ দিবস।

১. ১৯৪৭ সালের ২২শে মার্চ অবিভক্ত ভারতের বড়োলাটের (ভাইসরয়) দায়িত্ব নিয়ে লর্ড মাউন্টব্যাটেন সপরিবারে এদেশের মাটিতে পা রাখেন।

২. পরদিন ২৩শে মার্চ দিল্লিতে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে তিনি বড়োলাট হিশেবে শপথগ্রহণ করেন। ৩. সেদিনই তিনি ঘোষণা করেন ৪৭ সালের জুন মাসের মধ্যে তিনি ভারতের স্বাধীনতা দেবেন।

৪. ভারত ভাগের পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষিত হয় জুন মাসের ৩ তারিখে ১৯৪৭। এটি ইতিহাসে ‘June 3rd Plan’ এবং Mountbatten Plan name পরিচিত। এই ঘোষণাতেই বাংলা এবং পাঞ্জাব ভাগের কথা নির্দিষ্টভাবে ঘোষিত হয়েছিল।

৫. ওই ৩ জুন তারিখেই পাঞ্জাব আইনসভা একটি আনুষ্ঠানিক ভোটাভুটি করে পাঞ্জাবের বিভাজনে সিলমোহর দেয়া । ৬. ওই জুন মাসের ২০ তারিখ (1947) অখণ্ড বাংলারও প্রাদেশিক আইন সভায় বাংলা ভাগের ব্যাপারটা ভোটাভুটি করে পাশ হয়।

৭. ২০শে জুনের এর আইনসভার এই বৈঠক এর কোনো ঐতিহাসিক তাৎপর্য নেই, কারণ এর ১৭দিন আগেই ‘June 3rd Plan’ ঘোষিত হয়ে গিয়েছে। পাঞ্জাব ভাগের সিদ্ধান্তেও সিলমোহর পড়ে গেছে। Legislative Assembly র এই নাম কা ওয়াস্তে বৈঠক কে গুরুত্ব দেয়ার অর্থ ইতিহাস কে বিকৃত করা।

৭. তাছাড়া গত ৩রা জুন, ২০২৩ আপ সরকারের পাঞ্জাব রাজ্যে, পাঞ্জাবের বিজেপি শাখা বা পাঞ্জাবের রাজ্যপাল রাজভবনে কোনো “পাঞ্জাব দিবস” পালন করেন নি। অথচ পাঞ্জাবে বিজেপি অন্যতম প্রধান বিরোধী দল। তাহলে বাংলায় হঠাৎ এই দ্বিচারিতার মানে কি?

৮. যেকোনো তিক্ত অভিজ্ঞতাকে এবং রক্তস্নাত অধ্যায়কে অতিরঞ্জিত করা ইতিহাসের দৃষ্টিকোণ থেকে বাঞ্ছনীয় নয় ।ক্ষুদ্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করাও অসমীচীন।”

পাশাপাশি রাজ্যপালের পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের ঘটনায় টুইটারে রাজ্যপালকে সরাসরি আক্রমণ শানিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ লেখেন, “রাজ্যপাল যেভাবে বাংলার ঐতিহ্য ধ্বংস করে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ করছেন, তা মানি না। বিরোধিতা করছি। বাংলার ইতিহাস ও মানুষকে অপমান করার পর এখানে রাজ্যপাল হিসেবে থাকার কোনো নৈতিক অধিকার আনন্দ বোসের নেই।”

spot_img

Related articles

মানহানির অভিযোগে প্রাক্তন স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ কুমার শানু

সংগীতজগতে দীর্ঘ চার দশকের সাফল্যের কাহিনি থাকলেও ব্যক্তিগত জীবনের বিতর্কে ফের শিরোনামে কিংবদন্তি গায়ক কুমার শানু। প্রাক্তন স্ত্রী...

বড়দিন ও বর্ষবরণে আইনশৃঙ্খলা আঁটসাঁট, পুলিশের ছুটিতে নিষেধাজ্ঞা রাজ্য জুড়ে 

বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়ে গেল বড়দিনের উৎসব। কলকাতার অ্যালেন পার্ক থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসবের...

বাজেয়াপ্ত যুবভারতীর সিসিটিভি ফুটেজ, নজরে শতদ্রু ঘনিষ্ঠরা

যুবভারতীতে মেসি(Messi) ইভেন্ট চরম বিশৃঙ্খলায় তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য সরকার গঠিত সিট(SIT)। যুবভারতীর (Yubha bharati) যাবতীয় সিসিটিভি ফুটেজ...

সিইও দফতরের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী, শুক্রবার থেকেই মোতায়েন

রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর নিরাপত্তায় এবার কেন্দ্রীয় বাহিনী (central security force) মোতায়েন করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের তরফে...