বাঁচার আশা প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। বিকল হয়ে যায় শরীরের একাধিক অঙ্গ (Multi Organ Failure)। পাশাপাশি পেটে অগ্ন্যাশয়ে পচন থেকে লাগাতার পুঁজ রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। পরিবারের সবাই যখন একবারে আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন, সেই রোগীকেই (Patient) সুস্থ করে নবজন্ম দিলেন শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, হাওড়ার (Howrah) আন্দুলের বাসিন্দা রাতুল সোম, বয়স মাত্র ৩০ বছর। সোম। এক অভিজাত রিয়েল এটেস্ট কোম্পানির (Real Estate Company) উচ্চপদে কর্মরত তিনি। তবে পরিবার সূত্রে খবর, গত ২৫ এপ্রিল আচমকাই পেটে যন্ত্রণা শুরু হয় রাতুলের। অসহ্য যন্ত্রনায় কাতরাতে থাকেন রাতুল। এরপরই পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে হাওড়ারই এক চিকিৎসকের কাছে রাতুলকে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক পরিবারকে সাফ জানান, প্যানক্রিয়াটাইটিসে আক্রান্ত হয়েছেন রাতুল। এরপর দ্রুত ওই যুবককে ভর্তি করা হয় হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে (Private Hospital)। কিন্তু হাসপাতালে রাতুলের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, রাতুলকে বাঁচিয়ে রাখা যে একপ্রকার অসম্ভব তা পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। তবে এমন কথা শুনেও এতটুকু বিচলিত হননি রাতুলের পরিবারের লোকজন।

এরপরই ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় রাতুলকে। সেখানে টানা ১৫ দিন ভেন্টিলেশনে থাকলেও রাতুলের শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে শুরু করে। এরপর আর কোনও উপায়ান্তর না দেখে শেষমেশ পেটে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। পরে চিকিৎসক শুদ্ধসত্ত সেন ও তাঁর টিমের সদস্যরা পচন ধরা টিস্যু ও পুঁজ রক্ত বের করার সিদ্ধান্ত নেন। আর যেমন ভাবা, তেমনই কাজ। তবে পেটের ভিতরে বিভিন্ন অঙ্গ জড়িয়ে যায়! ফলে ছুরি-কাঁচি চালা তো দূর, আঙুল গলানোর মতোও জায়গা ছিল না রাতুলের শরীরে।

শেষপর্যন্ত পিঠের দিক থেকে অস্ত্রোপচার (Operation) করে পেটের সমস্ত পচন ধরা টিস্যু ও পুঁজ রক্ত বের করেন চিকিৎসকরা। তারপরেও দীর্ঘদিন হাসপাতালে লড়াই করতে হয়েছে রাতুলকে। অবশেষে দীর্ঘ রোগভোগের পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন বছর তিরিশের ওই যুবক। নবজন্ম পেয়ে সমস্ত চিকিৎসকদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রাতুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
